অলস ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়াতে বাবা-মায়ের মামলা!

মাইকেল রোটোন্ডো। ছবি: রয়টার্স
মাইকেল রোটোন্ডো। ছবি: রয়টার্স

ছেলের বয়স প্রায় ৩০ বছর। এত বয়স হলো কিন্তু কাজকর্মের বালাই নেই। কাজ খোঁজার ইচ্ছেও নেই তাঁর। কাঁহাতক আর বসে বসে খাওয়ানো যায়! সন্তানকে বাড়িছাড়া করতে ১১০০ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন বাবা-মা। সঙ্গে কাজ খোঁজার পরামর্শ। কিন্তু তাতেও গা নেই ছেলের। শেষে অলস ছেলেকে বাড়িছাড়া করতে আদালতে মামলাই ঠুকে দিলেন বাবা-মা!

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্রিস্টিনা ও মার্ক রোটোন্ডোর ঘরে ঘটেছে এমন ঘটনা। তাঁদের ছেলের নাম মাইকেল রোটোন্ডো। ছেলের বিরুদ্ধে স্থানীয় ওনোনডাগা কাউন্টি সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন বাবা-মা। মামলা করার আগে বাড়ি ছাড়তে ছেলেকে পাঁচবার উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছেন ক্রিস্টিনা ও মার্ক। সেগুলোকে পাত্তা না দেওয়ায় এখন মামলার মুখোমুখি হয়েছেন মাইকেল।

ছেলেকে দেওয়া উচ্ছেদের নোটিশে বাবা-মা লিখেছেন, ‘আমরা ঠিক করেছি যে অনতিবিলম্বে তোমার বাড়ি ছাড়তে হবে। বাড়ি ছাড়ার জন্য তোমাকে ১৪ দিন সময় দিচ্ছি। তুমি আর ফিরে আসতে পারবে না।’

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ক্রিস্টিনা ও মার্কের পরিবারে এই নাটকের সূচনা হয়। ওই মাসেই ছেলেকে প্রথম উচ্ছেদের নোটিশ দেন বাবা-মা। চাকরি হারানোর পর থেকে আট বছর ধরে বাবা-মায়ের বাড়িতে রয়েছেন মাইকেল। প্রথম নোটিশটি পাননি বলে জানিয়েছিলেন মাইকেল। এর ১১ দিন পর আবার বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেন বাবা-মা। এভাবে মোট পাঁচটি নোটিশ দেওয়া হয়। তৃতীয় নোটিশে রোটোন্ডো দম্পতি বাড়ি ছাড়লে ছেলেকে ১১০০ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এর সঙ্গে ছিল বিনা মূল্যের পরামর্শ, ‘তোমার উপযুক্ত অনেক চাকরি আছে। একটি চাকরি নাও। তোমাকে কাজ করতে হবে।’

ক্রিস্টিনা ও মার্ক রোটোন্ডো। ছবি: রয়টার্স
ক্রিস্টিনা ও মার্ক রোটোন্ডো। ছবি: রয়টার্স

তবে এতবার বলার পরও বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি মাইকেল। বিরক্ত হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁর বাবা-মা। চলতি মাসের ৭ তারিখে মাইকেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তাঁর মা।

আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজেই আইনি লড়াই চালান মাইকেল। নিজে ব্যবসা করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মামলা চলার পুরোটা সময় বাবা-মা ও ছেলে একই বাড়িতে ছিলেন। মাইকেল বলেছেন, এই সময়টা বেশ ‘অদ্ভুত’ ছিল। মাইকেলের দাবি, বাবা-মা তাঁর প্রতি অন্যায় আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, কাউকে ধ্বংস করা ভালোবাসার নিদর্শন হতে পারে।’ আদালতে মাইকেল দাবি করেন, বাড়ি ছাড়ার জন্য বাবা-মা তাঁকে ছয় মাস সময় দিয়েছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার এ মামলায় রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে মাইকেল রোটোন্ডোকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিষয়ে মাইকেলের মন্তব্য হলো, ‘এই রায় আমার জন্য অন্যায্য এবং সত্যিই ভয়ানক।’