জ্যামে বসে কী করছেন?

দীর্ঘ যানজটে বই পড়তে পারেন। মডেল: সজীব, ছবি: দিপু মালাকার
দীর্ঘ যানজটে বই পড়তে পারেন। মডেল: সজীব, ছবি: দিপু মালাকার
>যে বই পড়তে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য মোক্ষম দাওয়াই বই। বাস-কারে যাত্রার আগেই তাই দু-একটা পছন্দের বই ব্যাগে ভরে ফেলা দরকার। তারপর জ্যামে বসে সেটি গ্রোগ্রাসে গেলা যেতে পারে। এতে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, অসহ্য জ্যামকেও আর জ্যাম বলে মনে হয় না।


কচ্ছপের সঙ্গে কখনো গতির প্রতিযোগিতা হলে ঢাকাবাসী হেরে যেতে বাধ্য। শুনে অবিশ্বাস করছেন, তাই তো। তাহলে খুলেই বলা যাক। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, বর্তমানে ঢাকার গাড়ির গতি ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার আর ২০২৫ সালে তা দাঁড়াবে ঘণ্টায় গড়ে ৪ কিলোমিটারে। তখন না চাইলেও কচ্ছপেরা আমাদের বাস-কারের আগেই গন্তব্য পৌঁছাতে পারবে। কারণ কচ্ছপের গতি ঘণ্টায় সাড়ে চার কিলোমিটার।

যা-ই হোক, রাস্তায় বাসে-কারে জ্যামে পড়লেই সবচেয়ে পরিচিত দৃশ্যটি হচ্ছে সময় কাটানোর জন্য ফেসবুক খুলে বসা। তারপর বন্ধু বা পরিচিত-অপরিচিতদের দেয়ালে চলে দেয়াললিখনে কপট সামাজিকতার প্রতিযোগিতা। কিন্তু অনেকেই ভুলতে বসেছি সময় কাটাতে ফেসবুকই একমাত্র সমাধান নয়। জ্যামের সময়টি অন্যভাবেও কাটানো যায়। রোগীভেদে যেমন পথ্য আলাদা, এ ক্ষেত্রেও পছন্দভেদে আলাদা সমাধান রয়েছে।

যে বই পড়তে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য মোক্ষম দাওয়াই বই। বাস-কারে যাত্রার আগেই তাই দু-একটা পছন্দের বই ব্যাগে ভরে ফেলা দরকার। তারপর জ্যামে বসে সেটি গ্রোগ্রাসে গেলা যেতে পারে। এতে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, অসহ্য জ্যামকেও আর জ্যাম বলে মনে হয় না। ইলেকট্রনিকস যুগ ছাপা বই বহনের কষ্টটুকুও কমিয়ে দিয়েছে। এখন তো বড় পর্দার মোবাইল বা ট্যাবলেটে হাজারখানেক বই রাখা যায়। জ্যামে যখন চুল ছেঁড়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না তখন অনায়াসে পছন্দের বইটি পড়ে ফেলা যায়। সে জন্য মুন রিডার, অ্যাডব ইবুক রিডারসহ অনেক অ্যাপ পাওয়া যাবে প্লে-স্টোর বা অ্যাপস্টোরে।

যাঁরা গান শুনতে পছন্দ করেন তাঁরা জ্যামে বসে পছন্দের গানটি শুনবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গান শোনার পাশাপাশি দু-একটা বইও পড়ে দেখতে পারেন। তাতে সময়টা ভালোই কাটবে আশা করি। সে জন্য এফএম রেডিও, অনলাইন রেডিও তো রয়েছেই। কিংবা নিজের সংগ্রহ থেকে পছন্দের গানও শোনা যেতে পারে। মাঝেমধ্যে রেডিওতে শুনে নিতে পারেন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবরটাও। খারাপ লাগা কমে মনটা ফুরফুরে লাগবে।
এ ছাড়া সুডোকুসহ বিভিন্ন পাজল বা মজার মজার গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারেন জ্যামের সময়। সে জন্যও কয়েক ডজন অ্যাপ পাওয়া যাবে। তাতে সময় কাটানোর পাশাপাশি মস্তিষ্ক বা বুদ্ধির ব্যায়ামে শাণিত হবে আপনার চিন্তাভাবনা।

অফিস, ক্লাস কিংবা পরীক্ষার জন্য সকাল থেকেই প্রায় প্রত্যেকের ইঁদুরদৌড় শুরু হয়। তাই বেগবান এই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে আমরা নিজেদেরই হারিয়ে ফেলতে বসেছি। তাই জ্যামের এই সময়টিতে হতাশায় না ডুবে খানিক মেডিটেশন করে নিতে পারেন। তাতে নিজের ভেতর ডুব দিয়ে মণি-মুক্তা না পেলেও অবগাহনের আনন্দ পাবেন। তাতে আপনার মনোযোগ আর আত্মবিশ্বাসের পাল্লাটা একটু ভারীই হবে। আজকাল মেডিটেশনের জন্য কিছু মোবাইল অ্যাপ পাবেন অ্যাপস্টোরগুলোয়। চাইলে সেগুলোও কাজে লাগাতে পারেন।