জুনেই চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্কের খড়্গ
জুনেই চীনের ওপর ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কের বোঝা বসতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আগামী জুনের মাঝামাঝি সময়ের পরেই কার্যকর হবে চীন থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়টি।
এর আগে অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মিউচিন বলেন, উভয় পক্ষ বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ায় শুল্ক আরোপের বিষয়টি স্থগিত থাকবে। তবে মিউচিনের এই মন্তব্যের পর সমালোচকেরা বলতে থাকেন, ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিষয়ে নরম হয়ে গেছে।
তবে গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস সাফ জানিয়েছে, যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক বসছে, তার চূড়ান্ত তালিকা ১৫ জুনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। এই ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় চীন জানায়, তারা একরকম বিস্মিত হয়েছে, আবার হয়নি। এক বিবৃতিতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এটি স্পষ্টতই ওয়াশিংটনে কিছুদিন আগে আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষের যে ঐকমত্যে এসেছিল তার বিপরীত। এমন সিদ্ধান্ত সম্প্রতি এ নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করবে বলেও মনে করছে চীন।
তবে চলতি সপ্তাহেই মার্কিন বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী উইলবার রোজের চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ওয়াশিংটনে মে মাসে দুই পক্ষের মধ্যে যে আলোচনা হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতেই চীনে যাচ্ছেন তিনি। মে মাসে ওই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন আরও বেশি কৃষি ও জ্বালানি পণ্য কিনবে—এমন সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
গত এপ্রিলে ‘বাণিজ্যযুদ্ধের’ শুরুটা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মার্কিন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মেধাস্বত্ব হস্তান্তর ও চুরিতে চীন উৎসাহিত করছে—এমনটা নিশ্চিত হওয়ার পর দেশটির ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে ট্রাম্প প্রশাসন। বছরের পর বছর আলোচনার পরও বেইজিং অবস্থান না বদলানোয় এসব পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় হোয়াইট হাউস। ট্রাম্পের মতে, বাণিজ্যযুদ্ধ ‘ভালো’ এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সহজ’ জয় হবে।
প্রথমে ইস্পাতের ওপর ২৫ ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট। লক্ষ্য দেশীয় শিল্পকে রক্ষা। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান ইস্পাত রপ্তানিকারক দেশ কানাডা এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাও (ডব্লিউটি) সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করে। এমনকি নিজ দল রিপাবলিকান সদস্যদেরও সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। পরে শক্ত অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে তিনি কানাডা ও মেক্সিকোকে বাদ দিয়ে ওই বাণিজ্যনীতি পাস করেন। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং জানায়, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপে যাবে তারা। এরপর আবার চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন।