জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে নয়া মেরুকরণ!

শ্রীনগরে রোববার বৈঠক করেন কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী (বাঁয়ে) এবং জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষমতাসীন দল পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি। ছবি: আইএএনএস
শ্রীনগরে রোববার বৈঠক করেন কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী (বাঁয়ে) এবং জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষমতাসীন দল পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি। ছবি: আইএএনএস

ভারতে কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি। বিজেপির নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কারির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মেহবুবা। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ সাঈদ মারা যাওয়ার দুদিন পরেই এই দুই নেতার সঙ্গে মেহবুবার বৈঠক রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হবে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

অসুস্থ হয়ে গত বৃহস্পতিবার মারা যান পিডিপির প্রতিষ্ঠাতা মুফতি সাঈদ। মেহবুবা মুফতি তাঁর মেয়ে। মুফতি সাঈদের মৃত্যুর পর মেহবুবাই রাজ্যের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে সব মহল থেকে বলা হচ্ছিল। কাল সোমবার তিনি শপথ নিতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার সোনিয়া ও নিতিনের সঙ্গে বৈঠক করলেন মেহবুবা। তিনি যে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন না, সেটা গত শনিবারই সবাইকে জানিয়ে দেন। আগামী সপ্তাহে যে তিনি শপথ নিচ্ছেন না, সেটাও অনেকটা নিশ্চিত। দৃশ্যত মেহবুবার সঙ্গে বৈঠকে সোনিয়া ও নিতিন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শ্রীনগরে রোববার সোনিয়ার সঙ্গে ১৫ মিনিটের মতো বৈঠক হয় মেহবুবার। বৈঠকে উপস্থিত থাকা কংগ্রেস নেতা গোলাম নবী আজাদ অবশ্য বলেন, শুধু শোক জানানোর জন্যই এই বৈঠক। কংগ্রেসের অন্য সূত্রগুলোও বলছে, এই বৈঠকের মধ্যে রাজনীতি নেই।
নিতিনের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা নির্মল সিং। তিনি প্রয়াত মুফতি সাঈদের ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। নির্মল বলেন, মেহবুবা মুফতিকে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আজ রাজনীতি করার দিন নয়।’
কিন্তু এই দুই বৈঠকের কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের রাজনীতিতে কি নতুন কোনো মেরুকরণ হচ্ছে? বর্তমানে বিজেপির সঙ্গে জোট গঠন করে সরকার চালালেও মেহবুবার পিডিপি এর আগে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় গিয়েছিল।
গত বছরের মার্চে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মুফতি সাঈদ। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে রাজ্যে সরকার গঠন করেন তিনি। জম্মু ও কাশ্মীরের ৮৭ আসনের বিধানসভায় পিডিপির আসন ২৮ টি ও বিজেপির আসন ২৫টি। এ ছাড়া ন্যাশনাল কনফারেন্সের ১৫ ও কংগ্রেসের ১২টি আসন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সাঈদের মৃত্যুর পর গত শুক্রবার থেকে রাজ্যে গভর্নরের শাসন চলছে।
বর্তমানে ৫৬ বছর বয়সী মেহবুবা ১৯৯৬ সালে রাজনীতি শুরু করেন। বাবা মুফতি সাঈদের সঙ্গে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে পিডিপি প্রতিষ্ঠা করেন মুফতি সাঈদ। পিডিপির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মেহবুবা।
১৯৯৯ সালের প্রতিষ্ঠিত পিডিপি ২০০২ সালে কংগ্রেস ও কিছু স্বতন্ত্র বিধায়কের সমর্থন নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করে। ২০০৮ সালে সরকার গঠনে ব্যর্থ হলেও ২০১৫ সালে বিজেপির সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসে। সূত্র: এনডিটিভি অনলাইন।