খাচ্ছে কারা সোনায় মোড়া ফ্রায়েড চিকেন?

খাবারকে সোনায় মুড়ে পরিবেশনের বিষয়টি বেশ আগে থেকেই হয়ে আসছে
খাবারকে সোনায় মুড়ে পরিবেশনের বিষয়টি বেশ আগে থেকেই হয়ে আসছে

টাকা থাকলে মানুষ কী না করে। উদরপূর্তির জন্য যে খাবার, তাও সোনায় মুড়ে খেতে পারে, শুধু অডেল টাকার উপস্থিতিতে। গালগপ্পো কিংবা রূপকথার কোনো গল্পের অবতারণা নয়। আমেরিকার এক রেস্টুরেন্ট সোনায় মোড়ানো ফ্রায়েড চিকেন বিক্রি শুরু করেছে। বিশ্বাস হচ্ছে না? নিউইয়র্কের এই রেস্টুরেন্ট ২৪-ক্যারেট সোনার ম্যারিনেড ডোবানো ভাজা মুরগি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০০ ডলার দামে।
এই ফ্রায়েড চিকেনের ধারণাটি এসেছে জনাথান চেবান, ওরফে ‘ফুডগড’-এর কাছ থেকে। এ নিয়ে তিনি ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করেছেন, যা ভাইরাল হয়েছে।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই সোনালি মুরগি ভাজার রেসিপি। এতে বলা হয়েছে, সোনালি মুরগি ভাজার শুরুতেই মুরগির টুকরোগুলো নোনা জলে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা হয়। পরে ঘরে তৈরি ড্রাই রাবে টুকরোগুলোকে ডুবো তেলে ভাজা হয়। এরপর মধু ও বারবিকিউ সসে তৈরি ম্যারিনেডে ডুবিয়ে আরেক দফা ভাজার আগে সোনার গুড়ো দিয়ে মুরগির টুকরোগুলোর ঢেকে ফেলা হয়। এরই মধ্যে বেশ সাড়া পড়েছে এই সোনায় মোড়ানো মুরগি ভাজা। জনাথন চেবানের রেস্তোরাঁয় ১০০০ ডলারের বিনিময়ে মিলবে ৫০ টুকরো মুরগি ভাজা। সঙ্গে থাকবে পপ স্টার জেযির লেবেল লাগানো এক বোতল সোনালি শ্যাম্পেন।
কেমন খেতে এই সোনালি মুরগি? ইউটিউবার কেসি নিস্টাটকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানায়, ‘ফ্রায়েড চিকেনের স্বাদে কিছুটা টক ভাব রয়েছে। আর রয়েছে একটা ধাতব স্বাদ।’
তবে এই সোনায় ভাজা মুরগি খাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই বলে জানিয়েছেন সহউপস্থাপক শন। তিনি বলেন, ‘চিকেন উইঙ্গস হচ্ছে সাধারণ মানুষের খাবার। তাই পুরো ধারণাটাই উদ্ভট লাগছে আমার কাছে।’
তবে খাবারকে সোনায় মুড়ে পরিবেশনের বিষয়টি কিন্তু এবারই প্রথম আসেনি। এর আগেও এমন উদ্ভট সব কাজ হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে সোনালি ডোনাটের কথা বলা যায়। ২০১৬ সালে ব্রুকলিনের উইলিয়ামস্‌বার্গ এলাকায় একটি ফিলিপিনো রেস্টুরেন্ট সোনার ডোনাট বিক্রি শুরু করেছিল। নাম ছিল ‘গোল্ডেন ক্রিস্টাল উবে ডোনাট’। এই ডোনাটের মধ্যে যে উবে মুস ঢোকানো হতো তা তৈরি হতো বেগুনি রঙের মিষ্টি আলু থেকে। আর দাম? এক ডজন স্বর্ণময় ডোনাটের দাম ধরা হয়েছিল ১ হাজার ২০০ ডলার।
রয়েছে সোনায় মোড়া আইসক্রিম। চলতি বছরের গোড়াতে একটি আমেরিকান আইসক্রিম কোম্পানি এমন এক আইসক্রিম বিক্রি শুরু করে, যা মোড়া থাকত ২৪-ক্যারেট নির্ভেজাল সোনার তবকে। ওই আইসক্রিমের দাম ধরা হয়েছিল ১৫ ডলার, ভাজা মুরগি কিংবা ডোনাটের তুলনায় যা একেবারে কম। ভারতীয় উপমহাদেশে বিলাসী পানে সোনা বা রুপার তৈরি পাতলা পাতা বা তবক ব্যবহারের চল রয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে দু হাজার ডলার দামের পিৎজার কথা। নিউইয়র্কেরই একটি রেস্টুরেন্ট এই পিৎজা বিক্রি শুরু করে, যার উপরে ২৪-ক্যারেট সোনার টপিংস ছড়ানো হয়েছিল। আর এর টপিংসের নিচে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, তা ছিল রাজকীয়। ব্রিটেন থেকে বিশেষভাবে আমদানি করা স্টিলটন চিজ, ফোয়া গ্রা ও ব্ল্যাক ট্রাফল। সে সময় এই রেস্টুরেন্টের মালিক ব্রলিও বনেই এক পত্রিকাকে বলেছিলেন, বিলাসিতার চূড়ান্ত বলে মনে হলেও পিৎজা বলেই লোকে খাবারটি পছন্দ করেছিল।