দেশে ফিরলেন তিন মার্কিন, কিমকে ধন্যবাদ জানালেন ট্রাম্প

কিম জং–উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এএফপির ফাইল ছবি
কিম জং–উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এএফপির ফাইল ছবি

এক বছরের বেশি সময় উত্তর কোরিয়ায় আটক থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন তিন মার্কিন নাগরিক। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের এন্ড্রুস বিমানঘাঁটিতে তাঁদের ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। উৎফুল্ল ট্রাম্প আটক মার্কিনদের সঙ্গে করমর্দনের পর তাঁদের মুক্তি দেওয়ায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকে ধন্যবাদ জানান।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা কিম জং-উনকে এই চমৎকার কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। বর্তমানে যে (শান্তি) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তার জন্যই আমরা এত দ্রুত এই তিনজনকে বের করে আনতে পেরেছি।’ ঘটনাটি যাতে সর্বোচ্চসংখ্যক টিভি দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, সে জন্য হোয়াইট হাউস চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেনি। এ জন্য প্রায় আড়াই শ সাংবাদিক ও টিভি ক্যামেরাম্যানকে এন্ড্রুসে উপস্থিত করা হয়। তাঁদের দিকে তাকিয়ে ট্রাম্প বলেন, ভোররাত তিনটায় এর আগে কখনো এত লোক টিভি দেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকেনি। এটি একটি নতুন রেকর্ড।

এন্ড্রুস বিমানঘাঁটিতে এমন সময়ে সস্ত্রীক ট্রাম্পের উপস্থিতি থেকে স্পষ্ট, ঘটনাটিকে তিনি রাজনৈতিকভাবে কতটা গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখছেন। আগামী মাসের কোনো একসময় সিঙ্গাপুর বা অন্য কোনো নিরপেক্ষ শহরে তিনি কিম জং-উনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসবেন। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, এই মুখোমুখি বৈঠকের ফলে যদি কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করা যায়, তাহলে সেটি হবে তাঁর সবচেয়ে গর্বিত অর্জন। শীর্ষ বৈঠকের আগে তিন মার্কিনকে মুক্তি একটি শুভ সূচনার সৃষ্টি করেছে। বৈঠকের ফলে ‘অর্থপূর্ণ কিছু একটা ঘটবে’।

এই দুই দেশের সম্পর্কের এত দ্রুত পরিবর্তনে সবাই বিস্মিত হয়েছেন। কয়েক সপ্তাহ আগেও যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া একে অপরের সঙ্গে পারমাণবিক সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরীয় নেতাকে ‘লিটল রকেটম্যান’ বলে পরিহাস করে বলেছিলেন, তাঁর টেবিলে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের বোতাম রয়েছে। কিমের যে পারমাণবিক বোতাম, এটি তাঁরটির চেয়ে বহুগুণে বড়। সেখান থেকে এক লাফে মুখোমুখি বৈঠকের ঘোষণা সবাইকে হতবাক করেছে।

এই বৈঠকে তিনি কী আশা করছেন, অথবা উত্তর কোরীয় নেতার সঙ্গে তিনি কী ব্যবহার করবেন; সে ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ ট্রাম্প। কোনো সুনির্দিষ্ট রণকৌশল তিনি অনুসরণ করবেন কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়। ট্রাম্প বারবার বলেছেন, আগে থেকে কিছু বলে দেওয়ার পক্ষে তিনি নন। একটি সূত্র থেকে বলা হয়েছে, পুরো ব্যাপারটাকে ধোঁয়াটে রাখতেই ট্রাম্প আগ্রহী। কারণ এই নাটকীয়তার কারণে টিভি রেটিং বাড়ে। ট্রাম্পের জন্য টিভি দর্শকের সংখ্যা অন্য সবকিছুর চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্প বলেছেন, ‘কেউ জানেন না আমি কী করতে যাচ্ছি। সবাই আমার প্রতিটি কথা ভেঙে দেখতে চাইছে আমি কী করব। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, আমি কী করব, সে কথা কেউ জানে না।’