জুলিয়ানিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে চেয়েছিলেন ট্রাম্প

রুডি গিলিয়ানি
রুডি গিলিয়ানি

দীর্ঘদিনের বন্ধু রুডি জুলিয়ানিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জুলিয়ানিকে নিদেনপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে মনোনয়ন দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হোয়াইট হাউসে নিজের ঘনিষ্ঠজনদের বিরোধিতায় এই সিদ্ধান্ত বদল করতে হয় তাঁকে। বহু বিতর্কের জন্ম দেওয়া সদ্য প্রকাশিত বই ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস–এ অন্তত এই দাবিই করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রথম কয়েক মাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে বইটির লেখক মাইকেল উলফ লেখেন, ‘জুলিয়ানিকে ধারণ করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের পক্ষে যখন গুটিকয়েক রিপাবলিকান ছিলেন, যাঁদের কেউই জাতীয় পর্যায়ের কোনো নেতা ছিলেন না, তখন এই জুলিয়ানিই ছিলেন একমাত্র। (ট্রাম্পের পক্ষে) তাঁর অবস্থান ছিল দৃঢ়, সোচ্চার ও নির্মোহ।’
উলফ জানান, সাবেক মেয়র জুলিয়ানির নজর ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে। আর ট্রাম্প তাঁকে আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাদ সাধে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের বিরোধিতা। এই বিরোধিতার মূলে ছিল জুলিয়ানির প্রতি ট্রাম্পের অনুরাগ। উলফ লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে জুলিয়ানি বিরোধিতা আর ট্রাম্পের তাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করতে চাওয়াটা একই কারণ থেকে উদ্ভূত। (আর তা হচ্ছে) ট্রাম্পের ওপর জুলিয়ানির প্রভাব ও তা না কমার সম্ভাবনা। একই সঙ্গে জুলিয়ানির স্বাস্থ্য ও স্থিতিশীলতা নিয়েও (হোয়াইট হাউস) কর্মকর্তাদের মধ্যে সংশয় ছিল।’
উলফ জানান, ২০১৬ সালে বিচারক আন্তোনিন স্ক্যালিয়ার মৃত্যুতে উচ্চ আদালতে সৃষ্ট শূন্য পদে জুলিয়ানিকে মনোনীত করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু জুলিয়ানির জন্য এটিও জোগাতে ব্যর্থ হন ট্রাম্প। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রেক্স টিলারসন নিশ্চিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে জুলিয়ানির প্রবেশের দরজা প্রায় রুদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিল গোরসাচের মনোনয়ন বাতিলের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। এ–ও ছিল জুলিয়ানির জন্যই। আর অজুহাত ছিল বিচার বিভাগ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা মন্তব্যকে গোরসাচ ‘হতাশাজনক’ বলেছেন।
উলফ লিখছেন, ‘এক মুহূর্তের জন্য ট্রাম্প বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সে সময় গোরসাচের মনোনয়ন বাতিলের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি। নৈশভোজের পর উপস্থিতদের কাছে তিনি জুলিয়ানির প্রশংসা করেন। এ–ও বলেন, এই লোকটিই (জুলিয়ানি) একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু সে সময় হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিবাস ও শীর্ষ কুশলী স্টিভ ব্যানন ট্রাম্পকে স্মরণ করিয়ে দেন যে প্রশাসনের অন্য অংশটিকে সন্তুষ্ট করতে হলে এই পদে তাঁদের দেওয়া তালিকা থেকেই কাউকে মনোনয়ন দিতে হবে। এই বিষয়ে প্রতিশ্রুতিও রয়েছে তাঁদের। বলার অপেক্ষা রাখে না যে ওই তালিকায় জুলিয়ানি ছিলেন না। ছিলেন গোরসাচ।’