শীতে ব্যথা বাড়ে কেন?

ঠান্ডা থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে এ সময়। ছবি: অধুনা
ঠান্ডা থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে এ সময়। ছবি: অধুনা

শীতকালে অনেকেই ব্যথার উপসর্গ নিয়ে আতঙ্কে থাকেন। শুধু আর্থ্রাইটিসজনিত জয়েন্টের ব্যথা ছাড়াও ঘাড়, কোমর ও মাংসপেশির ব্যথায় অনেকে আক্রান্ত হতে পারেন বা আগের ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়।

এ বিষয়ে জাতীয় নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, কারও কারও বেশি ঠান্ডায় মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথা বেড়ে যায়। আবার কারও সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে সাইনোসাইটিস হয়ে মাথাব্যথা হতে পারে। তাই যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা আগে থেকেই আছে, তাঁরা ঠান্ডা থেকে বেছে চললেই মাথাব্যথা অনেকাংশে কমে যায়।

শীতকালেই কেন বেশি?

* শীতে হাত ও পায়ের দিকে রক্তসঞ্চালন কমে যায়। ফলে জয়েন্টসমূহের প্রদাহ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যথা, ধীরে ধীরে জয়েন্ট ও মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন জয়েন্টের চারপাশের ত্বক খুব বেশি ঠান্ডা হলে স্নায়ু প্রান্তগুলোর সংবেদনশীলতা বেশি হয়। শীতকালে শক্ত কোনো কিছুর সঙ্গে আঘাত বা স্পর্শ লাগলে বেশি ব্যথা অনুভূত হয়।

* শীতকালে শরীরের অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডির পরিমাণ হ্রাস পায়, যা মুড বা ভাব, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড় ও জয়েন্টের সমস্যা সৃষ্টি করে। বংশগতভাবে শীতকালে বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা বা ফোলা দেখা দিতে পারে।

* বাতাসের চাপের সঙ্গে শীতকালে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। আমরা নিশ্বাসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ অক্সিজেন পাই, যা শরীরে সহজেই ক্লান্তি নিয়ে আসে এবং যেকোনো কাজে আলস্যতা এনে দেয়।

উপসর্গ

খুবই কষ্টকর যন্ত্রণা ও অসহনীয় ব্যথা, কখনো কখনো জয়েন্ট ফুলে যায়, শক্ত হয়ে যায়, লাল হয়ে গরম হতে পারে। ঘাড় ও কোমরের ক্ষেত্রে ব্যথা হাত বা পায়ে আসতে পারে এবং অবশ লাগতে পারে। অনেকক্ষণ বিশ্রামে থাকার পর চলাচলের সময় ব্যথা ও মাংসপেশির স্টিফনেসের সমস্যা দেখা যায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর জয়েন্ট শক্ত হয়ে থাকে, কাজকর্ম শুরু হলে আস্তে আস্তে সচল হয়ে যায়।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

* কেউ আগে থেকেই ওষুধ সেবন করলে এই সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শে ডোজ ঠিক করে নিতে হবে। তাঁর পরামর্শমতো চলতে হবে।

* ব্যথাযুক্ত স্থানে দিনে দুইবার গরম সেঁক দিলে কিছুটা উপশম পাওয়া যায়।

* তাতে কাজ না হলে ফিজিওথেরাপির শেখানো ব্যায়াম ভালো করে করা। ইলেকট্রোথেরাপি, ম্যানুয়ালথেরাপি চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে।

* ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে ব্যথানাশক ওষুধ বেশি দিন সেবন না করাই ভালো

* পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ খুব জরুরি।

* সর্দি-কাশি যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

লেখক: চিকিৎসক