বলার আগে শুনতে হবে

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জনের জন্য যেসব দক্ষতা প্রয়োজন, তার মধ্যে যোগাযোগ দক্ষতা অন্যতম। কারিগরি ও বিশেষায়িত জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও অনেকে যোগাযোগ দক্ষতায় পারদর্শী না হওয়ায় ক্যারিয়ারে পিছিয়ে পড়েন। চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার এবং পরবর্তী সময়ে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগাযোগ সক্ষমতাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়। প্রকৃত সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তর করতে হলে দরকার যোগাযোগ দক্ষতা এবং এটিই তৈরি করে ব্যক্তির নিজস্ব ব্র্যান্ড। যোগাযোগ দক্ষতা অর্জনে নিচের কয়েকটি পদক্ষেপ বিবেচনা করা যেতে পারে:
প্রথম কয়েকটি মিনিট
যেকোনো যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রথম কয়েকটি মিনিট খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রথম কয়েক মিনিটের জন্য নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা দরকার। নিজের চালচলন ও মনোভাব সঠিক রাখার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তাদের ইচ্ছা ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি সম্মান প্রদান করা এবং সহানুভূতিশীল থাকা বাঞ্ছনীয়।
শুধু কথা বলা মানেই যোগাযোগ নয়
যখন কিছু বলার থাকে না, তখন অপ্রয়োজনীয় কথা না বলাই ভালো। কিছু বলার আগে নিজের চিন্তাগুলো সংগঠিত করুন। কীভাবে সেগুলোকে প্রকাশ করবেন, তা ঠিক করতে হবে।
শারীরিক ভাষার প্রতি সতর্ক থাকা দরকার
যোগাযোগের ক্ষেত্রে মৌখিক ভাষার পাশাপাশি শারীরিক ভাষার দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। খেয়াল রাখা দরকার যাতে বিষয়বস্তু সঙ্গে শারীরিক ভাষার সামঞ্জস্য থাকে। শারীরিক ভাষাকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে চোখ এবং মুখাবয়বের সঠিক ব্যবহার প্রয়োজন।

শোনার মানসিকতা...
শোনা হলো বক্তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের একটি সচেতন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে গ্রাহকের জন্য কী বার্তা আছে, তা সঠিকভাবে বুঝে নেওয়া সম্ভব। শোনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ব্যক্তি কী বলতে চাইছে, তার গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করতে হবে এবং সেটি কার্যকরভাবে মূল্যায়ন করতে হবে প্রয়োজনীয় সংলাপের সাহায্যে।

মূল বিষয়ে যথাযোগ্য দৃষ্টিপাত করা...
পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিবেচনায় অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সময় পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট সময়ের সদ্ব্যবহার করেই মূল কথা বলতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই প্রয়োজন বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভূমিকা দেওয়া। তারপর মূল বক্তব্যের ওপর আলোকপাত করতে হবে এবং পরিশেষে যা বলা হয়েছে তার একটি সারাংশ উপস্থাপন করতে হবে।

আরও কিছু সাধারণ টিপস...
যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিজের বক্তব্যকে সংক্ষিপ্ত ও সাবলীল রেখে যেকোনো ধরনের জটিলতা পরিহার করতে হবে। দ্বিমুখী আলোচনার মাধ্যমে যোগাযোগকে প্রাণবন্ত করে তোলা সম্ভব। তবে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক ব্যবহার অথবা নিষ্ক্রিয়তা পরিহার করতে হবে। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে এবং যেখানে প্রয়োজন, কথার মাঝে বিরতি দিতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী কণ্ঠস্বর দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং অন্যের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি সংবেদনশীল থাকতে হবে।
যোগাযোগ পারদর্শিতার মাধ্যমে একজন নির্বাহী তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দলের সদস্য এবং অন্যদের সঙ্গে নিবিড় ও কার্যকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সামর্থ্য হন, যা কিনা সফল ক্যারিয়ারের জন্য অপরিহার্য।
এম জুলফিকার হোসেন: প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুখ্য পরামর্শক, গ্রো এন এক্সেল