উপহারে থাক নাটকীয়তা

পয়লা ফাল্গুনের পরদিনই ভালোবাসা দিবস। প্রিয়জনকে নিয়ে নানা পরিকল্পনা থাকে। অনেক সময় ছোট্ট কোনো উপহারই আরও কাছে নিয়ে আসতে পারে দুজনকে। তাই বেছে বেছে ‘ইউনিক’ কিছু দিতে চায় একে অপরকে। কেমন হতে পারে ভালোবাসা দিবসের উপহার?

একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার ক্রিয়েটিভ বিভাগে কর্মরত ফাইরুজ রশিদ বলেন, ‘সব প্রেমিক-প্রেমিকারই এই দিন নিয়ে একটা পরিকল্পনা থাকে। তবে নতুন কিছু করতে চাইলে সময় নিয়ে ভেবে বের করতে পারেন আপনার কাছের মানুষের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো। পাঁচ ঘণ্টা ফোনে কথা বলার চেয়ে একটা হাতে লেখা চিঠি অনেক বেশি আবেগী করে তুলতে পারে আপনার মনের মানুষটিকে।’

নিজের তৈরি খামে হাতে লেখা চিঠি
ই-মেইল বা ইনবক্সের যুগে একটা চিঠি লিখুন ভালোবাসার মানুষটিকে। সময় নিয়ে লিখুন তাঁর প্রতি আপনার ভালোবাসার কথা। একটা রঙিন কাগজে লিখতে পারেন সেই চিঠি। বাজার থেকে রঙিন কাগজ কিনে নিজ হাতে তৈরি করুন একটি খাম। চিঠিটা খামে পুরে ফাল্গুনের প্রথম দিন বা ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনের হাতে গুঁজে দিন। এই চিঠি আপনার কাছের মানুষকে আবেগে ভাসাবেই।


বইমেলার বই
উপহার হিসেবে বই খুবই ভালো। প্রিয়জনের প্রিয় লেখকের নতুন কোনো বই বাজারে এসে থাকলে সেটাই কিনে দিতে পারেন। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় গিয়ে প্রিয় মানুষকে তাঁর প্রিয় বই কিনে দেওয়ার থেকে দারুণ উপহার আর কী হতে পারে? অনেক লেখকের ভালোবাসা সিরিজের উপন্যাস, গল্প বা কবিতা দিয়ে চমৎকার ব্যাগে একটি বিশেষ প্যাকেজ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

ফটোফ্রেম বা কাঠে খোদাই ছবি
নিজেদের প্রিয় কোনো মুহূর্তের ছবি বা প্রিয় মানুষটির একক ছবি প্রিন্ট করে দিতে পারেন। এই ছবি ফটোফ্রেমে যেমন ভরে দিতে পারেন, চাইলে ছবিটি কাঠের ওপর লেজার রশ্মি দিয়ে খোদাই করে বিশেষ উপহার বানাতে পারেন। উপহারটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অনেক অনলাইন দোকান ও কাঁটাবনের দোকানে তৈরি করা যাবে এই কাঠের ফ্রেমের খোদাই করা ছবি।

ছবির কেক
বিশেষ দিন মানেই কেক। এই ভালোবাসার দিনটিও উদ্‌যাপন করতে পারেন কেক কাটার মাধ্যমে, তবে কেকটি হবে বিশেষ কেক। কয়েক বছর ধরে বাজারে এসেছে ছবি ছাপা কেক। আপনাদের দুজনের পছন্দের কোন ছবি প্রিন্ট করা কেক অর্ডার করে রাখতে পারেন আগে থেকে। আর সেই কেক কেটে চমক দিতে পারেন ভালোবাসার মানুষটিকে।

উপহার হোক অভিনব, কৃতজ্ঞতা: আড়ং, ছবি: খালেদ সরকার
উপহার হোক অভিনব, কৃতজ্ঞতা: আড়ং, ছবি: খালেদ সরকার

নিজের বানানো উপহার
আপনি যদি তাঁকে নিজের তৈরি কোনো কিছু উপহার দিতে পারেন, তাহলে সেটি বিশেষ উপহার হয়ে উঠবে। সেটা হতে পারে কোনো শোপিস, কোনো বিশেষ কার্ড, নিজের ডিজাইন করা কোনো পোশাকও দিতে পারেন। প্রিয় মানুষের পছন্দের কোনো খাবারও তৈরি করে খাওয়াতে পারেন।

ঘর সাজানোর জন্য
ঘর সাজানোর সামগ্রীও উপহার হিসেবে মন্দ না। দিতে পারেন ছাদ সাজানোর নানা ধরনের তারা, দেয়াল সাজানোর স্টিকার, ফুলদানি ইত্যাদি। নানা রকম বাক্সে বা বোতলে ভরা ‘ফেইরি লাইট’ দিতে পারেন উপহার হিসেবে।

গাছ
আপনার ভালোবাসার মানুষ যদি প্রকৃতিপ্রেমী হয়, তাহলে দিতে পারেন সুন্দর কোনো গাছের চারা। এই গাছগুলো ঘরের সৌন্দর্যও বাড়াবে। আপনার প্রিয়জন যখন গাছের নিয়মিত পরিচর্যা করবেন, তখন গাছটি তাঁকে আপনার কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। 

বানিয়ে নেওয়া টি-শার্ট
ফরমাশ দিয়ে টি-শার্ট তৈরি করা যায়। আপনার প্রিয়জনের ছবি বা আপনাদের দুজনের ছবি দিয়ে টি-শার্ট করতে পারেন। হতে পারে দুজনের স্মরণীয় কোনো উক্তি বা আদরের ডাক দিয়ে করা টি-শার্ট। ছেপে নিতে পারেন শুধু একটা তারিখও, যা আপনার ভালোবাসাকে বিশেষ তাৎপর্য দিয়েছে।

এ ছাড়াও...
বাজারে অনেক সুন্দর সুন্দর ল্যাম্প পাওয়া যায়। আপনিও বিশেষভাবে পছন্দমতো ল্যাম্প তৈরি করে নিতে পারেন। সেটা দিতে পারেন উপহার হিসেবে। প্রেমিকাকে দিতে পারেন একটি বিশেষ গয়নাও। লকেটে ছবি দিয়ে সেটাও উপহার দিতে পারেন। আংটি একটি ভালো উপহার হতে পারে। প্রেমিকাকে দেওয়া যায় রুপার নূপুর। প্রেমিকের জন্য দিতে পারেন মানিব্যাগ বা টাইসেট। যেটাই দিন না কেন, একটু নাটকীয়তার মাধ্যমে দিলেই প্রিয়জন খুশি হবে। সেটা নিশ্চয়ই কাপলদের অজানা নয়!