কানাডার মূলধারার গণমাধ্যমে বাংলাদেশিরা

বাংলাদেশি যতিকা হোসেন, স্বামী দ্রাবির খান ও তাদের দুই শিশু সন্তানের হাস্যোজ্জ্বল ছবিসহ একটি প্রতিবেদন ছাপিয়েছে জনপ্রিয় টরন্টো স্টার। গত ১৫ নভেম্বর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল টরন্টো চাইল্ড পোভার্টি। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে টরন্টোর প্রতি চারজনের মধ্যে একজন শিশু দারিদ্র্যসীমায় বাস করে। এই টরন্টো স্টারই গত বছর ২৬ অক্টোবর আরেক বাংলাদেশি নাদিরা বেগমকে নিয়ে রিপোর্ট করেছিল। বলা হয় নাদিরার সোশ্যাল ওয়ার্কে মাস্টার্স আছে। অথচ তিনটা পার্ট টাইম কাজ করতে হয় গ্রোসারি স্টোরে। 

স্ট্যাটিস্টিক্স কানাডার হিসাব মতে ২০০১ সাল থেকে ২০১১ এ দশ বছরে কানাডায় বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টের সংখ্যা বাড়ার হার ১১০ %। ২০১১ সালে যা সংখ্যায় ছিল ৪৫,৩২৫ জন। কানাডায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বর্তমানে এক লাখ বাংলাদেশি কানাডায় বাস করছে। কানাডায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইটি, বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, ব্যাংকার, সরকারি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদসহ প্রায় সকল সম্মানজনক পেশায় বর্তমানে অধিষ্ঠিত আছে। কানাডার সমাজ ও অর্থনীতিতে বাংলাদেশিদের অবদান দিন-দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু এসব খবর কানাডার মূলধারার গণমাধ্যমে বলতে গেলে একেবারেই অনুপস্থিত।
কানাডার জাতীয় পত্রিকা গ্লোব অ্যান্ড মেইল গত ২০ অক্টোবর বাংলাদেশি ড. হুমায়ুন কবিরের ছবিসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয় হুমায়ুন বাংলাদেশ এবং জাপানে শিক্ষকতা করলেও এখানে এসে উবার চালাতেন। পরে তিনি জর্জ ব্রাউন কলেজ থেকে একটি কোর্স করার পর হাম্বার কলেজে শিক্ষকতার একটি চাকরি পান।
কানাডায় বাঙালিদের অবস্থান শীর্ষক দিনব্যাপী একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় পয়লা ডিসেম্বর ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে। রায়ারসন ইউনিভার্সিটির সুতমা ঘোষ আর ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মার্শিয়া আকবর এর আয়োজন করে। ‘দ্য বেঙ্গলি ডায়াসপোরা ইন কানাডা: কারেন্ট ট্রেন্ডস্ অ্যান্ড ফিউচার পাথওয়েস’ শীর্ষক এই কর্মশালায় বলা হয়, কানাডার মূলধারার গণমাধ্যমে বাঙালিদের খবর একেবারেই অনুপস্থিত। গত এক দশকে বাঙালিদের নিয়ে প্রকাশিত খবরের সংখ্যা মাত্র ৭৭ টি। তাও বেশির ভাগ খবরই নেতিবাচক।
তবে মূল ধারার সংবাদপত্রে কিছু কিছু ইতিবাচক সংবাদ যে একেবারেই প্রকাশিত হয়নি তা নয়। বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী সৈয়দ ইকবালকে নিয়ে টরন্টো স্টারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল। বাংলাদেশ অন ডেনফোর্থ শিরোনামে টরন্টো স্টার আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। সিবিসি টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমে বাংলাদেশিদের নিয়ে মাঝে মধ্যে দু’একটা খবর চোখে পড়ে।

লেখক: বেঙ্গলি ইফরমেশন অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস এর নির্বাহী পরিচালক