ট্রাম্প ইংরেজিও জানেন না!

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স


ইংরেজি ভাষাটাও ঠিকমতো জানেন না ট্রাম্প! এ রকমটাই মনে করছেন একজন অবসরে যাওয়া ইংরেজির শিক্ষক।

হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সই করা চিঠি দেওয়া হয়েছিল ইভোনে মেইসনকে। চিঠির ভাষা ছিল ভুলে ভরা। আর তাতেই বেজায় চটেছেন এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। নিউইয়র্ক টাইমস ও দ্য ইনডিপেনডেন্ট বলছে, ভুল দেখলে একজন শিক্ষকের যা কাজ, ঠিক সেটা করেছেন মিসেস মেইসন। ভুলগুলো দাগিয়ে চিঠিটা ফেরত পাঠিয়েছেন প্রেসিডেন্টকে।

হোয়াইট হাউস থেকে প্রিন্ট করা ৩ মে তারিখের ওই চিঠিটার প্রাপক ছিলেন ইভোনে মেইসন। বয়স ৬১। ১৭ বছর হাইস্কুলে ইংরেজি পড়ানোর পর গত বছর অবসরে গেছেন তিনি।

চিঠি পাওয়ার পরপরই প্রিয় বেগুনি কালির কলমটা খুলে ভুলগুলো শোধরাতে বসে পড়েন মিসেস মেইসন। এরপর চিঠির একটা ছবি প্রকাশ করেন নিজের ফেসবুক পাতায়। আর চিঠিটা ফেরত পাঠিয়ে দেন হোয়াইট হাউসের ঠিকানায়।

দক্ষিণ ক্যারোলাইনা সংবাদমাধ্যম গ্রিনভিল নিউজকে মিসেস মেইসন বলেছেন, ‘মাধ্যমিক স্কুলপর্যায়ে এ রকম ভুল হলে আমি বড়জোর “সি” বা “সি+” গ্রেড দিতাম। আর উচ্চ মাধ্যমিকে এমন ভুল হলে দিতাম “ডি” গ্রেড।’

তিনি অবশ্য ট্রাম্পের চিঠিতে কোনো গ্রেড দেননি।

মিসেস মেইসন বলেন, ‘এটা ছিল খুব বেশি ভুলে ভরা। এত ভুল আমার সহ্য হয় না। কেউ যদি ঠিকঠাক লিখতে পারেন, তবে তা-ই করা উচিত।’

চিঠিতে আরও অনেক ভুল থাকলেও মিসেস মেইসন সব ঠিক করেননি বলে জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সই করা চিঠি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সই করা চিঠি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া


চিঠিতে ক্যাপিটাল লেটার (বড় হাতের অক্ষর)-সংক্রান্ত তিনি ১১টি ভুল শব্দ পেয়েছেন, সেসব শব্দের মধ্যে ‘প্রেসিডেন্ট’ এবং ‘স্টেট’-এর মতো শব্দ রয়েছে। চিঠিতে এগুলো ক্যাপিটাল লেটারে লেখা হয়েছিল। ইংরেজির সাধারণ নিয়ম অনুসারে এগুলো স্মল লেটারে (ছোট হাতের অক্ষর) লেখা হয়, যদি না শব্দগুলো কোনো নাম বা পদের আগে বসে।

মার্কিন সরকারের ইংরেজি স্টাইল বুকে অবশ্য শব্দগুলো ক্যাপিটালে লেটারে লেখার কথা বলা আছে।

আটলান্টায় বসবাসকারী মিসেস মেইসন একজন ডেমোক্র্যাট। ফেব্রুয়ারি মাসে পার্কল্যান্ডের স্কুলে গুলিতে নিহত ১৭ জনের সবার পরিবারের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দেখা করার অনুরোধ জানিয়ে একটা চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।

হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া চিঠিটা ছিল মূলত মিসেস মেইসনের ওই চিঠির জবাব। কিন্তু উত্তরটি দায়সারাগোছের বলে মনে করেন তিনি।

ট্রাম্পের চিঠির সঙ্গে এই শিক্ষক রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহামের চিঠির তুলনা টানেন। তিনি জানান, ওই চিঠিগুলো নির্ভুলভাবে লেখা হতো এবং তা ছিল বিষয়ঘনিষ্ঠ।

মিসেস মেইসন মনে করেন, চিঠিটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেননি; বরং হোয়াইট হাইসের কোনো কর্মী লিখেছেন। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি সরকারের উচ্চপর্যায়ের কারও কাছ থেকে কোনো চিঠি পাবেন, সেটাতে কোনো ব্যাকরণগত ভুল আপনি দেখতে চাইবেন না।’

ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই ব্যাকরণগত ভুল করে প্রচুর হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।

ট্রাম্পের টুইটে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নামের বানান পর্যন্ত ভুল ছিল। এ ছাড়া ‘রিডিকুলাস’, ‘পলিটিশিয়ান’—এসব বানানও ভুল করেছেন তিনি।