সরকার গঠনে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পিডিপি?

মেহবুবা মুফতি
মেহবুবা মুফতি

জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যে সরকার গঠনের প্রশ্নে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) সম্ভবত আজ রোববার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। পিডিপির সভানেত্রী মেহবুবা মুফতি আজ দলীয় নেতা ও বিধায়কদের বৈঠক ডেকেছেন। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে জোট সরকার তিনি গড়বেন কি না কিংবা গড়লেও কোন শর্তে, আজকের বৈঠকে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাবে বলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন।
মুফতি মুহাম্মদ সাইদের মৃত্যুর পর তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও তাঁর কন্যা মেহবুবা মুফতি সরকার গঠন করবেন কি না সে বিষয়ে এখনো নীরব। বাবার মতো বিজেপির সঙ্গেই জোট বেঁধে সরকার গড়বেন নাকি কংগ্রেস ও নিদর্লীয় বিধায়কদের সহায়তায় সরকার গঠনে উদ্যোগী হবেন, সে নিয়ে এ পর্যন্ত স্পষ্ট করে তিনি কিছু জানাননি। দিনকয়েক আগে রাজ্যের শীতকালীন রাজধানী জম্মুর সরকারি বাসভবন ছেড়ে মেহবুবা সপরিবার শ্রীনগর চলে এসেছেন। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। এমন এক প্রেক্ষাপটে আজকের বৈঠক। রাজ্যে এখন রাজ্যপালের শাসন চলছে।
জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য বিধানসভার ৮৭ আসনের মধ্যে পিডিপির ২৮টি, বিজেপির ২৫, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ১৫, কংগ্রেস ১২, পিপলস কনফারেন্স ২ এবং নির্দলীয়দের আসন ৫টি। বিজেপির সঙ্গে না গেলে কংগ্রেসের সমর্থনে পিডিপি সরকার গড়তে পারে বাইরে থেকে এনসির সমর্থন নিয়ে। অথবা এনসির সমর্থন ছাড়াই কংগ্রেস, পিপলস কনফারেন্স ও নির্দলীয়দের নিয়ে মেহবুবার পক্ষে সরকার গড়া সম্ভব। এ ধরনের জোট সরকার গড়া বিজেপির পক্ষেও সম্ভব এনসির সক্রিয় সমর্থন নিয়ে। কিন্তু মুফতি মুহাম্মদের সঙ্গে বিজেপি যেহেতু হাত মিলিয়েছিল, তাই তাঁর কন্যার সিদ্ধান্তকে বিজেপি গুরুত্ব দিতে চায়। বিজেপির কেন্দ্রীয় সূত্র বলছে, পিডিপি দ্বিধাবিভক্ত। এনসিও তাদের সমর্থন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু মেহবুবা মুফতি কী চান তা না জেনে তারা এগোতে নারাজ।
বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়ায় মেহবুবার সায় ছিল না। কিন্তু বাবার রাজনৈতিক বিরোধিতা তিনি করতে চাননি। এখন তিনি চাইছেন, বিজেপির সঙ্গে একান্তই সরকার গড়তে হলে তা যেন তাঁর শর্ত মেনেই হয়। সেই শর্তগুলোর একটি হলো রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহার। তা ছাড়া বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আলোচনা চালানোর প্রশ্নেও বিজেপিকে নমনীয় হতে হবে। মুফতি সাইদ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসরাত আলমকে মুক্তি দিয়েছিলেন। পরে কেন্দ্রের চাপে তাঁকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়।
পিডিপির শক্ত ঘাঁটি দক্ষিণ কাশ্মীর। বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধার কারণে সেখানে দলের সমর্থনে ভাটা পড়েছে। মেহবুবা বিষয়টি উপলব্ধি করছেন। আর এ কারণেই তাঁর মধ্যে একটা দোলাচল কাজ করছে। এই দোলাচলের মধ্যেই কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী উপত্যকায় এসে তাঁর সমর্থনের প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন। বিজেপি মনে করছে, আজকের বৈঠকে মেহবুবা মুফতি স্থির কোনো সিদ্ধান্ত পৌঁছাবেন। আর তা দেখেই বিজেপি তার পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।