অহন খুব কষ্টে আছি

কমল দাস। ছবি: লেখক
কমল দাস। ছবি: লেখক

‘ফত্যেকদিন বাজারে মাছ লইয়া বইয়া থাহি। করোনার লাইগা আগের মতো কাস্টমার আসে না। ২০ বছর ধইরা মাছ বেইচ্চা সংসার চালাই। এমুন কষ্টে কোনো দিন ফোড়ছি না। জানি না ভগবান কফালে কী রাখছে?’

কথাগুলো বলছিলেন কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ঠাকুরহাটি গ্রামের জেলে কমল দাস।

করোনাভাইরাসের প্রভাবে পুরো দেশ এখন থমকে আছে। প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত আর মৃত মানুষের সংখ্যা। শুধু কমল দাসই না, এ মহামারি ভাইরাস কালো থাবা বসিয়েছে হাওর অঞ্চলের সব খেটে খাওয়া মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই যাঁরা বেরিয়ে পড়তেন কাজের সন্ধানে, তাঁরাই আজ অলস সময় পার করছেন। কেউ আবার জীবিকার তাগিদে পাল্টে ফেলছেন পেশা।

ঘাটে বাঁধা নৌকা। ছবি: লেখক
ঘাটে বাঁধা নৌকা। ছবি: লেখক

কিশোরগঞ্জের নিকলী, ইটনা, মিঠামইন উপজেলার মানুষ হাওরের ওপর নির্ভরশীল। এখানকার সিংহভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। করোনার কারণে বিপাকে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। সরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হলেও কোনো সাহায্যই পাচ্ছেন না তাঁরা।

তবে করোনার কারণে সবাই আতঙ্কে থাকলেও এখানকার জনসাধারণের মধ্যে দেখা যায়নি সচেতনতা। হাতে গোনা কয়েকজন মাস্ক ব্যবহার করলেও কেউ মানছেন না শারীরিক দূরত্ব।

প্রতিদিনই এ হাওর অঞ্চল পরিদর্শন করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমাত দর্শনার্থীরা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিও তেমন নেই।

কবে এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, জানে না কেউ।
*লেখক: সহসভাপতি, প্রথম আলো কিশোরগঞ্জ বন্ধুসভা