ফিলিস্তিন নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ছে মুসলিম বিশ্ব

ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তির পর ফিলিস্তিনের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চরমে। ইসরায়েলের সঙ্গে যেসব আরব দেশের অতীতে যুদ্ধ হয়েছিল, তাদের প্রায় সবাই এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার অনেক মুসলিম দেশ চুক্তির বিরোধিতা করে এটাকে ফিলিস্তিনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলে আখ্যা দিয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর এই দ্বিধাবিভক্ত অবস্থান নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মোহাম্মদ আল নাহিয়ান।
রয়টার্স ফাইল ছবি।

তিনি বলেছেন, মুসলিম বিশ্বের এই বিভক্তি যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও আমিরাতের মধ্যে ওই চুক্তির কথা ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে আর ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ করবে না। বিনিময়ে আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। এই চুক্তির ঘোষণার পর ইতিমধ্যে ইসরায়েল–আমিরাতের মধ্যে টেলিফোন যোগাযোগ চালু হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে অভিহিত করলেও পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন থেকে সরে আসেননি বলে জানান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র আমিরাত। দেশটি যেহেতু ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে, সে কারণে সৌদি আরবও একই পথে হাঁটতে পারে। আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরানকে মোকাবিলা করতেই তারা এটা করবে।

চুক্তির কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিন বলেছে, আমিরাত যা করেছে, তা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাকতা। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইতিমধ্যে আমিরাত থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতের দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্বের প্রায় সবাই ইসরায়েল ও আমিরাতের মধ্যে হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দুই রাষ্ট্র গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। তবে এখন পর্যন্ত সৌদি আরব কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও আরব দেশ বাহরাইন, মিসর ও জর্ডান এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে ইরান ও তুরস্ক এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র আমিরাত। দেশটি যেহেতু ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে, সে কারণে সৌদি আরবও একই পথে হাঁটতে পারে। আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরানকে মোকাবিলা করতেই তারা এটা করবে।

মিডল ইস্ট আই–এর গতকাল মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার বলেছেন, সৌদি আরবের অর্থনৈতিক স্বার্থে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কাজে দেবে নতুন এই চুক্তি। সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আমিরাতের পদাঙ্ক অনুসরণ করে রিয়াদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
হংকংয়ের সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট–এর খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া সরকার ইসরায়েল–আমিরাত চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির গত শুক্রবার বলেন, এই চুক্তি শান্তি প্রতিষ্ঠাকে পিছিয়ে দেবে এবং বিভক্ত মুসলিম বিশ্ব সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে।