নিউইয়র্কের ব্রংক্সে প্রবাসী বাঙালিদের নারী দিবস

‘বাংলা টাউনেই’ ব্রংক্স বাংলাদেশ উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ছবি: সংগৃহীত
‘বাংলা টাউনেই’ ব্রংক্স বাংলাদেশ উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কের পাঁচটি বড় বা উপশহরের একটি ব্রংক্স। এখানে বাঙালি অধ্যুষিত একটি অঞ্চলের নাম ‘বাংলা টাউন’। এই বাংলা টাউনেই পুরো একটি দেয়ালজুড়ে নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের স্মৃতিসৌধের চিত্রসংবলিত একটি ম্যুরাল। অভিবাসী বাঙালিদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচিত প্রতিনিধি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মরণে এই বাংলা টাউনেই নির্মিত হবে একটি শহীদ মিনার। 

শুক্রবার সেই ‘বাংলা টাউনেই’ ব্রংক্স বাংলাদেশ উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে উদযাপিত হলো আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। তিন প্রজন্মের অভিবাসী বাঙালি নারীদের অংশগ্রহণে ও পরিচালনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন শহরের বাঙালি কূটনীতিক, লেখক ও সাংবাদিক—যাদের অধিকাংশই পুরুষ। ‘নারী দিবসে নারীদের আয়োজিত অনুষ্ঠান, এখানে আপনাদের আগে আমাদের কথা শুনতে হবে, তারপরে শুনব আপনাদের কথা’—শুরুতেই সংগঠনের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন সবাইকে জানিয়ে দিলেন এ কথা।

মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন নিউইয়র্কে যার যার ক্ষেত্রে কৃতী বাঙালি নারীরা। এদের মধ্যে ছিলেন কূটনীতিক, সফল ব্যবসায়ী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রধান, নিউইয়র্ক শহরের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করছেন, এমন কয়েকজন তরুণীও উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকে শোনালেন নিজেদের সংগ্রাম ও সাফল্যের কথা। প্রত্যেকের সাফল্যের পেছনে ছিল পরিবারের নিকট কারও সমর্থনের হাত, কেউ পিতা বা মাতা, কখনোবা স্বামী। তাঁরা জানালেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে মেয়েদের যে লড়াই, পুরুষদের সমর্থনে সে লড়াইতে এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়েছে। কিন্তু যেখানে সহযোগিতা আসেনি, মেয়েদের সেখানে একাই লড়তে হয়েছে।
মেয়েদের কথা শেষ হলে মঞ্চে ডাকা হলো অতিথি পুরুষদের। তাঁদের মধ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ও নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান। তাঁরা সবিস্তারে জানালেন কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মেয়েরা কি অবিশ্বাস্য সাফল্য অর্জন করে চলেছে। যেমন: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে এই প্রথমবাররে মতো দুজন নারী বৈমানিক অংশগ্রহণ করেছে। তাঁরা উভয়েই বাংলাদেশের। নারী পুলিশ সদস্যরা এখন শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দিয়েছেন, সেখানেও বাংলাদেশ নারীরা অগ্রদূতের ভূমিকা নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে যথারীতি ছিল সংগীত ও নৃত্য। আর ছিল নারী দিবস উপলক্ষে চমৎকার নৈশ ভোজ। পুরো হলভর্তি মানুষ প্রায় মধ্যরাত অবধি অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে।