ডাবের পানি...

ডাবের পানিতে ত্বক থাকবে সুস্থ ও সুন্দর। মডেল: পিউলি, ছবি: নকশা
ডাবের পানিতে ত্বক থাকবে সুস্থ ও সুন্দর। মডেল: পিউলি, ছবি: নকশা

ডাবের পানি উপকারী সব সময়ই। শরীরের ভেতরের সুস্থতা তো বটেই, ত্বকচর্চাতেও দারুণ কার্যকর। মুখের দাগ দূর করতে ডাবের পানি হতে পারে সহজ সমাধান।

হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন অ্যান্ড হেয়ার কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি মনে করেন ডাবের পানি ত্বকের জন্য খুবই ভালো। তবে সেটা ব্যবহারের আগে ত্বকের ধরন বুঝে ফেসপ্যাক লাগানো উচিত। 

ত্বকের জন্য কিছু প্যাক
সব ধরনের ত্বকের জন্যই ডাবের পানি বেশ কাজের। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মটরের ডাল ডাবের পানিতে ভিজিয়ে রেখে বেটে নিয়ে পুদিনা পাতার রস মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। এতে তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে ত্বকে উজ্জ্বলতা আসবে, সঙ্গে দূর হবে নানা দাগ।

শুষ্ক ত্বকের জন্য কাঠবাদাম ডাবের পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে সেটা পেস্ট করে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে হবে। এতে করে শুষ্কতা দূর হয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

ডাবের পানিতে পুদিনা পাতা ও তুলসী পাতার রস সমপরিমাণ মিশিয়ে আইসকিউব করে রাখতে পারেন। বাইরে থেকে ফিরে আইসকিউব ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সতেজতা বৃদ্ধি পাবে।

ডাবের পানি দিয়ে বডি স্ক্র্যাব তৈরি করতে পারেন। ডাবের পানিতে গম ভিজিয়ে রেখে সেটা পিষে নিন। পুরো শরীরে লাগালে শরীরের মরা কোষগুলো দূর হবে।

একটা ডাবের পানিতে গোলাপ পাপড়ি, পুদিনা পাতা আর তুলসী পাতা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। পরে সেটা ব্লেন্ড করে নিন। এটা তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। যখন প্রয়োজন হবে তার সঙ্গে একটু ওটস গুঁড়া করে মিশিয়ে মুখে আস্তে আস্তে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো ধরনের দাগ দূর করতে এই স্ক্র্যাবার খুবই কার্যকর।

ত্বকে ব্যবহারের পাশাপাশি ডাবের পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। যাঁরা ডায়েট করতে চান তাঁদের জন্য ডাব অনেক উপকারী। কারণ ডাবে রয়েছে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম। ডাবের পানি পানে অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগে না। মিষ্টি ডাবের পানি নিম্ন রক্তচাপে আক্রান্তদের জন্য খুবই ভালো। ডাবের পানি শরীরকে ভেতর থেকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে। 

পুষ্টিতে ভরা
ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী জানালেন ডাবের পানির নানা উপকারিতার কথা। ডাবের পানি প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন। শরীরের বাইরে থেকে ভেতরের পুষ্টিটা ঠিক রাখা জরুরি। ডাবের পানিতে আছে হাই পটাশিয়াম। সেটাও ত্বকের জন্য উপকারী। রোদে গেলে আমরা অনেক ঘামি, সে সময় ডাবের পানি খেলে ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স হয় আবার শরীর বিষমুক্তও (ডিটক্সিফিকেশন) হয়।

আমাদের শরীরের কোষে ভেতরে ও বাইরে দুই ধরনের মিনারেল থাকে। ভেতরে পটাশিয়াম ও বাইরে থাকে সোডিয়াম। সোডিয়ামের মাত্রা বাড়লে উচ্চ রক্তচাপ হয়। রক্তে সোডিয়ামের প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে পটাশিয়াম। ডাবের পানি পানে রক্তচাপের ভারসাম্য ঠিক থাকে। তবে অবশ্যই কচি ডাবের পানি পান করতে হবে। ডাব যত বড় হবে, চিনি ও ক্যালোরি তত বাড়তে থাকবে।

ডাবের পানি মাংসপেশি তৈরিতে কাজে আসে। ফলে পেশিতে টান (মাসল ক্র্যাম্প) পড়ে না। রোদে শরীরের তরলের ঘাটতি হয়, আর্দ্রতা হারায়। তাই এই সময় ডাব পান করা ভালো। আর ডাবের পানিতে মুখ ধুলে ত্বক তো ভালো থাকবেই।