রেলগাড়ি চুরির গল্প

নিরাপত্তা হেফাজতে ক্যারন (মাঝে)
নিরাপত্তা হেফাজতে ক্যারন (মাঝে)

‘পুকুর চুরি’ কথাটি আমরা সবাই শুনেছি। কিন্তু রেলগাড়ি চুরি? তাও পুকুর চুরির মতো রূপক অর্থে নয়, একদম সত্যি, আক্ষরিক অর্থে চুরি। হ্যাঁ, সেটা ঘটেছিল, এই আধুনিক যুগে ও আমাদের বাড়ির কাছে এই নিউইয়র্কেই। 

জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল লাউঞ্জের ভেতর দিয়ে লম্বা পা ফেলে প্রায় উড়তে উড়তে এগোচ্ছিল ক্যারন। ত্রিনিদাদ ও টোবাগো থেকে মায়ামি হয়ে তাঁর তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে নিউইয়র্কে নেমেছেন জ্যাকি ঘণ্টাখানেক আগে। জন্মভূমিতে বসবাসের পাট চুকিয়ে আমেরিকায় শুরু হতে যাচ্ছে তার অভিবাসন। একটা চাকরি জোগাড় করে এই দেশে থিতু হওয়ার আগে তাঁর বড় ভাই ড্যারেনের বাড়িতে হবে সাময়িক আশ্রয়। আগে থেকেই কথা হয়ে আছে, গাড়ি নিয়ে সে থাকবে অ্যারাইভাল লাউঞ্জের বাইরে। ক্যারনের পিছু পিছু বাকি দুটিকে সামলাতে সামলাতে বাইরে এসে ডানে বায়ে দুই তিনবার চাইতেই জ্যাকি দেখতে পেলেন, রংচটা একটা পুরোনো গাড়িতে হেলান দিয়ে হাত দশেক দূরে দাঁড়িয়ে আছেন ড্যারেন। দরজার দিকে তাকিয়ে তিনিও হয়তো তাঁদের খুঁজছিল। তার অলস দৃষ্টি ঘুরে ঘুরে এসে জ্যাকিদের ওপর পড়তে তাঁর উদ্বিগ্ন মুখে একটু স্বস্তির হাসি ফুটে ওঠে। ফিরতি হাসিটা জ্যাকির ঠোঁটে কিন্তু ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। ক্যারন ছোড়াটা গেল কোথায়? ওদিক থেকে হাত নাড়তে নাড়তে ড্যারেনও ছুটে কাছে এল। সপাং সপাং করে দু গালে দুটো চুমো দিয়ে বলে, ‘ওয়েলকাম সিস, পিচ্চিরা, তোরা কেমন আছিস? ক্যারন কোথায়?’

‘ওই শয়তানটাকেই তো খুঁজছি। আমার সামনে দিয়ে ছুটতে ছুটতে বেরিয়ে তারপর কোনদিকে যে গেল?’ কথাটা পুরোপুরি শেষ করার আগেই ক্যারনকে দেখতে পেল জ্যাকি। বারান্দার কানা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে, ওপর দিক দিয়ে চোখ তুলে হা করে কী যেন দেখছে।

‘ক্যারন, এই ক্যারন!’ ক্যারন মনে হলো শুনতে পাচ্ছে না। ড্যারেন বলল, ‘গাড়ি খোলা। তুই বাচ্চা দুটো নিয়ে ভেতরে গিয়ে বস। আমি ওটাকে নিয়ে আসছি। ট্রলিটাও থাক, আমি আনছি।‘ মোটাসোটা জ্যাকি জার্নির ধকলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। ড্যারেনের কথায় যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। ড্যারেনের দিকে একটা কৃতজ্ঞ চাউনি দিয়ে সে গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল। ড্যারেন গিয়ে ক্যারনের কাঁধে হাত রাখতেই সে চমকে উঠল। ‘কে?’ 

ড্যারেন জন্মভূমি পোর্ট অফ স্পেনে প্রতি বছর একবার বেড়াতে যান। ক্যারনের কাছে এই মামাটি খুবই পরিচিত। অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেয় বলে সে মামার একটু ন্যাওটাও। ‘মা-ম-মা’ বলে ও বিশাল একটা লাফ দিয়ে মামাকে জড়িয়ে ধরে।

‘কী দেখছিস অমন হা করে?’

ক্যারন হাত তুলে সামনের ভবনের ছাদের ওপরে দেখায়। ‘ওটা কী?’

‘কোথায়?’ ঠিক বুঝতে পারে না তার মামা।

‘ওই যে, ওই ভবনের ওপরে দেখ।‘ ড্যারেন এবার দেখতে পায়। জেএফকে এক্সপ্রেস। এয়ারপোর্ট থেকে শহরে যাওয়ার ট্রেন।

‘ওহ ওটা। ওটা তো রেলগাড়ি; ট্রেন।’

‘ট্রেন, আমি ঠিকই ধরেছি।‘ মনে মনে যেমন ভেবেছিলাম, ট্রেন জিনিসটা তো ঠিক তেমনই। মামা আমি ট্রেনে চড়ব।‘

‘শুধু চড়বি না, চাইলে কোনো একদিন চালাতেও পারবি। তবে এখন না। এখন গাড়িতে করে মামাবাড়ি যাবি। ট্রেনে চড়বি কাল।’ ওর হাত পাকড়ে মামা গাড়ির দিকে হাঁটা দিল। অনিচ্ছুক ক্যারন বারবার ঘুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটি দেখতে লাগলে।

ত্রিনিদাদ ও টোবাগো দুইটি দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি দেশ। আকারে ছোট আর জনসংখ্যা কম বলে গণপরিবহন বলতে ওদেশে কিছু নেই। ক্যারন এত দিন শুধু ট্রেনের গল্প শুনেছে, বইপত্রে ছবিও দেখেছে। সামনা-সামনি ট্রেন দেখা আজই প্রথম। তার ১২ বছর বয়সে এর চেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা আর নেই। ‘আচ্ছা মামা, গাড়িতে যেতে যেতে কী আমরা আরও ট্রেন দেখতে পারব?’

‘না রে।’

ব্রুকলিনে মামার বাড়ি যে জায়গায় নিউইয়র্ক ট্রানজিট মিউজিয়াম তার থেকে খুব একটা দূরে নয়। বিমানবন্দর থেকে বাড়ির দিকে যেতে যেতে ড্যারেন পাশ ঘেঁষে গাড়ি চালিয়ে গেল। ‘ক্যারন, এই যে ভবনের ভেতরে কিন্তু অনেক ট্রেন আছে, কাল যাবি ওখানে আমার সঙ্গে।’

‘কাল কেন মামা, এখনই নিয়ে চল।’

মামা বলল, ‘না, ভ্রমণে অনেক ধকল গেছে; তা ছাড়া তোদের নামিয়ে আমাকেও কাজে ছুটতে হবে, কাল।’

ক্যারনের দিকে চোখ পাকিয়ে বিরক্ত জ্যাকি বলল, ‘চুপ!’ 

সন্তানদের নিয়ে জ্যাকুলিন যেদিন নিউইয়র্কে এসে নামল, সেটা ছিল ১৯৮৯ সাল। প্রথম দুই মাস ভাইয়ের বাসায়। ড্যারেন ম্যানহাটনের একটি হোটেলের বেলম্যান, সেখানে সপ্তাহ না ঘুরতেই জ্যাকি হাউসকিপিংয়ে চাকরি পেয়ে গেল। তারপর, বাচ্চাদের নিয়ে আলাদা ভাড়া বাড়িতে ওঠা, স্কুলে ভর্তি করা, বাসা গোছানো, কী করে এত কাজ একহাতে সামলালো আজ সাড়ে তিন বছর পর মনেই করাই দুরূহ। জোর ক্যারিবীয় স্বর ভঙ্গি থাকা সত্ত্বেও ইংরেজিটা মাতৃভাষা হওয়ায় আমেরিকার সমাজে মিশে যেতে ওদের তেমন বেগ পেতে হয়নি। জ্যাকির কথায়, ক্যারিবীয় উচ্চারণভঙ্গি রয়ে গেলেও কিন্তু বাচ্চাগুলো স্কুল শুরুর তিন মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ আমেরিকান উচ্চারণে কথা বলা আয়ত্ত করে ফেলেছে।

ছেলেবেলা থেকেই ক্যারন বড়সড়। গেল তিন বছরে মাথায় আর শরীরে আরও বেড়েছে। দুশ পাউন্ড ওজন আর ছয় ফুটের ওপর ছেলেটিকে দেখলে তাই অনেকে বয়স বুঝতে পারে না। মাত্র ষোলোতে পড়েছে, ব্রুকলিনের অটোমোটিভ স্কুলে একাদশ শ্রেণির ছাত্র। আকৃতির কারণে ফুটবল কোচ প্রথম থেকেই ওর পেছনে লেগেছিল, লাইনব্যাকার হিসেবে যদি ওকে খেলানো যায়। স্কুলের ফুটবল দলে সুযোগ পাওয়া বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু ক্যারনের কোনো উৎসাহ নেই। তার উৎসাহ যেখানে শুরু হয়েছিল সেখানেই আটকে আছে; ট্রেনে। সামারের ছুটিতে স্কুল বন্ধ, সমবয়সীরা বাইরে হই চই আর খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত; ক্যারন ঘরের ভেতরে কাচের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে। হাতে লম্বা একটি কাঠের টুকরা, পাশে একটা স্ট্যাপলার। একটি জয়স্টিক আরেকটি ব্রেক। ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কল্পিত ট্রেন চালায়, যাত্রীদের জন্য ঘোষণা করে, ‘সামনে লাফার্ট বুলেভার্ড, দেখেশুনে নামবেন, দরজা ব্লক করবেন না।‘

ক্যারনের এই ছেলেমানুষি দেখে বোনগুলো হেসে লুটোপুটি খায়। স্কুলের মাসগুলোতে ক্লাসের বাইরে ওর সারাটা সময় কাটে এই ট্রেন নিয়েই। বাড়ির একপাশে ট্রেন ইয়ার্ড, অন্য পাশে রেলের জাদুঘর। প্রতিদিন সেসব জায়গায় অন্তত একবার করে সে ঢুঁ মারে। বারবার দেখেও আঁশ মেটে না। স্কুল-বাসা হাঁটা পথ, উল্টো পথে গিয়ে স্কুলের পর প্রায় প্রতিদিনই একটা ট্রেনে চেপে বসে। ট্রেনের একদম সামনে দাঁড়িয়ে দরজার কাচে চোখ আর কান লাগিয়ে দেখে কীভাবে চালক ট্রেন চালায়, কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে কী কথা বলে, এসব করে রোজই ছুটির প্রায় তিন সাড়ে-তিন ঘণ্টা পর বাড়ি ফেরে। মাকে বলে, ‘লাইব্রেরিতে পড়ছিলাম মা।‘

কিন্তু শুধু দেখে আর চড়ে তো ক্যারনের মন ভরে না। ও চায় ট্রেন চালাতে। একদিন স্কুল-কাউন্সেলরকে গিয়ে বলে, ‘আমি আর পড়ব না।’

‘কেন কী করবে তুমি?’

‘ট্রেন চালাব!’

কাউন্সিলর তার পেশাগত দক্ষতায় মুচকি হাসিটা ভেতরে চেপে রেখে ভাবেন, ‘এ দেখি এখনো বাচ্চা রয়ে গেছে।’ মুখে বলেন, ‘তুমি ইঞ্জিনিয়ার হতে চাও (ট্রেনের চালককে এসব দেশে ইঞ্জিনিয়ার বলে), খুব ভালো, কিন্তু তার জন্য তোমাকে তো পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষায় বসতে হবে...;’। কাউন্সিলরের মুখের কথা শেষ হওয়ার আগেই ক্যারন বলে, ‘সেটা আমি দিলেই পাশ করব। আমি গত দুবছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি, সম্ভাব্য পরীক্ষার প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর আমার জানা।’ কথাটা সত্যি, পড়ার বইয়ের বাইরে গত দুবছর ধরে মাত্র দুটি বই সে পড়েছে, ‘সাবওয়ের ট্রেন চালকের প্রস্তুতি’ আর ‘ট্রেন ড্রাইভার’স ম্যানুয়াল।‘

কাউন্সিলর ক্যারনকে বললেন, ‘শুধু তাতে হবে না, প্রথমত, তোমার বয়স হতে হবে আঠারো, হাই স্কুলও পাশ করতে হবে। এ দু দুটি ছাড়া ওরা পরীক্ষাতেই বসতে দেবে না।’

গুম হয়ে কিছুক্ষণ বসে থেকে ক্যারন গজগজ করতে করতে কাউন্সিলর অফিস থেকে বেরিয়ে যায়, ‘নট ফেয়ার অ্যাট অল, নট ফেয়ার...।’

ট্রেন চালাতেই হবে এবং এক্ষুনি, অপেক্ষা অসম্ভব। মাথায় একটা নতুন ফন্দি আটে। সেইমতে ট্রেন-ইয়ার্ডের ট্র্যাস ক্যান হাতড়ে একদিন ইউনিফর্মের একটি ব্যবহৃত সার্টও পেয়ে যায়। সেটা ঘরে এনে লন্ড্রি করে বাক্সে তুলে রাখে পরম যত্নে। ব্রেকের হাতল আর উল্টো দিকে চালানোর চাবি, এই দুটি জিনিস চালকদের নিজস্ব, এগুলো দরকার। তক্কে তক্কে ছিল, ইয়ার্ডে এক বেখেয়ালি চালকের অসাবধানতার সুযোগে একদিন ওগুলোও জোগাড় হয়ে যায়। একটি ভুয়া আইডিও তৈরি হয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটা এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।

৮ মে, ১৯৯৩, শনিবার। মাঝদুপুরে ক্যারন ডেসপ্যাচার ডেস্কে ফোন করে বলল, ‘আজ কী ওভারটাইম দিচ্ছ?’

‘বিলকুল, ঠিক তিনটায় ২০৭ স্ট্রিট ইয়ার্ডে চলে এসো।’

কুড়িয়ে আনা ইউনিফর্ম গায়ে দিয়ে যখন ডেসপ্যাচ ডেস্কের সামনে দাঁড়াল, টেবিলে বসা কেরানিটি ক্যারনের দিকে একটুও ভালো করে তাকাল না। যদি তাকাত তবে দেখত ক্যারনের বুকে আঁটা ব্যাজ বলছে, ওর বয়েস চুয়াল্লিশ বছর, উচ্চতা ৫ ফুট চার ইঞ্চি। অথচ সামনে যে দাঁড়িয়ে তার বয়স হবে মেরে-কেটে চব্বিশ, উচ্চতা ৬ ফুট ১ ইঞ্চি। আরও দেখত, সামনের মানুষটির পরনে একটি জিনস প্যান্ট, ইঞ্জিনিয়ারেরা সচরাচর যে নীল রঙের প্যান্টটি পরে, তা নয়।

‘নাম?’

‘রদ্রিগেজ সাবিও।‘

‘চার ঘণ্টার ওভারটাইম মঞ্জুর। এই ট্রেনটি নিয়ে তুমি ‘এ’ লাইনের লুপটা শেষ করে আসো।’

কোনোমতে একটা ধন্যবাদ দিয়ে ক্যারন আর দাঁড়ায় না। দুপুর ৩টা ৫৯ মিনিট থেকে সাতটা ২৯ মিনিটের ভেতর সেই দিন যদি নিউইয়র্কবাসী কোনো পাঠক ‘এ’ ট্রেনে চড়ে থাকেন, শতভাগ সম্ভাবনা ওই ট্রেনটি এই ক্যারন ছেলেটিই চালাচ্ছিল।

কোনো রকম অভিজ্ঞতা ছাড়া সেদিন সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে, ৪৫ মাইল পথ আর ৮৫টি স্টেশন ছুঁয়ে, ছয় শ ফুট লম্বা ট্রেন চালিয়ে দুই হাজারের বেশি যাত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছিল কিশোর ক্যারন; প্রায় কোনো অঘটন না ঘটিয়েই। প্রায় বললাম এ কারণে, এই রোমাঞ্চকর অভিযানের একদম শেষ প্রান্তে এসে ছোট্ট একটা ঘটনা ঘটে গেল, আর ক্যারন থমাস তাতে ধরা পড়ে গেল। শেষটির ঠিক আগেরটিতে, ট্রেন নিয়ে ১৬৮ স্ট্রিট স্টেশনে ঢোকার মুখে একটি বাঁক, সেখানে গতিবেগ ২০ মাইলে নামিয়ে আনতে হয়। অনভ্যস্ত হাতে একটুর জন্য ক্যারন সেটা মিস করে ফেলল। নিয়ম অনুযায়ী, এমটিএর পরিদর্শক এসে তাঁকে নিয়ে গেল ড্রাগ টেস্ট করাতে। এই পরিদর্শকও কিন্তু তখনো ধরতে পারেনি ক্যারন যে একজন ভুয়া চালক। সেই টেস্টে রক্তের গ্রুপ না মেলাতে ক্যারন ধরা পড়ে গেল। আমেরিকার সংবাদপদত্রে শিরোনাম হল, ‘দ্য গ্রেট ট্রেন রবারি।’

চারটি মারাত্মক অভিযোগের মুখোমুখি হয়েও বয়েস কম বলে ক্যারনকে জেলে যেতে হলো না। তিন বছরের প্রবেশনে বিচারক তার জেল মওকুফ করে দিলেন। বললেন, যদি এই তিন বছর সে ভালো হয়ে থাকে তবে তাকে একদিন সত্যিকার চালক হওয়ার সুযোগও দেওয়া হবে। এ ঘটনা তাকে রাতারাতি নিউইয়র্ক নগরের এক কিংবদন্তিতে পরিণত করে। হাইস্কুল থেকে বেরোনোর আগে পর্যন্ত সে সহপাঠীদের কাছে হিরো হয়ে ছিল।

ক্যারন শেষমেশ আর ট্রেনচালক হয়নি। বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে বৈষয়িক ভাবনা তার ছেলেবেলার শখটি ছাপিয়ে গেল। সাড়ে সাতাশ ডলার ঘণ্টার ট্রেন চালনার চেয়ে মনে হলো ইলেকট্রিশিয়ানের ৬০ ডলার ঘণ্টার পেশাটা জীবন ধারণের জন্য ভালো। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে

হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেটাই তার পেশা ছিল।