বিয়েবাড়ির খাবারদাবার

শুধু স্বাদই নয়, বিয়ে বাড়িতে খাবারের মানের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। ছবি: নকশা
শুধু স্বাদই নয়, বিয়ে বাড়িতে খাবারের মানের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। ছবি: নকশা

বিয়েবাড়ির বড় আকর্ষণ জম্পেশ খাওয়াদাওয়া। বিয়ের আয়োজন কতটা ভালো হলো, তা বিয়ের দাওয়াতের খাওয়ার ওপরও অনেকাংশে নির্ভর করে। খাবারদাবারের পুরো দায়িত্ব এখন ক্যাটারিং সার্ভিসকেই দিয়ে দেওয়া হয়। যাঁদের বিয়ে এখন পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, তাঁদের জন্য থাকল বেশ কিছু ক্যাটারিং সার্ভিসের খোঁজখবর।

ইকবাল হোসেন ক্যাটারিং

স্বাদ আর খাবারের মান দুটো বিষয়কেই সমান গুরুত্ব দেয় ইকবাল হোসেন ক্যাটারিং। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মো. খায়রুল হোসেন বলেন, ‘ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিয়ের আয়োজনে খাবার সরবরাহ করি আমরা।’ কাচ্চি বিরিয়ানি, প্লেইন পোলাও, মোরগ পোলাওয়ের প্যাকেজ রয়েছে। আবার এসবের বাইরে পছন্দমতো খাবারের ফরমাশও করা যায়। প্যাকেজ হিসেবে খাবার নিতে চাইলে মূল্য পড়বে জনপ্রতি ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। এক সপ্তাহ আগে অর্ডার দিতে হবে।

ঠিকানা: রোড ৬/এ, বাড়ি-১৫, নবোদয় হাউজিং সোসাইটি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭। যোগাযোগ: ৮১৫৪৯৮০,

০১৭১৩ ৩৩৪০৪৪।

ফখরুদ্দীন বিরিয়ানি অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট

সারা দেশে বিয়ের খাবার সরবরাহ করেন ফখরুদ্দীন বাবুর্চি। প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ছোট্ট একটি খাবারের দোকানের মাধ্যমে। এরপর আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে তাদের খাবারের ব্যবসা। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন তিন-চারটি বিয়ের খাবার সরবরাহ করতে পারে। বেশি লোকের আয়োজন হলে তাঁরা সেখানে গিয়ে রান্না করে দেন। লোকসংখ্যা যদি কম হয়, তবে দুই-এক দিন আগে অর্ডার দিলেই হয়। বিয়ের বাড়ির খাবারের প্যাকেজ ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে। ঠিকানা: রোড ৪/এ, হাউস ৫৫, ধানমন্ডি, ঢাকা। এ ছাড়া ঢাকায় আরও বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে।

শওকত তেহারি ঘর অ্যান্ড ক্যাটারিং

মোহাম্মদপুর টাউন হল পাকা মার্কেটের ৭ নম্বর দোকানটি শওকত তেহারি ঘর অ্যান্ড ক্যাটারিং। বিয়ের খাবারের জন্য প্রতিষ্ঠানটির সুখ্যাতি রয়েছে। শওকত তেহারি ঘর অ্যান্ড ক্যাটারিংয়ের স্বত্বাধিকারী শওকত হোসেন বলেন, ‘বিয়েবাড়িতে সবাই সবচেয়ে ভালো খাবারটিই দিতে বলে। তাই বিয়েবাড়িতে খাবার পরিবেশনে চাই সতর্কতা। বিয়েবাড়ির খাবারের তালিকায় থাকা সাদা পোলাও, খাসি বা গরুর রেজালা, মুরগির রোস্ট, জর্দা, বোরহানি বা দই ইত্যাদি পরিবেশন করি আমরা। এখন বিয়ের খাবারের মেন্যুতে চলে এসেছে খাসির কাচ্চি, মুরগির গ্রিল, ফিরনি, মাঠা বা লাবাং, সালাদ ইত্যাদি।’ শওকত হোসেন বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী খাবারের তালিকা করে থাকি আমরা। এ জন্য প্লেটপ্রতি দামেরও কিছু পার্থক্য রয়েছে। খাবারের পদের ওপর প্রতি প্লেট ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকার মতো দাম পড়ে।

নান্না মিয়া বিরিয়ানি হাউস

বিয়ের খাবারের জন্য নান্না মিয়া বিরিয়ানি হাউসের খাবার সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত। নান্না মিয়া খাবারের ব্যবসা শুরু করেন পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে, প্রায় ৪৭ বছর আগে। এরপর ৪২ বেচারাম দেউড়ির গলির বর্তমান দোকানে ব্যবসা শুরু করেন, তা-ও প্রায় ২২ বছর হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাঁরা বিয়েতে খাবার সরবরাহ করে আসছেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মো. এনাম বলেন, ‘একসঙ্গে দুই থেকে তিনটি বিয়ের খাবারের অর্ডার নিতে পারি আমরা। আসল নান্না মিয়ার বিয়ের খাবার পেতে হলে আমাদের দোকানগুলো থেকে খাবার কিনতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, বিয়ের খাবারের অর্ডার দিতে হলে সরাসরি এসে কথা বলতে হবে। যদি খাবারের পরিমাণ বেশি হয়, তবে তিন থেকে চার দিন আগে অর্ডার দিতে হবে; আর যদি কম হয়, তবে এক থেকে দুই দিন আগে অর্ডার দিলেই হবে। মোরগ পোলাও, খাসির কাচ্চি, খাসির বিরিয়ানির প্যাকেজ রয়েছে। এর সঙ্গে কী কী উপকরণ থাকবে তার ওপর দাম নির্ভর করে।

ঠিকানা: ৪২ বেচারাম দেউড়ি, বেগম বাজার কমিশনার কার্যালয়ে যেতে তিন রাস্তার মোড়ে।

দেলোয়ার হোসেন ক্যাটারিং

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে দেলোয়ার হোসেন ক্যাটারিংয়ের অবস্থান। দেলোয়ার ক্যাটারিং সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিয়েতে কাচ্চি বা মোরগ পোলাও হলো মূল আইটেম। এর সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী উপকরণ সরবরাহ করা হয়। অনেক সময় নান রুটির সঙ্গে গরু বা খাসির কালো ভুনা থাকে। মাছের একটি পদও রাখেন অনেকে। আর সালাদ তো থাকবেই। বোরহানির পাশাপাশি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে লাবাং ও মাঠা। খাবারের সঙ্গে তাই এই পদটি না হলে ঠিক জমেই না।

বিয়ে যখন রেস্তোরাঁয়

বর্তমানে রেস্তোরাঁয় ব্যুফে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখা যায়। বিয়ের দাওয়াতে চীনা খাবারও চলেছে অনেক আগে থেকেই। ব্যুফে রেস্তোরাঁগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ পদের খাবার থাকে। বুফেতে পছন্দমতো উপকরণ নিজের প্লেটে তুলে নিলেই হবে। ব্যুফে রেস্তোরাঁয় আলাদা কোনো ভেন্যু ভাড়া দিতে হয় না। খাবার জনপ্রতি ৫৫০ থেকে ২ হাজার টাকার মতো। এ ছাড়া চীনা খাবারের রেস্তোরাঁয় যদি বিয়ের অনুষ্ঠান করতে চান, তাহলে তাদের সঙ্গে আগেই মেন্যু নিয়ে আলাপ করে নিতে পারেন। অনেক রেস্তোরাঁয় খাবার ছাড়া আলাদাভাবে কোনো ভাড়া দিতে হয় না। এতে করে খরচ খানিকটা কমে আসবে।

আরও কিছু ক্যাটারিং সার্ভিস ও বাবুর্চির ঠিকানা

ফোর সিজনস রেস্টুরেন্ট: রোড-১৬ (নতুন), বাসা-৫৯/এ, সাতমসজিদ রোড, ঢাকা। প্রিন্স রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টার: প্রিন্স প্লাজা (নবম তলা), ৪/২ সোবহানবাগ, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা। বিয়েবাড়ি: ৭ আজিজ সুপার মার্কেট, ১১তলা, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০।

রাভেনাস ওয়ার্ল্ড : ৪৫/১ দিলু রোড, ইস্কাটন, ঢাকা।

সালসা ক্যাটারিং সার্ভিস: বাড়ি ০৯, রোড-১০, সেক্টর-১, উত্তরা, ঢাকা।

স্পাইস ক্যাটারিং: বাড়ি-১২, রোড-৩৩, গুলশান-১, ঢাকা।

হোয়াইট হল ক্যাটারিং: বাড়ি-৫৩, রোড-০৪, সেক্টর-০৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা। বাবুর্চি বিরিয়ানি হাউস অ্যান্ড ক্যাটারিং সার্ভিস: ২৪৬ নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ, মৌচাক, ঢাকা।

যেকোনো অনুষ্ঠানে ক্যাটারিং সার্ভিসের জন্য ৬ ঘণ্টা আগে বুকিং দিতে হয়। বুকিংয়ের সময় ৭০ শতাংশ টাকা অগ্রিম দিতে হয়। বিয়ের বাড়ি ক্যাটারিং সার্ভিসে সর্বনিম্ন ৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ২ হাজার জন লোকের খাবার অর্ডার দেওয়া যায়।

বাবুর্চি

প্রতিটি কমিউনিটি সেন্টারের নিজস্ব বাবুর্চিকে দিয়ে আপনি রান্না করিয়ে নিতে পারেন। নিজের পরিচিত বাবুর্চিকে দিয়ে রান্নার কাজটা সারতে পারেন।

কয়েকজন বাবুর্চির ফোন নম্বর—

মো. সানু মিয়া বাবুর্চি: ০১৬১৩০০৭৭৭৪।

শামসুল হক বাবুর্চি: ০১৮১৯২৬৮০২২।

কিনা গাজি বাবুর্চি: ০১৭১৫৮২২৭৫০।

রহিম বাবুর্চি: ০১৭১৬২৬০৬৬৬।

ঈমান আলী বাবুর্চি: ০১৮১৯২১৩০৬৫।

মো. জব্বার বাবুর্চি: ০১৭১১৫৩২৭৪৫।

আবদুল জলিল বাবুর্চি: ০১৭১১৫২৭৫৭৫।

সালাম বাবুর্চি: ০১৭১১৫২৩৫৬৫।