দরজি বাড়ির খোঁজখবর...

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

দোকানে, বাজারে ঘুরলেই পাওয়া যাচ্ছে ঈদের আমেজ। তবে ঈদে যাঁরা অন্যের করা নকশায় নয়, বরং নিজেই ডিজাইনার হয়ে পোশাক বানাতে চান, তাঁরা এখন ভিড় জমাচ্ছেন দরজি বাড়িতে। মেয়েদের পোশাকের নকশা ও কাটিংয়ে বরাবরের মতোই এই বছরও এসেছে অনেক পরিবর্তন। গত ঈদে যে কাটছাঁটের পোশাক খুব ফ্যাশনেবল ছিল, তা কিন্তু এখন পুরোনো। ঢাকা শহরের গুলশান, বনানী থেকে শুরু করে ধানমন্ডি, গাউছিয়া—সব জায়গাতেই আছে দরজির দোকান। সেটারই একঝলক রইল এখানে।

গুলশানের পিংক সিটির বর্ণিল টেইলার্সের কারিগর জানালেন, সবচেয়ে বেশি ফরমায়েশ আসে পেছনে বা হাতায় ইয়ক থাকে এমন পোশাকের। গলায় অনেকে ইয়কের মতো করেন, আবার কেউ উঁচু গলার কলার চান।

এদিকে এই বছর কামিজের লম্বায় বেশ পরিবর্তন দেখা যাবে। এখন আর কনুইছোঁয়া কামিজ কেউ পরছেন না। মাঝামাঝি লম্বার কামিজের ফ্যাশন এখন। কামিজের ঘের থাকবে স্বাভাবিক। গলার ক্ষেত্রে এসেছে নতুন অনেক নকশা। হাইনেক কলার, শেরওয়ানি কলার, বোট গলা, ছোট করে গোল গলা বা একেবারে গলা আটকানো, গলায় কাটে দেখা যাবে এমনই বৈচিত্র্য। কামিজের হাতায় একেবারে নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে। সোজা কনুই পর্যন্ত, থ্রি-কোয়ার্টার, ফুল হাতা, কোল্ড শোল্ডার, হাতার নিচের অংশে ঘের দেওয়া, ট্রাই স্লিভ হাতা, যা দু-তিন জায়গা দিয়ে কাটা থাকে আর মাঝে থাকে পুঁতি বসানো। এ ছাড়া পোশাকে আরও দেখা যাবে হুররাম হাতা, বেলবটম হাতা।

কামিজে এখন বোতামের ব্যবহার খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। অনেকে শেরওয়ানি গলার সঙ্গে সামনে কেটে বোতাম দেন। এ ছাড়া রয়েছে ফ্রক ডিজাইনের কামিজ; যা এক কাটের বা কুঁচি দেওয়া দুই রকমেরই হচ্ছে। দুই লেয়ারের কামিজ এবারের ঈদেও দেখা যাবে। চলবে বিভিন্ন নকশার জ্যাকেটও।

সালোয়ার হিসেবে এখন কেউ ঢোলা পায়জামা পরছেন না। পালাজ্জোর সঙ্গে এখন আরেকটি প্যান্ট আকারের সালোয়ার চলছে। একে পেনসিল প্যান্টও বলে। পালাজ্জোতেও এসেছে পরিবর্তন। এক কাটের ঘের দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্লাউজের আগের চোলি কাটের ডিজাইন একেবারেই নেই। হাইনেক গলা ও বোট গলার ব্লাউজ এখন ফ্যাশন। হাতা কামিজের মতোই চলেছে। কোনি, সার্কেল হাতা ছাড়াও অনেকে লেস দিয়ে ডিজাইনও করছেন। এ ছাড়া পাইপিং ও পেছনে কাপড় দিয়ে বোতাম দেন অনেকে।

ইস্টার্ন মল্লিকার ফ্যাশন টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী মুহাম্মদ আলী বলেন, কুঁচি দেওয়া পালাজ্জো বা প্যান্টের পাশে অনেকে পুঁতি দিয়ে নকশা করছেন। প্যান্টের সামনে বেল্ট ও পেছনে এলাস্টিক থাকে। যাঁরা পাতলা, তাঁরা কামিজের পেছনে চেইন দিচ্ছেন। গাউনগুলোর অর্ধেক বডি ভেলভেট ও নিচে রুমাল সেটের মতো ঘের হয়।

ঈদ পোশাকে লেইস ব্যবহার করছেন অনেকেই। ছবি: নকশা
ঈদ পোশাকে লেইস ব্যবহার করছেন অনেকেই। ছবি: নকশা

লেইসের খবর

এখন খুব চকমকে লেইস চলছে না। ক্রুশ কাঁটার মতো ইয়ক ও লেস ব্যবহার করছেন অনেকে। আবার এখন অনেকে ওড়না বা ব্লাউজের পেছনে সুতার টার্সেল দিচ্ছেন, যা একেবারেই নতুন। গাউনে লাগানোর জন্য পাথরের ইয়ক পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।