গলার মসৃণ ত্বক!

নিয়মিত যত্ন নিলে গলার ত্বকে বলিরেখা পড়বে না মডেল: ফাহিমা মিম, কৃতজ্ঞতা: হারমনি স্পা, ছবি: নকশা
নিয়মিত যত্ন নিলে গলার ত্বকে বলিরেখা পড়বে না মডেল: ফাহিমা মিম, কৃতজ্ঞতা: হারমনি স্পা, ছবি: নকশা

খুব সুন্দর করে সাজগোজ শেষে পছন্দের হারটি পরতে গিয়ে আয়নার সামনে অনেককেই থমকে দাঁড়াতে হয়। কারণটা গলা ও ঘাড়ের কালচে দাগ। গলা ও ঘাড়ের ত্বকটা সুন্দর না হলে বড় গলার পোশাক পরতেও অস্বস্তি হয়। আসলে মুখের যত্ন আমরা সবাই নিয়ে থাকি, হাত-পায়ের যত্ন নিতেও ভুলি না কিন্তু প্রায়ই যেটা ভুলে যাই সেটা হলো ঘাড় ও গলার যত্ন নিতে। রোদে পুড়ে, ধুলাবালু জমে ঘাড়, গলায় একসময় কালো দাগ পড়ে যায়। এ ছাড়া হরমোনের ভারসাম্যহীন, মেয়েদের গর্ভকাল, অনিয়মিত পিরিয়ড, স্থূলতা এবং নিয়মিত ঘাড় পরিষ্কার না করার ফলেও গলা ও ঘাড়ের ত্বক সৌন্দর্য হারায় বলে জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা রিতা। নিয়মিত সঠিক উপায়ে যত্ন নিলে ঘাড়ের কালচে দাগ, বলিরেখা বা ভাঁজ দূর করা সম্ভব। তার জন্য প্রথমে একটা পাত্রে খানিকটা গরম পানি নিয়ে তাতে তোয়ালে ভিজিয়ে নিয়ে ঘাড় ৫-৭ মিনিট ধরে মুছে নিতে হবে। এতে মৃত কোষগুলো নরম হবে। এ ছাড়া গলা ও ঘাড়ের ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়ে কিছু স্ক্রাব, মাস্ক ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের কথা জানালেন তিনি।

স্ক্রাব:
১ টেবিল চামচ সি সল্ট ও বেকিং সোডার সঙ্গে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট আলতো ঘষে স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
১ টেবিল চামচ চিনির সঙ্গে জলপাই তেল ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
স্ক্রাবিং সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করলে ঘাড়ের কালো দাগ হালকা হতে থাকবে। স্ক্রাবিংয়ের পর ঘাড়ে মাস্ক লাগাতে হবে।

ঘরোয়া কিছু প্যাক
১ টেবিল চামচ টকদই, লেবুর রস ও বেসন ১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ঘাড়ে লাগাতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট প্যাকটি রেখে দিয়ে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
১ টেবিল চামচ করে চালের গুঁড়া, আলুর পেস্ট, চন্দন ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে ঘাড়ে লাগাতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট প্যাকটি রেখে দিয়ে আলতো হাতে ঘষে ঘষে প্যাকটি তুলতে হবে। মাস্কটি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করতে হবে।
১ টেবিল চামচ করে টমেটো ও লেবুর রস ও ১ চা-চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে তুলো দিয়ে ঘাড়ে লাগাতে হবে। এই প্যাকটি ন্যাচারাল ব্লিচিংয়ের কাজ করবে। এই প্যাকটি চাইলে গোসলের আগে প্রতিদিন ব্যবহার করা যাবে।
প্যাক তুলে ফেলে ঘাড়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। বাজারের যেকোনো ভালো ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ হলে বেশি ভালো। অথবা ঘরে বানানো ময়েশ্চারাইজারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ময়েশ্চারাইজার
২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, ২টি ভিটামিন ই ক্যাপ, ১ চা-চামচ কাঠবাদাম তেল ভালোভাবে মিশিয়ে তৈরি করে নিন ময়েশ্চারাইজার। এই ময়েশ্চারাইজারটি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে লাগিয়ে নিতে হবে।
এভাবে নিয়মিত যত্নে গলা ও ঘাড়ের পোড়া ভাব অথবা কালো ভাব ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে অনেকটা কমে আসবে। শীত প্রায় চলে এসেছে। শুষ্ক আবহাওয়া এবং বাইরে প্রচুর ধুলাবালু, তাই মসৃণ সুন্দর দাগহীন ঘাড় পেতে শুধু বাহ্যিক যত্নই নয়, খেতে হবে প্রচুর পরিমাণ পানি ও শাকসবজি। মুখে ক্রিম লাগানোর সময় গলাতেও ক্রিম লাগাতে হবে নিয়মিত। নিচে থেকে ওপরের দিকে মালিশ করার মাধ্যমে ক্রিম লাগাতে হবে। এতে করে গলায় ভাঁজ বা বলিরেখা পড়বে না।