দুই দিনব্যাপী বিশেষ জাকাত মেলা শেষ

বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী রোগী কল্যাণে সমাজসেবায় বিশেষ জাকাত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। সমাজসেবা অধিদপ্তর, আগারগাঁও, ঢাকা, ১১ মে। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী রোগী কল্যাণে সমাজসেবায় বিশেষ জাকাত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। সমাজসেবা অধিদপ্তর, আগারগাঁও, ঢাকা, ১১ মে। ছবি: সংগৃহীত

সমাজসেবা অধিদপ্তরের আয়োজনে রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী বিশেষ জাকাত মেলা–২০১৯ শেষ হয়েছে। ১১ মে বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মধুমতি হলে রোগী কল্যাণে সমাজসেবায় বিশেষ জাকাত মেলার উদ্বোধন করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির। দুই দিনব্যাপী বিশেষ জাকাত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে দরিদ্র জনগণ উপকৃত হবে। জাকাতের অর্থ দিয়ে সমাজের একটি টার্গেট গ্রুপকে স্বাবলম্বী করা সম্ভব। আমাদের সবার উচিত অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়ানো।’

নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, সমাজের সামর্থ্যবান মানুষকে জাকাতের অর্থ প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিতদের কল্যাণে ব্যয়ে উৎসাহী করতে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলার মাধ্যমে পাওয়া জাকাতের অর্থ প্রতিবন্ধী, অসহায় ও দুস্থ রোগীদের সেবায় ব্যবহার করা হবে। এ মেলার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে জাকাত প্রদানের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। মন্ত্রী বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫২০টি সেবা জনগণ পেয়ে থাকে। আগামী বছরের মধ্যে ৬০০ ধরনের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশে কোনো মানুষ অসহায়ভাবে জীবন যাপন করবে না। সরকারের পাশাপাশি সামর্থ্যবানেরাও তাদের সাধ্যমতো অসহায় মানবতার পাশে দাঁড়াবে।

উদ্বোধনী দিনে গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির বলেন, অসহায় দুস্থ ও দরিদ্র রোগীর কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়। কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে গঠন করা হয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতি। ১৯৫৮ সালে এ সমিতির পরিক্রমা শুরু হয়ে ঢাকা মহানগরীসহ জেলা পর্যায়ে ১০১টি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪১৯টিসহ মোট ৫২০টি ইউনিট এ কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত হচ্ছে। শুধু মহানগরে নয়, সারা দেশে জেলা-উপজেলায় জাকাত মেলা ছড়িয়ে দিতে হবে।

মেলায় মোট ২৮টি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ ইউনিট অংশগ্রহণ করে। মেলায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আনুমানিক এক কোটি টাকা জাকাতের অর্থ প্রদান করে। পরে মন্ত্রী দুটি ক্যাটাগরিতে ছয়টি হাসপাতাল ও সেবাদান প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।

জাকাত মেলায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান অনুদান সংগ্রহ করেছে। এগুলো হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল, কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, মাতৃসদন ও শিশু সদন হাসপাতাল, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শিশু–মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল উল্লেখযোগ্য।