ভিটামিন সি ঘরেই আছে

>

প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে হয়। যেমন শিশুদের ৩০ থেকে ৩৫ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্কদের ৪৫ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী মায়েদের ৫৫ মিলিগ্রাম ও প্রসূতি মায়েদের ৭০ মিলিগ্রাম।

শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি-এর গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাই বলে ভিটামিন সি-এর চাহিদা মেটাতে দোকান থেকে কিনে খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি রাখলেই দৈনিক চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।

ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয়। তাই শরীরে সঞ্চিত থাকে না। এই ভিটামিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তাই প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে হয়। যেমন শিশুদের ৩০ থেকে ৩৫ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্কদের ৪৫ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী মায়েদের ৫৫ মিলিগ্রাম ও প্রসূতি মায়েদের ৭০ মিলিগ্রাম।

এবার জেনে নেওয়া যাক, কোন ফল ও শাকসবজিতে (প্রতি ১০০ গ্রামে) কী পরিমাণ ভিটামিন সি (মিলিগ্রাম) পাওয়া যাবে।

ফল: আমলকি (৪৬৩ মিলিগ্রাম), পেয়ারা (২২৮), করমচা (১৩৫), জাম্বুরা (১০৫), আমড়া (৯২), ডেউয়া (৬৬), কাগজি লেবু (৬৩), পাকা পেঁপে (৬২), কালোজাম (৬০), মাল্টা (৫৪), বরই (৫১), মুসাম্বি (৫০), লেবু (৪৭), পাকা আম (৪১), কমলা (৪০), জলপাই (৩৯), আতা (৩৮), পাকা তাল (৩৫), আনারস (৩৪), লিচু (৩১), বেদানা (২৬), বাঙ্গি (২৬), তরমুজ (২৪), জামরুল
(২২) ইত্যাদি।

শাক: শজনেপাতা (২২০ মিলিগ্রাম), নটেশাক (১৭৯), ধনেপাতা (১৩৫), ডাটাশাক (৮৩), গাজরপাতা (৭৯), করলাশাক (৭৮), বিটশাক (৭০), মুলাশাক (৬৯), পুঁইশাক (৬৪), কালো কচুশাক (৬৩), ছোলাশাক (৬১), শর্ষেশাক (৬০), বরবটিপাতা (৫৭), পাটশাক (৫৪), মেথিশাক (৫২), লাউশাক (৪৮), সবুজ কচুশাক (৪৮), হেলেঞ্চাশাক (৪৩), লালশাক (৪৩), বতুয়াশাক (৪১), মিষ্টিকুমড়াশাক (৩৭), কলমিশাক (৩০), পালংশাক (৩০) ইত্যাদি।

সবজি: কাঁচামরিচ (১২৫), উচ্ছে (৯৬), করলা (৯১), কাঁচা আম (৯০), ফুলকপি (৭৩), শজনে (৭০), ওলকপি (৫৩), ডাঁটা (৩৬), মিষ্টি আলু (৩৫), মুলা (৩৪), কাঁচা টমেটো (৩১), চালকুমড়া (৩১), পাকা টমেটো (২৭), পেঁয়াজকলি (২৭), মিষ্টিকুমড়া (২৬), শালগম (২৫), অড়হড় (২৫), ফরাসি শিম (২৪), কাঁচা কলা (২৩), কাঁচা পেঁপে (১৯), আলু (১৯), পটল (১৯), চিচিঙ্গা (১৯), ঢেঁড়স (১৮), মুলা (১৭), কলার মোচা (১৬), বাঁধাকপি (১৬), বিট (১৫), এঁচোড় (১৪), লাল শিম (১২), পুঁই ডাঁটা (১১) ইত্যাদি।

এ ছাড়া শুকনা মরিচ (৪৭), লেবুর খোসা (১২৯), পুদিনাপাতা (২২) ও থানকুনিপাতায়ও (২৪) ভিটামিন সি রয়েছে।

তবে শাকসবজি উচ্চতাপে দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করা যাবে না। ঢাকনা দেওয়া পাত্রে যথাসম্ভব অল্প পানি ব্যবহার করে দ্রুত রান্না করতে হবে। সর্বোচ্চ পরিমাণ ভিটামিন সি ধরে রাখতে ভাপে অথবা প্রেসার কুকারে রান্না করা উত্তম।

লেখক: পুষ্টিবিদ ও শিক্ষক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর