থাইল্যান্ডে অভ্যুত্থানের পর প্রথম নির্বাচন

নির্বাচনে প্রায় ৫ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। ছবি: রয়টার্স
নির্বাচনে প্রায় ৫ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। ছবি: রয়টার্স

২০১৪ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচনে দেশটির প্রায় পাঁচ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

থাইল্যান্ডে কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। বিশেষ করে দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষের সমর্থকদের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সমর্থকদের সংঘাতের ঘটনা ঘটে আসছে।

ক্ষমতা দখলের পর দেশটির সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছিল। এই প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সামরিক কর্তৃপক্ষ বারবার ভোট স্থগিত করে।

সমালোচকেরা বলছেন, ভোটের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, সেনাবাহিনী প্রণীত নতুন সংবিধানের কারণে দেশটির শাসনক্ষমতায় তাদের প্রভাব বহাল থাকবে।

আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ২০১১ সালের পর এই নির্বাচনে ভোটের হার বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নির্বাচনে ১৬ থেকে ২৬ বছর বয়সী ৭০ লাখের বেশি তরুণ প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। এই ভোটাররা জয়-পরাজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তাই সব দলই তাদের ভোট পেতে উদ্‌গ্রীব।

নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশটির রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন একটি বিবৃতিতে দিয়েছেন। ভোটে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

থাই রাজার বিবৃতিটি গতকাল শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এতে দেশটির ভোটারদের ভালো লোককে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

নির্বাচনে মূলত সেনাসমর্থিত দল ও থাকসিন সিনাওয়াত্রার মিত্রদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

২০০৬ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে থাকসিন সিনাওয়াত্রা ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শাস্তি এড়াতে স্বেচ্ছানির্বাসনে আছে তিনি। দেশে না থাকলেও থাইল্যান্ডে থাকসিন সিনাওয়াত্রার একটা বড় জনসমর্থন রয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ ও কম বিত্তশালী ভোটারদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা বেশি।

২০০১ সাল থেকে দেশটিতে যত নির্বাচন হয়েছে, তার সব কটিতেই থাকসিন সিনাওয়াত্রার অনুগত রাজনৈতিক দলগুলো জয় পেয়েছে।

থাকসিন সিনাওয়াত্রা-সমর্থিত দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুয়ে থাই পার্টি এবারের নির্বাচনে প্রচার চালিয়েছে।

দেশটির সেনাসমর্থিত নতুন দল পালাং প্রাচা রাথ পার্টির (পিপিআরপি) হয়ে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল প্রায়ুথ চান-ওচা একমাত্র প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পদে লড়ছেন।

২০১৪ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সরকার উৎখাত করে সামরিক শাসন জারি করেন প্রায়ুথ। থাকসিন সিনাওয়াত্রার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা।

এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের হয়ে অংশ নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিসিত ভেজাজিভ। নতুন দল ফিউচার ফরওয়ার্ড পার্টির হয়ে নির্বাচন করছেন তরুণ টেলিকম ধনকুবের থানাতর্ন জুয়ানগ্রুংরুয়াংকিত।

ভোটারা ভোট দিয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৫০০ সদস্য নির্বাচিত করবেন। আর দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, উচ্চকক্ষ সিনেটের ২৫০ সদস্য সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে আছেন। দুই কক্ষ একত্রে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে।