মাটির টানে...

মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা এখন বেশ। ছবি: নকশা
মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা এখন বেশ। ছবি: নকশা

বর্ষবরণ উৎসবকে কেন্দ্র করে মাটির জিনিসপত্র কেনার ধুম পড়েছে এরই মধ্যে। রাজধানীর ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় বিপণিবিতানে মাটির তৈরি থালা, বাটি, ছোট-বড় হাঁড়ি কিনছেন অনেকেই। বছরের অন্য সময় ব্যবহার না করা হলেও পয়লা বৈশাখের দিন মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার করা যেন রেওয়াজেই পরিণত হয়েছে। খাবার পরিবেশন করা থেকে শুরু করে ঘর সাজানো—সবকিছুতেই থাকে মাটির তৈরি জিনিসের ছোঁয়া।

কলাবাগানে মাটির সানকি কিনতে এসেছিলেন রেহানা চৌধুরী। জানতে চাইলে বললেন, ‘পয়লা বৈশাখ হলো আমাদের বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতির উৎসব। উৎসবের এদিনটায় বাঙালি আমেজ আনতেই মাটির জিনিসপত্র কিনতে আসা।’ প্রতিবছরই পয়লা বৈশাখে বাড়িতে মাটির সানকিতে পান্তা ইলিশ খাওয়ার আয়োজন করেন তিনি।

কৃতজ্ঞতা: ক্লে স্টেশন
কৃতজ্ঞতা: ক্লে স্টেশন

খাবার টেবিলে নান্দনিকতার ছোঁয়া রাখতে এ ধরনের পণ্যের ব্যবহার জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কার্জন হলের সামনের একটি মাটির জিনিসের দোকানের বিক্রেতা মো. ফারুক জানান, প্রতিদিনই মাটির জিনিস বিক্রি হয় তাঁর দোকানে। পয়লা বৈশাখে বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বড় বড় প্রতিষ্ঠান বেশি পরিমাণে মাটির প্লেট এবং বাটি নেওয়ার ফরমাশ দেন তাকে।

খাবার টেবিলে হালকা নকশার পাট কিংবা কাপড়ের টেবিল ম্যাটের ওপর পোড়া মাটির প্লেট, মগ, বাটি দেখতে দারুণ লাগে। এর সঙ্গে কাঁচা ফুল অথবা সবুজের ছোঁয়া আপনার টেবিলে এনে দেবে বাড়তি সৌন্দর্য। শুধু খাবার টেবিলে কেন, বৈশাখী রং ছড়িয়ে দিতে বসার ঘর এবং শোবার ঘরও সাজাতে পারেন মাটির তৈজসপত্র দিয়ে। আপনার পছন্দমতো শো-পিস বা ফুলদানি পেয়ে যাবেন হাতের কাছেই। এই গরমে আপনাকে এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের সতেজ করে তুলতে বসার ঘরে মাটির বড় পাত্রে পানির মধ্যে ফুল বা ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দিতে পারেন।

কোথায় পাবেন
মৃৎসামগ্রীর খোঁজে আপনি যেতে পারেন দেশীয় বিভিন্ন শোরুমে। এ ছাড়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বেশ কিছু স্থানে পাবেন মৃৎসামগ্রী। মাটির জিনিসপত্রের দেখা মিলবে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর বিপরীতে, কলাবাগানের ফুটপাতে, ঢাকা কলেজের সামনের ফুটপাতে, আসাদগেট এলাকায়। এ ছাড়া বেশ কিছু দেশীয় ফ্যাশন হাউসে রয়েছে মনকাড়া মাটির সামগ্রী। এর মধ্যে আড়ং, যাত্রা, ক্লে স্টেশন, সানরাইজ প্লাজার সিরমিক, মিরপুরের শিল্পচর্চা, মোহাম্মদপুরের আইডিয়া ক্র্যাফটস, শাহবাগ আজিজ মার্কেটে আইডিয়াস কর্নারসহ বেশ কিছু দোকান।

দরদাম
মাটির মগ, গ্লাস এসবের দাম পড়বে ৩০-৫০ টাকা, জগ ১০০-১২০ টাকা, মাটির চমৎকার প্লেটগুলো পাবেন ৩০-৯০ টাকায়, পান্তা খাবার সানকিগুলো পাবেন ৫০ টাকার মধ্যেই। ছোট প্লেট-পিরিচের দাম পড়বে ২৫-৪০ টাকা, ঢাকনাসহ কারি ডিশ পাবেন ৫০-১২০ টাকায়। মাটির কাপ-পিরিচ প্রতিটির দাম পড়বে ২০-৪০ টাকা, বিভিন্ন সাইজের মাটির বাটিগুলো পাওয়া যাবে ৩০-১২০ টাকায়। মুখোশ ১২০-৮৫০ টাকা। বিভিন্ন নকশার শো-পিস ৬০-১০০০ টাকা, মাটির আয়না ১২০-৫০০ টাকা, ওয়াল টব ৯০-৩৫০, মাটির ঘড়ি ২৫০-৪৫০ টাকা, মাটির মোমদানি স্ট্যান্ড ৫০-৩৫০ টাকা। এগুলো ছাড়াও পাবেন ঘর সাজানোর জন্য মাটির অন্যান্য জিনিসপত্রও।