দেশি নাকি হাইব্রিড বরই

কুল বা বরই—দুই নামে পরিচিত ফলটি। দুই নামের পাশাপাশি আমাদের দেশে দুই জাতের বরই পাওয়া যায়। একটি দেশি, আরেকটি হাইব্রিড। কাঁচা ও পাকা দুই রকমের বরই খাওয়া হয়। স্বাদ টক ও কাঁচা-মিঠাজাতীয়।

দেশি ও হাইব্রিড এবং কাঁচা ও পাকা—সব রকম বরই পুষ্টিতে ভরপুর। ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ জানালেন দুই ধরনের বরইয়ের গুণাগুণ।

দেশি বরই

দেশি বরইয়ে ভিটামিন সির পরিমাণ বেশি। ভিটামিন সি বেশি থাকার কারণে সংক্রমণজনিত রোগ যেমন টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বায় ঘা, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি দূর করে। দেশি বরইয়ে প্রচুর পরিমাণ রস থাকে। বরইয়ের রসকে অ্যান্টিক্যানসার হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ফলের রয়েছে ক্যানসার কোষ, টিউমার কোষ ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ ক্ষমতা। দেশি বরই স্বাদে তুলনামূলক টক। টক বেশি হওয়ার কারণে এতে ক্যালরি ও ফাইবার বেশি। ক্যালরি ও ফাইবার থাকার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। তবে দেশি বরই বেশি খেলে অ্যাজমা ও কাশি হতে পারে। শুকনো বরই রক্ত পরিশুদ্ধ করে। এটি হজম প্রক্রিয়ার সহায়ক। বরইতে ফ্যাট নেই বললেই চলে। ২ আউন্স (প্রায় ৪টি) বরই শরীরে ৪৪ ক্যালরি শক্তি জোগান দেয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করতে পারে। বরইয়ের খাদ্যশক্তি শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে সহায়তা করে। ডায়রিয়া, মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি রোগ খুব দ্রুত সারিয়ে তোলে এই ফল।

হাইব্রিড বরই

হাইব্রিড বরই খেতে খুব সুস্বাদু। বেশি ভাগ মানুষ এ জাতের বরই পছন্দ করে। হাইব্রিড বরইয়ে চিনির পরিমাণ বেশি। চিনি বেশি থাকার কারণে শরীরের বেশ কিছু উপকার হয়। এই বরই বেশি খেলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। ক্ষুধা নিবারণের জন্যও হাইব্রিড বরই খেতে পারেন। ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদিসহ আরও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে এ বরইয়ে। ফলে হাড় শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে। আয়রন ও ফসফরাস শরীরে রক্ত উৎপাদন এবং রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া বাড়ায়। এই বরইয়ে ভিটামিন এ থাকায় চোখের যত্নে দারুণভাবে কাজ করে। দৃষ্টিশক্তি শক্তিশালী করতে বরইয়ের জুড়ি নেই।

গ্রন্থনা: তারিকুর রহমান খান