পেঁয়াজের মালা উপহার নাকি উপহাস!

শতাব্দী রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
শতাব্দী রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

নির্বাচনী প্রচারে চিত্রতারকা শতাব্দী রায় গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের ফরিরবেড়া গ্রামে। সেখানকার এক চাষি তাঁর হাতে পেঁয়াজের বিশাল একটি মালা তুলে দেন। মালাটি হাসিমুখে গ্রহণ করেন শতাব্দী। এখন বিরোধীরা বলছে, এই মালা উপহার নয়, এ ছিল উপহাস।

শতাব্দী এবার নিয়ে তিনবার লোকসভার বীরভূম আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। ২০০৯ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হন। এবারও তিনি সাংসদ হতে চান।

ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন শতাব্দী। কলকাতা ছেড়ে তিনি এখন বীরভূমের অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার শতাব্দী প্রথমে যান বীরভূমের লোবা এলাকায়। তিনি লোবার কালীমন্দিরে পূজা দেন। তারপর খোলা গাড়িতে প্রচারে নামেন।

লোবা থেকে শতাব্দী চলে যান ফরিরবেড়া গ্রামে। সেখানকার এক চাষি পেঁয়াজের বিশাল এক মালা তুলে দেন তাঁর হাতে।

শতাব্দী মালা পেয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য না করে বরং তা হাসিমুখে গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘ধন্যবাদ আপনাকে। হাত মেলান। আগামী বেশ কয়েক মাস আমাকে আর রান্নার জন্য বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনতে হবে না।’

পেঁয়াজের মালা পর্ব সেখানেই শেষ হয়। কিন্তু এ নিয়ে বিরোধীরা শতাব্দীকে কটাক্ষ করার সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তারা বলছে, এটা (পেঁয়াজের মালা) উপহার নয়, উপহাস।

কটাক্ষ করার পেছনে অবশ্য যুক্তিও আছে। এবার ফরিরবেড়া গ্রামে পেঁয়াজের প্রচুর ফলন হয়েছে। চাষিরা পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। প্রতি কেজি পেঁয়াজ মাত্র ৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক চাষি জমি থেকে পেঁয়াজ না তুলে খেতেই তা নষ্ট করে দিচ্ছেন। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার প্রতিবাদে গ্রামের চাষিরা বর্তমান সাংসদ শতাব্দীর হাতে এই পেঁয়াজের মালা তুলে দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এবার পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন পেঁয়াজচাষিরা। তাঁরা হুগলির পান্ডুয়া, পোলবা ও বলাগড় এলাকার রাস্তায় পেঁয়াজ ফেলে প্রতিবাদ করেছেন। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকারকে পেঁয়াজচাষিদের রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনতে হবে।

বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবে শতাব্দী বলেছেন, ‘এটা পুরস্কার, উপহাস নয়। কারণ, বাংলায় মোদির শাসন চলে না। এখানকার কৃষকেরা উপেক্ষিত থাকবেন, তা হতে পারে না। রাজ্যে যখনই কৃষকেরা কোনো সমস্যায় পড়েছেন, তখনই মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে এসে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’

অবশ্য যে চাষি শতাব্দীকে পেঁয়াজের মালা দিয়েছেন তিনি বলেছেন, তাঁর মতো গরিব চাষির পক্ষে সাংসদকে উপহার দেওয়ার মতো কিছু ছিল না। তাই তিনি পেঁয়াজের মালা উপহার দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল মালদা জেলার সামসিতে এক নির্বাচনী জনসভায় বলেন, এবার আর এনআরসি নয়, হবে এনবিসি। মানে ন্যাশনাল বিদায় সার্টিফিকেট। বিদায় নিতে হবে মোদিকে।

মমতা বলেন, ‘আর নয় এনআরসি। এ রাজ্যে কোনো দিন হবে না এনআরসি। এবার আমাদের লড়তে হবে এনবিসি নিয়ে। হটাতে হবে মোদিকে।’