প্রযুক্তিশিক্ষায় ১ মিলিয়ন ডলার শিক্ষাবৃত্তির ঘোষণা

পিপল এন টেক ১ এপিল নিউইয়র্কের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১ মিলিয়ন ডলারের শিক্ষাবৃত্তি ঘোষণা করে। ছবি: প্রথম আলো
পিপল এন টেক ১ এপিল নিউইয়র্কের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১ মিলিয়ন ডলারের শিক্ষাবৃত্তি ঘোষণা করে। ছবি: প্রথম আলো

উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য একটি প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, এক মিলিয়ন ডলার শিক্ষাবৃত্তির ঘোষণা দিয়েছে। পিপল এন টেক নামের বাংলাদেশি মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের জন্য ২৫০ জন শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ বাবদ এই বৃত্তি প্রদান করবে। আগ্রহীদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এ উপলক্ষে এক এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির নিউইয়র্ক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

পিপলস এন টেকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আবু বকর হানিপ রোববার নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট, ফারহানা হানিপ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

ঘোষিত এই শিক্ষাবৃত্তির আওতায়, পিপল এন টেক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সফটওয়্যার টেস্টিং (ইউএফটি/মোবাইল অটোমেশন-এ ৫০ জন, সফটওয়্যার টেস্টিং-সেলেনিয়াম এ ৫০ জন, Software testing with DevOps (AWS, AZURE),-৫০ জন। ফ্রন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ৫০ জন (ঋৎড়হঃ ঊহফ উবাবষড়ঢ়সবহঃ (ঐঞগখ, ঈঝঝ, ঔধাধঝপৎরঢ়ঃ, অহমঁষধৎঔঝ) ৫০ জন এবং ডেটাবেজ এ্যাডমিনেস্ট্রেশনে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কর্মবাজারের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হবে । পিপল এন টেক এর নিয়মিত কোর্স ফি ৪ হাজার ডলার। তবে বৃত্তিপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এই ফি পুরোপুরি মওকুফ করা হবে বলে জানিয়েছেন আবুবকর হানিপ।

১৪ বছরে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি শ্রমবাজারে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর চাকরির ব্যবস্থা করেছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এদের অন্তত চার হাজার জনই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। প্রযুক্তি খাতে ভালো বেতনে চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েই এই বৃত্তি ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়, আগামী এক বছরের মধ্যে উপযুক্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এই সুবিধার আওতায় বিনা খরচে অথবা স্বল্প খরচে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণপূর্বক যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মূলধারার প্রযুক্তি কর্ম-বাজারে উচ্চ বেতনে কাজের সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ছয়টি ক্যাম্পাস ছাড়াও বাংলাদেশের ঢাকায় পিপল এন টেক-এর ২০ হাজার বর্গফুটের একটি নতুন ক্যাম্পাস খোলা হয়েছে। ঢাকার ক্যাম্পাস থেকেও শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। অনলাইনে সেখানেও আমেরিকার কোর্স কারিকুলাম শেখানো হচ্ছে একই পদ্ধতিতে। আগ্রহীরা সেখান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। প্রশিক্ষণ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ সাপেক্ষে, বছরে ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

আবু বকর হানিপ জানান, গত কয়েক বছরে পিপল এন টেক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি তরুন-তরুনীকে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার প্রযুক্তি খাতে উচ্চ বেতনের কাজ পাইয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় একটি ক্যাম্পাস চালু করেছে এবং সেখান থেকেও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানিতে আকর্ষণীয় বেতনে কাজের সুযোগ পেয়েছে। তিনি জানান, পিপল এন টেক নিয়মিতভাবেই মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে বৃত্তি দিয়ে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে আমেরিকান ও কানাডিয় প্রযুক্তি খাতের সুবিশাল কর্মবাজারে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অংকের বৃত্তি ঘোষণা করল। যথানিয়মে মেধা যাচাই পরীক্ষার ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে এই সুবিধা প্রদান করা হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা কানাডায় বসবাসকারী বাংলাদেশীরা তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশে অবস্থানরত উপযুক্ত প্রার্থীরাও নির্ধারিত নিয়মে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি বাংলাদেশ থেকেই পিপল এন টেক এর প্রশিক্ষণ নেন। পরে আমেরিকা এসে তিনি কর্মবাজারে প্রবেশ করেছেন। বছরে প্রায় ৮০ হাজার ডলার বেতনের চাকরি করছেন। জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু ভর্তি হলেই কেউ কাউকে চাকরির নিশ্চয়তা দেবে না, তবে কঠোর পরিশ্রম করলে, এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা নিয়ে যে জীবন বদলে দেয়া যায় সেটা আমি বিশ্বাস করতে শুরু করেছি।’

আগে থেকেই পিপল এন টেক এর বৃত্তি সুবিধা প্রচলিত ছিল কিন্তু এটা একক ভাবে নিদৃষ্ট সময়ের জন্য সবচে বড় স্কলারশিপ এর আয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী আবু বকর হানিপ বলেন, ‘আমাদের আসল উদ্দেশ্য-ই হলো বাংলাদেশি তরুনদের প্রযুক্তি শিক্ষা এবং দক্ষতায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। তারা যেন উত্তর আমেরিকার প্রযুক্তি বাজারে দখল নিতে পারে একদিন।’

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে আগ্রহীদের

www.piit.us অথবা [email protected] ওয়েব সাইট লিংক ভিজিট করতে বলা হয়েছ।