পঞ্চম পর্বে জয় পেয়েও ফিরে গেল বাংলাদেশ

জাতীয় পতাকা হাতে পঞ্চম আন্তর্জাতিক আরবি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিরা
জাতীয় পতাকা হাতে পঞ্চম আন্তর্জাতিক আরবি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিরা

কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক পঞ্চম আন্তর্জাতিক আরবি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় এ বছর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায় অবস্থিত ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী।
এ বছরের প্রতিযোগিতায় প্রথম চার পর্বে হেরে যাওয়ার পর পঞ্চম পর্বে জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশের বিতার্কিকেরা। এক সপ্তাহ দোহায় অবস্থান করে ২১ মার্চ সকালে ঢাকায় ফিরে যায় বাংলাদেশ দল। কাতার ফাউন্ডেশনের অন্তর্ভুক্ত সংস্থা কাতার ডিবেট প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। আয়োজকদের দাবি, এটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
প্রথম চার পর্বে বাংলাদেশ দলের হেরে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে দলের নেতৃত্বে থাকা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শামসুল হক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, কাতারে আসার পর বাংলাদেশ দলের সদস্যদের যোগ্যতা বিবেচনা করে তাঁদের প্রথম গ্রুপে রাখা হয়। এই গ্রুপে আরব দেশগুলো রয়েছে। ফলে অনারব দেশ হিসেবে আরব দেশীয় বিতার্কিকদের হারানো বেশ কঠিন।
পঞ্চম পর্বে বাংলাদেশের বিতার্কিক দল মুখোমুখি হয় পাকিস্তানের। এদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ী হয় বাংলাদেশ। সমসাময়িক বিশ্বের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে এসব বিতর্কের মূল বিষয় নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
বিতর্ক আয়োজনে অংশ নিতে এসে বেশ কিছু পর্বে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর সিদ্দিকী। তবে শিক্ষার্থী বিতার্কিকদের ব্যাপারে তিনি বলেন, আগামী বছরগুলোতে আরও ভালো ফলাফল করতে হলে কমপক্ষে তিন মাস আগে থেকে বেশি বেশি অনুশীলন করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়ালে এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।
এ বছর অংশ নেওয়া বাংলাদেশি চার বিতার্কিক হলেন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আহমাদ মুস্তাইন বিল্লাহ, আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ত্বহা তরীক, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নিয়ামত উল্লাহ এবং দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আবদুল কাদের।
আহমাদ মুস্তাইন বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যত ভালো আরবি-ই পারি না কেন, আরবি ভাষী বিতার্কিকদের সঙ্গে পেরে ওঠা কষ্টসাধ্য বিষয়। তারপরও এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে আমরা খুশি।’
ড. সিদ্দিকী কাতার প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৯৭১ সালে কাতার পুরোপুরি স্বাধীনতা লাভ করে। সে সময় গরিব থাকলেও গত কয়েক দশকে পুরোপুরি বদলে গেছে কাতার। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, বরং এখানকার লোকদের মানসিকতা ও আচার আচরণেও সুন্দর পরিবর্তন হয়েছে। কাতারের আতিথেয়তায় আমরা মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ।’
রাজধানী দোহায় ১৬ মার্চ থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আলরাইয়ান এলাকায় কাতার জাতীয় সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে এ বছর অংশ নিয়েছে ১৫টি আরব দেশ এবং ৩৭টি অনারব দেশের ১০০ টির বেশি বিতার্কিক দল।
বিভিন্ন পর্ব পেরিয়ে ফাইনাল পর্বে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখোমুখি হয় জর্ডানের প্রিন্সেস সুমাইয়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার চতুর্থ আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।