ডিজেলে চলা ব্যক্তিগত গাড়ি

ডিজেলচালিত গাড়িতে খরচ কমে আসে
ডিজেলচালিত গাড়িতে খরচ কমে আসে

ডিজেল, পেট্রল ও অকটেন—এই তিন ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি গাড়িতে সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কার্বন চেইন বা পরমাণু সংখ্যার ওপর জ্বালানি থেকে উৎপন্ন হওয়া শক্তির মাত্রা নির্ভর করে। ডিজেলে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা বেশি থাকে। ডিজেল ইঞ্জিনের জ্বালানি পোড়ানোর ক্ষমতা বেশি বলে এর শক্তি উৎপাদনক্ষমতাও অন্যান্য ইঞ্জিনের চেয়ে বেশি। বাণিজ্যিক গাড়িগুলোয় ডিজেল ইঞ্জিন ব্যবহার হলেও ভারতীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটার রয়েছে ডিজেলচালিত ব্যক্তিগত গাড়ি। গাড়িটির মডেল টাটা ইন্ডিগো ইসিএস। 

পেট্রল বা অকটেনের তুলনায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটারে ২০ থেকে ২৫ টাকা কম। ডিজেলচালিত ইন্ডিগো ইসিএস তাই জ্বালানিসাশ্রয়ী। প্রতি লিটার ডিজেলে গাড়িটি ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে। মধ্যম ঘরানার এই গাড়িটি সর্বোচ্চ অর্শ্বশক্তি ৪৫০০ আরপিএমে ৬৯.০১ এইচপি এবং ২৫০০ আরপিএমে ১৩৫ নিউটন মিটার (এনএম) শক্তি উৎপাদনে সক্ষম। 

টার্বোচার্জড ডিজেলসমৃদ্ধ ইন্টারকুলার টিডিআই বিএসথ্রি-এলএক্স ইঞ্জিন রয়েছে এই গাড়িতে। এটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫৪ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলতে পারে। ১৬৫ মিলিমিটার গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকায় যেকোনো বন্ধুর রাস্তা অনায়াসে পাড়ি দিতে সক্ষম ইন্ডিগো ইসিএস। গাড়িটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে ৩৯৮৮, ১৬২০ ও ১৫৪০ মিলিমিটার। দেশের অটোমোবাইল বাজারে টাটার ইন্ডিগো ইসিএস ছাড়া ১৫০০ সিসির নিচে ডিজেল ইঞ্জিনের নতুন (ব্র্যান্ড নিউ) গাড়ির দেখা মেলে না। 

ডিজেলচালিত গাড়িতে খরচ কমে আসে
ডিজেলচালিত গাড়িতে খরচ কমে আসে

দেখতে ছোটখাটো হলেও গাড়িটির পেছনে ৩৮০ লিটারের বুট স্পেস রয়েছে। গাড়িটিতে ৪২ লিটারের ফুয়েল ট্যাংক রয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, পাওয়ার স্টিয়ারিং, ডুয়েল টোন ইন্টেরিয়র, সেন্ট্রাল লক, পার্কিং সেন্সর এবং ৪টি স্পিকার ও ২টি টুইটার রয়েছে ইন্ডিগো ইসিএসে। দেশে স্বয়ংক্রিয় গিয়ারের গাড়ির আধিক্য থাকলেও এই গাড়িটি ম্যানুয়েল ট্রান্সমিশনসমৃদ্ধ। গাড়িটিতে ১৪ ইঞ্চি আকারের টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। পাঁচ আসনের ইন্ডিগো ইসিএসে কোনো মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে বা ব্যাক ক্যামেরা নেই। সামনের দুই চাকায় ডিস্ক ব্রেক থাকলেও পেছনের দুই চাকায় ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। 

ইন্ডিগো ইসিএস ভারতে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া টাটা গাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম। গাড়িটি সম্পর্কে টাটা মোটরস লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) সুমন্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘করপোরেট প্রতিষ্ঠানে আমাদের এই গাড়িটি বেশ জনপ্রিয়। যেসব অঞ্চলে এখনো সিএনজি স্টেশন হয়নি সেসব অঞ্চলেও জ্বালানি খরচ কমানোর জন্য ইন্ডিগো ইসিএসের চাহিদা রয়েছে। উবার দেশে আসার পরে প্রচুর গাড়ি আমরা বিক্রি করেছি। দেশে এখন হাজারের বেশি ইন্ডিগো ইসিএস গাড়ি চলছে।’ 

২০১৭ থেকে ইন্ডিগো ইসিএস ব্যবহার করছেন রিজেন্ট এয়ারওয়েজ কর্মকর্তা বি এম তাজীমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মূলত জার্মান গাড়ির প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। টাটা, জাগুয়ার ও ল্যান্ড রোভারের মতো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কিনে নিলে তাদের প্রতি আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। মূল্যসাশ্রয়ী ও পাওয়ার ড্রাইভের জন্য ডিজেল ইঞ্জিন বেশ উপযোগী।’ 

দেশের বাজারে টাটা গাড়ি বাজারজাত করছে নিটল মোটরস লিমিটেড। গাড়িটির মূল্য ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সাদা ও রুপালি রঙে গাড়িটি পাওয়া যাবে। কিস্তিতেও গাড়িটি কেনার সুবিধা মিলছে।