কলেজ শিক্ষায় বৈষম্য না করার নীতি বাতিল করছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

স্কুল ও কলেজগুলোয় জাতিগত বৈচিত্র্য আনতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলোকে বিশেষ সুবিধা দিতে ওবামা আমলের নীতি থেকে সরে আসছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই নীতি বৈষম্য না করার নীতি বা ‘অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন’ নামে পরিচিত। দেশটির গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বলে বিবিসি অনলাইনে বলা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস গতকাল মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত ২৪টি নির্দেশিকা রদ করেন। এগুলোর বেশির ভাগই হচ্ছে স্কুলে জাতি এবং বৈষম্য না করার নীতিসংক্রান্ত।

সম্প্রতি এশিয়ান-আমেরিকানদের জন্য ভর্তি সীমাবদ্ধ করা হয়েছে—এমন অভিযোগে মামলা হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।

সিদ্ধান্তটি এমন সময়ে এল, যখন ভর্তির ক্ষেত্রে এশিয়ান-আমেরিকানদের জন্য সুযোগ সীমিত করার অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যকরণের মামলা দায়ের হয়েছে।

ইউএস সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালে বৈষম্য না করার নীতির পক্ষে রায় দেন।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অ্যান্টনি কেনেডি, যিনি ওই রায় লেখেন, গত মাসে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর অবসর ট্রাম্পের জন্য নিজের মতাদর্শী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে, যিনি স্কুল-কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে জাতিগত সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন।

ট্রাম্প প্রশাসন স্কুলগুলোকে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় জাতি পরিচয় বিবেচনা না নিতে বলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নীতিটি রদ করার অর্থ কী?
বৈষম্য না করার নীতি—যা ভর্তিপ্রক্রিয়ায় সংখ্যালঘুদের কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে—নিয়ে বরাবর বিতর্ক আছে।

স্টুডেন্টস ফর ফেয়ার অ্যাডমিশন্স হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ করেছে, কলেজটি ভর্তিপ্রক্রিয়ায় এশিয়ান-আমেরিকানদের জন্য মানদণ্ড বৈষম্যমূলকভাবে অত্যন্ত উঁচু রেখেছে।

বিচার বিভাগ এই বর্ণবাদী বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগের তদন্ত করছে।

গত এপ্রিলে বিচার বিভাগ এই আইভি লিগ কলেজটির ভর্তিপ্রক্রিয়া প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়।

হার্ভার্ড জানায়, এশিয়ান-আমেরিকানসহ কারও ক্ষেত্রে ভর্তির সময় কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ তারা করে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে হার্ভার্ডে ২২ দশমিক ২ শতাংশ এশিয়ান-আমেরিকান শিক্ষার্থী রয়েছেন।

ওবামার সময়ে যৌথভাবে শিক্ষা ও বিচার বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে জাতিগত বৈচিত্র্য আনায় উৎসাহিত করতে নির্দেশিকা জারি করে। এতে বলা হয়, বিভিন্ন জাতি থেকে শিক্ষার্থী এলে সব শিক্ষার্থীরই শিক্ষা অভিজ্ঞতার মান বাড়ে।

ওবামার আগের প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এর বিপক্ষে ছিলেন।

গত বছরের অক্টোবরে এ বিষয়ে জনগণের মতামত জানতে জরিপ চালায় পিউ রিসার্চ সেন্টার। এতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৭১ শতাংশ মানুষ বৈষম্য না করার নীতির পক্ষে।