নিউইয়র্কের পাতালপথে ফাটল মেরামত শুরু

স্যাঁতসেঁতে অবস্থার কারণে পাতালপথে দুর্গন্ধে নাক ঢাকছেন ওক যাত্রী
স্যাঁতসেঁতে অবস্থার কারণে পাতালপথে দুর্গন্ধে নাক ঢাকছেন ওক যাত্রী

প্রায় ২০ ফুট উঁচু মইয়ে ভর করে সম্প্রতি এক রাতে নিউইয়র্কের বাণিজ্যিক এলাকা ম্যানহাটনের একটি সাবওয়ে বা পাতালপথের স্যাঁতসেঁতে ছাদে ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করছিলেন একজন শ্রমিক। ছিদ্র করার কাজ শেষ হলে সেই পথে রাবারের নরম নল ঢুকিয়ে দিলেন শ্রমিকেরা। তারপর পাতালপথে কর্মরত শ্রমিকদের সংকেত পেয়ে পাতাল পথ থেকে পানি বাইরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল।
নিউইয়র্কের পাতালপথে এভাবে অসংখ্য ফাটল দিয়ে চুঁয়ে চুঁয়ে পানি পড়ছিল। পাতালপথে পানি জমায় ফাটল মেরামতের কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। দেরিতে হলেও নিউইয়র্কের পরিবহন কর্তৃপক্ষ (এমটিএ) এখন পাতালপথে পানি জমা বন্ধে আদাজল খেয়ে লেগেছে।
শীতের মধ্যে শুরু হয়েছিল বলে প্রথমদিকে শুধু তুষার পড়ত পাতালপথের এসব ফাটল দিয়ে। পরে এমনভাবে পানি পড়া শুরু হল যা বৃষ্টির পানিকেও হার মানাচ্ছিল। এতে যাত্রীদের কম ভোগান্তি হয়নি। রাস্তায় শুধু পানিই জমেনি, কাঁদা কাঁদা হয়ে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিউইয়র্কবাসীর পুরোনো গাড়ি পাতালপথের ভাঙা রাস্তায় চলতে গিয়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। কর্তৃপক্ষ যেন কুম্ভকর্ণের ভূমিকা নিয়েছে। এতে নগরবাসীর ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়।
এক শতাব্দী পুরোনো এসব পাতালপথের শিগগিরই সংস্কার প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়ে আসছিলেন। গত বছর নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো পাতালপথের যেকোনো জরুরি অবস্থার জন্য ৮০ কোটি ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই বাজেটই এখন নিউইয়র্কবাসীকে এই অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে কাজে লাগছে। তবে, সবার প্রশ্ন, কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে এত দেরি করল কেন? এটি কি পাতালপথের অব্যবস্থাপনার ধারাবাহিক ইতিহাসেরই উত্তরাধিকার বয়ে চলা? তাহলে আগের সরকারের সঙ্গে এই সরকারের পার্থক্য আর রইল কই-এসব প্রশ্নই এখন পাতালপথের জমাট পানিতে অবরুদ্ধ নগরবাসীর মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
এমটিএর অবকাঠামো ব্যবস্থাপক জেরার্ড জেমস নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘মনে করেন আপনি আগের দিন মাত্র একটা ফাটল মেরামত করে গেছেন, পরের দিনই ওখান থেকেই দেখবেন পানি পড়া শুরু হয়ে গেছে। শতাব্দী পুরোনো এই পুরো পাতালপথেরই এখন এই অবস্থা।’
এর আগে মাঝে মাঝে পানির পাইপ ছিদ্র হয়ে বা হারিকেনের মতো দুর্যোগে পাতাল পথে বন্যার মতো পানি জমার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু নিত্য পানি পড়ে এসব পথ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে—এমন ঘটনা এই প্রথম। বিশেষজ্ঞ সব মহলই এখন পাতালপথের অবকাঠামো মেরামতের দিকে জোর দিচ্ছেন।