ছোটখাটো ভ্রমণে সঙ্গে রাখুন

ভ্রমণে বেরোনোর সময় একটু খেয়াল করুন, জরুরি কিছু বাড়িতে ফেলে গেলেন না তো! মডেল: আনান ও ইয়ামিন, ছবি: সুমন ইউসুফ
ভ্রমণে বেরোনোর সময় একটু খেয়াল করুন, জরুরি কিছু বাড়িতে ফেলে গেলেন না তো! মডেল: আনান ও ইয়ামিন, ছবি: সুমন ইউসুফ

কোনো কোনো বাস, হোটেল বা রেস্তোরাঁয় লেখা থাকে, ‘কিছু ফেলে গেলেন কি?’

নিজ বাড়ির দেয়ালে এ কথা লিখে রাখার উপায় নেই। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোনোর পরই আমাদের মনে পড়ে, আহা, অমুক জিনিসটা তো আনা হয়নি, তমুক জিনিসটা ফেলে এলাম...

বেড়ানোর বেলায়ও একই ঘটনা। পরিবারের সবাই মিলে হয়তো এক দিনের একটা ভ্রমণ পরিকল্পনা করেছেন। বেরোনোর পর মনে পড়বে, পানির বোতল আনা হয়নি। রোদে ঘুরতে ঘুরতেই আপনি ছাতার অভাব বোধ করবেন। ফোনের স্ক্রিনে যখন ‘লো ব্যাটারি’ লেখা উঠবে, তখন মনে মনে বলবেন, ‘ধুত্তুরি, পাওয়ার ব্যাংকটা সঙ্গে আনলেও হতো!’

এক দিনের ভ্রমণে বেরোলে কী কী জিনিস সঙ্গে রাখা প্রয়োজন, সেটা স্মরণ করিয়ে দিতেই এই প্রতিবেদন। শীতে অনেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন, ছুটছেন শহরের আশপাশে। বাস, ট্রেন বা লঞ্চে চড়েও স্বল্পদৈর্ঘ্য ছুটি উপভোগ করছেন কেউ কেউ। সঙ্গে একটা ছোট ব্যাগ তো নিতেই হয়। কী কী থাকতে পারে সেই ব্যাগে?

ছোটখাটো ভ্রমণের সময় স্লিপিং মাস্ক, শুকনা খাবার সঙ্গে নিতে পারেন
ছোটখাটো ভ্রমণের সময় স্লিপিং মাস্ক, শুকনা খাবার সঙ্গে নিতে পারেন

‘কয়েকটা জিনিস আমার গাড়িতেই রাখা থাকে। পানির বোতল, নেক পিলো, ফোন চার্জার, টিস্যু। ঢাকার আশপাশে গেলে তবু একটা ছোট ব্যাগ নিই সঙ্গে। আমি আর আমার স্ত্রী, দুজনের দল। তাই খুব বেশি কিছু নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।’ বলছিলেন একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার কর্মকর্তা সাঈদ আহমেদ।

দলটা দুজনের হোক বা আরও বড়। সঙ্গে পানি নিতে ভুলবেন না। পথে দরকার হলে কিনে নেব—এই ভরসায় না থাকাই ভালো। ধরুন গাড়ির চালক আপনি নিজেই। দীর্ঘক্ষণ চলতে চলতে আপনার চোখে তন্দ্রা ভর করল। মুখে এক দফা পানির ঝাপটা না দিলেই নয়। তখন নিশ্চয়ই পানি কেনার জন্য অপেক্ষা করা ঠিক হবে না।

ঘরে যদি পাওয়ার ব্যাংক থাকে, সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। অনেক সময় এমন হয়, যাওয়ার পথে গান শুনে, ছবি তুলে, ভিডিও করে, আর ফেসবুকে বন্ধুদের জানান দিতে দিতেই ফোনের চার্জ শেষের পথে। জায়গামতো যখন পৌঁছেছেন, তখন দেখা গেল ফোনের কোণে লাল বাতি জ্বলতে শুরু করেছে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে কাউকে ফোন করার প্রয়োজন হতে পারে। তাই বাড়ি ফেরার আগ পর্যন্ত ফোনের চার্জ ধরে রাখার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।

যদি যাত্রাটা দীর্ঘ হয়, ভ্রমণ একটু আরামদায়ক করার জন্য নিতে পারেন নেক পিলো বা স্লিপিং মাস্ক। যাত্রাপথে ছোট্ট একটা ঘুম হলে ক্ষতি কী? দু–একটা প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকতে পারে ব্যাগে। টিস্যু, তোয়ালে বা একটা গামছা সঙ্গে থাকলেও কাজে লাগতে পারে। আর অবশ্যই নিতে হবে শুকনা খাবার। পেটে যদি ছুঁচো দেয় বুকডন, আড্ডায় কি আর ভরবে মন! খাবারের প্রসঙ্গ যখন এল, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার দিকটিও বলে রাখা ভালো। ব্যাগের ভেতর ছোট একটা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতল রাখুন, খাওয়ার আগে দুহাত জীবাণুমুক্ত করে নিতে পারবেন।

মৌসুম বুঝে কিছু জিনিস সঙ্গে রাখা জরুরি। যেমন শীতের সময় পেট্রোলিয়াম জেলি বা লোশন। গরমে সানগ্লাস বা বর্ষায় ছাতা। ধুলো থেকে বাঁচতে নিতে হবে মাস্ক। এত কিছু নেওয়ার পরও যদি দেখা যায় একটা না একটা কিছু ফেলে গেছেন, তাহলে ‘মারফিস ল’ থেকে সান্ত্বনা খুঁজতে পারেন। মার্কিন উড়োযান প্রকৌশলী এডওয়ার্ড মারফি বলেছিলেন, ‘অ্যানিথিং দ্যাট ক্যান গো রং উইল গো রং।’ অর্থাৎ যেটা ভুল হতে পারে, সেটা ভুল হবেই। দেখা যাবে যে জিনিসটা আমার প্রয়োজন পড়বে, সেটাই আপনি ফেলে গেছেন। কী আর করা!