হুরিয়াত নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোয় পাকিস্তানের অনুষ্ঠান বর্জন করল ভারত

জম্মু-কাশ্মীরের হুরিয়াত নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদে শুক্রবার পাকিস্তান জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন করল ভারত। আজ সন্ধ্যায় দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে দিনটি উদযাপিত হয়। সেখানে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। ১৯৪০ সালে লাহোর ঘোষণায় মুসলিম লীগ ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তান গঠনের প্রস্তাব রাখে। দেশভাগের পর থেকে পাকিস্তান ২৩ মার্চ জাতীয় দিবস পালন করে আসছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে প্রতিনিধি না পাঠানোর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, হুরিয়াত নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদেই ভারত সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনেরও কেউ ওই দেশে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন না। মুখপাত্র বলেন, গত মাসেই ভারত জানিয়ে দিয়েছিল, দ্বিপক্ষীয় কোনো বিষয়ে কাশ্মীরের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতাদের উপস্থিতি ভারত মেনে নেবে না।

পাকিস্তানের জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে কাশ্মীরের হুরিয়াত নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও কোনো নেতাই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকার হুরিয়াতের পাঁচ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোনো কোনো নেতাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। তাঁদের সরকারি গাড়ি ও নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। 

অতীতে হুরিয়াত নেতাদের বহু সময়ে পাকিস্তান হাইকমিশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই ধরনের বহু অনুষ্ঠানে ভারত সরকারের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। গত বছরও এই দিনের অনুষ্ঠানে হুরিয়ত নেতাদের পাশে ভারতীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, গত মাসেও পাকিস্তানকে ভারত স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিল, হুরিয়াত নেতাদের সঙ্গে কোনো রকম সংস্রব রাখা বা যোগাযোগ করা ভারত বরদাশত করবে না। এবার যখন জানা যায়, আপত্তি সত্ত্বেও হুরিয়াত নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তখন প্রতিনিধি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হুরিয়ত প্রশ্নে ভারতীয় মনোভাবে ধারাবাহিকতার অভাব অবশ্য স্পষ্ট। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে হুরিয়াত নেতাদের পাকিস্তান হাইকমিশনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তৎকালীন হাইকমিশনার আবদুল বসিত। ক্ষুব্ধ ভারত এর প্রতিবাদে দ্বিপক্ষীয় সংলাপ বন্ধ করে দেয়। তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংয়ের ইসলামাবাদ সফর বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবারও সেই হুরিয়ত প্রশ্নকেই ভারত বড় করে তুলে ধরল।