ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রে চরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

ভারতের অ্যান্টিস্যাটেলাইট বা অ্যাসেট মিসাইল পরীক্ষার ওপর নজরদারির অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন থেকে দাবি করা হয়, ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়ায় মিসাইল ঘাঁটিতে কোনো পর্যবেক্ষণ বিমান পাঠানো হয়নি। তবে ভারতের প্রথম অ্যান্টিস্যাটেলাইট অস্ত্র পরীক্ষা সম্পর্কে তারা আগে থেকেই সচেতন ছিল।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডেভিড ডব্লিউ ইস্টবার্ন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন কোনো সম্পদ ভারতের ওপর চরবৃত্তি করেনি। বরং ভারতের সঙ্গে টেকসই অংশীদারত্বের মাধ্যমে শক্তিশালী প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সৃষ্টি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।’

সামরিক বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা জানায়, অ্যান্টিস্যাটেলাইট মিসাইল পরীক্ষা নজরদারি করতে বঙ্গোপসাগরে একটি মিশনে পর্যবেক্ষণ বিমান পাঠায় মার্কিন বিমানবাহিনী। এই তথ্য থেকে অনেকেই ধারণা করছে, যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসেট পরীক্ষার ওপর গোয়েন্দাগিরি করছে। হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকসের জ্যোতির্বিদ জোনাথন ম্যাকডয়েল এই প্রতিবেদন নিয়ে বলেন, ‘এটি ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সুসম্পর্কের পরিচায়ক বলে আমার মনে হয় না। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারির জের ধরে আগে থেকেই এই পরীক্ষার কথা জানতে পেরেছে।’

জোনাথন ম্যাকডয়েল বলেন, ‘শত্রু হোক, মিত্র হোক, গোয়েন্দাগিরি সবাই করে। আজকাল এভাবেই চলছে বিশ্ব। বরং যুক্তরাষ্ট্র যদি এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পর্কে আগে থেকে না জানত, নজরদারি না করত, তাহলেই ব্যাপারটি বিস্ময়কর হতো।’ চন্দ্র এক্সরে সেন্টারের সদস্য ও ই-মেইলভিত্তিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ-সংক্রান্ত নিউজলেটার জোনাথন মহাবিশ্ব প্রতিবেদনের লেখক ও সম্পাদক ম্যাকডয়েল বলেন, বিমান ইস্যু নিয়ে তাঁর কোনো সমস্যা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র সেন্সর বিমান ব্যবহার করে ভারতের মিসাইল পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছে, এটি অবাক হওয়ার মতো কোনো ব্যাপার না।

ইস্টবার্ন বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক এতটাই মজবুত যে তার ভিত নাড়ানোর সাধ্য কারও নেই। সার্বভৌমত্ব, মুক্তবাণিজ্য, আন্তর্জাতিক নিয়মের প্রতি আনুগত্য এবং বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের ক্ষেত্রে দুই দেশই পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখে।’ বিমানবাহিনীর স্পেস কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডেভিড ডি থম্পসন গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের জানান, ভারতের আসন্ন অ্যাসেট পরীক্ষা সম্পর্কে আগে থেকেই জানত যুক্তরাষ্ট্র। কংগ্রেসের শুনানিতে তিনি বলেন, ‘ভারত আগেই ফ্লাইট বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই তথ্য থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে এমন কিছু হতে পারে। স্থানীয় সময় রাত ১:৩৯-এ মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার এক ঘোষণায় বলেন, ভারত এখন মহাকাশে পরাশক্তি। ভারতের গবেষকেরা পরীক্ষামূলকভাবে লো আর্থ অরবিটে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছেন।