বই সময়ের প্রতি এক প্রতিশ্রুতি

বব উডওয়ার্ড পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী কিংবদন্তি সাংবাদিক। সম্প্রতি ‘ফিয়ার, ট্রাম্প ইন দ্য হোয়াইট হাউস’ নামে তাঁর একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এতে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব পালনের ১৯ মাসের নানাদিক উঠে এসেছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের যোগ্যতাকে তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, বাজারে আসার আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বইটির নিন্দা করেছেন। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর প্রখ্যাত সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড ১৯৭২ সালের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির রহস্য উন্মোচন করেছিলেন। তাঁর একের পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে পদত্যাগে বাধ্য করে।
১৯৪৩ সালের ২৬ মার্চ আমেরিকার ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা এই সাংবাদিক ১৮টি বই লিখেছেন যার মধ্যে ১২টিই সর্বোচ্চ বিক্রিত। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হচ্ছে, ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে ‘অল দ্য প্রেসিডেন্ট’স মেন’; কেন এবং কীভাবে প্রেসিডেন্ট বুশ ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন, সে সম্পর্কিত অনুসন্ধানী বই ‘প্ল্যান অব অ্যাটাক’, ‘বুশ অ্যাট ওয়ার’ এবং ‘স্টেট অব ডিনাইয়েল; প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের ওপর ‘ওবামা’স ওয়ার’; প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের নাড়িনক্ষত্র তুলে ধরে লিখেছেন ‘দ্য কমান্ডারস’। নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য তিনি ১৯৭৩ এবং ২০০২ সালে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হলো তার বই ‘ফিয়ার: ট্রাম্প ইন দ্য হোয়াইট হাউস’, ১৩ সেপ্টেম্বর ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’–এ ‘বাই দ্য বুক’ বিভাগে বব উডওয়ার্ডের এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি এখানে ঈষৎ সংক্ষেপিত আকার প্রকাশ করা হল।
নিউইয়র্ক টাইমস: খাটের পাশের টেবিলে কোন বইগুলো রেখেছেন?
বব উডওয়ার্ড: টেবিলটি বইয়ে একেবারে গাদাগাদি হয়ে আছে। বইয়ের গাদায় সম্প্রতি পড়া বইগুলো যেমন আছে, তেমনি আংশিক পড়েছি, পড়ব বলে ভাবছি, মাঝে মাঝে সাহায্য নেব—এমন সব বইও জায়গা জুড়ে রয়েছে। কেন গ্রমলির লেখা বিতর্কিত ও ঐতিহাসিক হোয়াইট ওয়াটার এবং মনিকা লিউনিস্কির ওপর কেনেথ স্টারের অনুসন্ধান রিপোর্ট-‘দ্য ডেথ অব আমেরিকান ভার্চু: ক্লিনটন ভার্সাস স্টার’; অ্যাডাম উইলিয়াম জে ক্রাউ জুনিয়রের (ডেভিড কানোফ) লেখা স্মৃতিকথা ‘দ্য লাইন অফ ফায়ার’ (তিনি প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের অধীনস্থ চেয়ারম্যান থাকাকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আকস্মিক একটি যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপারে সাহসী ও গোপন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন); স্নায়যুদ্ধোত্তর বুদ্ধিজীবী ও গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য সমালোচক অ্যালফ্রেড কাজিনের জার্নাল (রিচার্ড এম কুক সম্পাদিত); সাইমন সেবাগ মন্টেফিউরির জীবনী ‘স্তালিন: দ্য কোর্ট অব দ্য রেড জার’ যাতে সোভিয়েত নৃশংসতার বর্ণনা রয়েছে; চার আধুনিক নারীর জীবনসংগ্রামকে উপজীব্য করে লেখা ম্যাককেঞ্জি বেজোসের উপন্যাস ‘ট্র্যাপস’; টলস্টয় থেকে হেনরি জেমস পর্যন্ত ১০০ জন প্রখ্যাত লেখকের ওপর লিখিত হ্যারল্ড ব্লুমের গদ্য সংগ্রহ ‘জিনিয়াস’; স্টিভ লুক্সবার্গের প্রকাশিতব্য বই ‘সেপারেট: দ্য স্টোরি অফ প্লেসি ভার্সাস ফার্গুসন এবং ‘আমেরিকাস জার্নি ফ্রম স্লেভারি টু সেগ্রেগেইশন’ (বই দুটি আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হবে); ২০ শতকের যুদ্ধের ওপর আন্তন মীরেরের ১৯৬৪ সালে লেখা বিশাল উপন্যাস ‘ওয়ান্স এন ঈগল’; ১৯৩০-এ দক্ষিণাঞ্চলীয় এক নৈরাশ্যবাদী গভর্নরের জীবন নিয়ে রচিত রবার্ট পেন ওয়ারেনের এপিক উপন্যাস ‘অল দ্য কিংস ম্যান; এক সাবেক রিপোর্টারের মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে উপন্যাসটি (কলেজজীবনে প্রথম পঠিত উপন্যাস, যা আমাকে সাংবাদিকতার প্রতি আকৃষ্ট হতে সাহায্য করেছে); ওয়ালেস স্টেগনারের উপন্যাস ‘ক্রসিং টু সেইফটি’; অব্রাহাম ভার্গেসের ‘কাটিং ফর স্টোন’, জীবন ও ওষুধ নিয়ে চর্চায় আত্মনিবিষ্ট হওয়ার প্রয়োজনীয় শক্তির ওপর রচিত উপন্যাস; আর কীভাবে মাত্র ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে পেশির ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে ড. ডেইল এল. অ্যান্ডারসনের একটি পুস্তিকা।
নিউইয়র্ক টাইমস: সর্বশেষ কোন শ্রেষ্ঠ বইটি পড়লেন বা পুনর্পাঠ করলেন?
বব উডওয়ার্ড: এই গ্রীষ্মে ফ্লেচার নিবেলের ১৯৬৫-তে লেখা ‘নাইট অব ক্যাম্প ডেভিড’ (তিনি ‘সেভেন ডেইজ অব মে’র সহ-লেখক) বইটিকে পুনর্পাঠ করেছি। বইটি অদ্ভুত। আমেরিকার জনৈক প্রেসিডেন্ট ভাবছেন, তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন! বইটি যেখানে শেষ হয়েছে সেখানে পাঠক ঘোরলাগা কিছু টুইস্টের মুখোমুখি হবেন।
নিউইয়র্ক টাইমস: সম্প্রতি পঠিত শ্রেষ্ঠ বই কোনটি?
বব উডওয়ার্ড: ড্যানিয়েল সিলভার ‘দ্য আদার উইম্যান’। বইয়ের কাহিনি গড়ে উঠেছে এক ক্ল্যাসিক আন্তর্জাতিক গুপ্তচরকে নিয়ে, যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশে গোপনে সংবাদ সরবরাহ করে। লোকটা চতুর, আবেগবর্জিত ও পেশিবহুল।
নিউইয়র্ক টাইমস: নিজের একটি বইয়ের কাজ করার সময় কী ধরনের লেখা পড়েন?
বব উডওয়ার্ড: সেই অমায়িক আর প্রিয় লেখক জন লে ক্যারির স্পাই নোবেল, বিশেষ করে ‘স্মাইলিস পিপল’।
নিউইয়র্ক টাইমস: সম্প্রতি পড়া কোনো বই থেকে আগ্রহোদ্দীপক কোন কথাটি জেনেছেন?
বব উডওয়ার্ড: সম্প্রতি আমার দারুণ এক উপলব্ধি হয়েছে! অসহিষ্ণু আর নাজেহাল এক জীবন যে কতটুকু ভারাক্রান্ত, বিষময় আর অসুখী হতে পারে—জন এ ফ্যারেলের ৭৩৭ পৃষ্ঠার তীক্ষ্ণ ও গভীর অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে লেখা আত্মজীবনী ‘রিচার্ড নিক্সন: দ্য লাইফ’ বইটি পড়তে গিয়ে টের পেয়েছি। প্রেসিডেন্ট নিক্সন তার ফেয়ারওয়েলের দিন বলেছিলেন, ‘সব সময় মনে রাখবে, অন্যরা তোমাকে ঘৃণা করতে পারে, তবে তুমি যদি ওদের ঘৃণা না করো, তাহলে ওরা তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু তুমিও যদি ঘৃণা করা শুরু করো, তাহলে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলবে।
পদত্যাগের সেই চরম মুহূর্তে নিক্সন হয় তো এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলেন, ঘৃণাই ছিল তার শাসনের দণ্ড যা তার প্রেসিডেন্সিকে বিতর্কিত করেছিল আর তাকে টেনেও নামিয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস: বইগুলোকে কীভাবে পড়তে পছন্দ করেন?
বব উডওয়ার্ড: সকালে, হার্ডব্যাক। (রাতে কিছু পড়তে গেলে নিজের অজান্তেই ঘুমে ঢলে পড়ি)। আমি একসঙ্গে কয়েকটি বই পড়ি, এক বই থেকে কিছু অংশ, আবার অন্য বই থেকে কিছু, এভাবে পড়া এগোয়। কানসাসের রিপাবলিকান সিনেটর বব ডল, যিনি ১৯৯৬ সালে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছিলেন, তিনি একবার তার পঠনপাঠন সম্পর্কে বলছিলেন। তিনি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলির ওপর দ্রুত চোখ বুলিয়ে নিতেন। একটি বইয়ের সঙ্গে মাত্র এক ঘণ্টা সময় খরচ করার ব্যাপারটি আসলেই খুব সহজ, আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে বইটি আপনি পড়েছেন! প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটা লেখকের সঙ্গে এবং পাঠক হিসেবে নিজের সঙ্গেও প্রতারণা।
নিউইয়র্ক টাইমস: বইগুলোকে কীভাবে গুছিয়ে রাখেন?
বব উডওয়ার্ড: যেদিন আমি শেষ নয়জন প্রেসিডেন্টের ওপর—নিক্সন থেকে ট্রাম—বই লেখা শুরু করেছিলাম, সেদিন থেকেই চেষ্টা করছিলাম, এই প্রেসিডেন্টদের ওপর লিখিত প্রধান প্রধান বইগুলো জোগাড় করা, পড়া, বইয়ের প্রধান দিকগুলো চিহ্নিত করে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা। বইগুলোকে বিষয় অনুসারে গ্রুপে গ্রুপে সাজিয়ে ছিলাম। কিন্তু ফিকশন আর নন ফিকশনের বেলায়...কখনো তাদের ঠিকমতো গুছিয়ে উঠতে পারিনি।
নিউইয়র্ক টাইমস: বুক শেলফে হঠাৎ কোন বইটি পেয়ে চমকে উঠেছিলেন?
বব উডওয়ার্ড: ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক সহকর্মী ক্রিশ্চিয়ান উইলিয়ামসের ‘অ্যালোন টুগেদার’ বইটি সত্যিই বিস্মিত করে দিয়েছিল। বইটি, ৩২ ফুট লম্বা ১ মাস্তুলের নৌকোকে এক হাতে দাঁড় বেয়ে ২ হাজার ৭০০ মাইল দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে হাওয়াই নিয়ে যাওয়ার অদ্ভুত স্মৃতি লেখা। তার উপলব্ধি হয়েছিল: নিজেকে যখনই নিঃসঙ্গ মনে করবেন তখন আর নিঃসঙ্গ থাকবেন না, আপনার জীবনের স্মৃতি-বিস্মৃতি, সম্পর্ক, উত্তরণ এবং বিপর্যয়—সব কিছু আপনাকে সঙ্গ দেবে। উইলিয়ামসের বইয়ের উত্তরভাগ (সিকোয়াল) ‘ফিলোসফি অব সেইলিং: অফশোর ইন সার্চ অব দি ইউনিভার্স’–ও বুদ্ধিদৃপ্ত বই। সমুদ্রপথের নিঃসঙ্গ যাত্রায় আপনি আপনার নিজের সম্পর্কে এবং জীবন সম্পর্কে বহু কিছু আবিষ্কার করবেন।
নিউইয়র্ক টাইমস: ছোটবেলায় আপনি কেমন পাঠক ছিলেন?
বব উডওয়ার্ড: ছেলেবেলার প্রথম পড়া যে বইটির কথা আমি সারা জীবনেও ভুলব না, সেটি হচ্ছে জোহান ডেভিড উইসের ‘দ্য সুইস ফ্যামিলি রবিনসন’। বইটি জাহাজডুবির কারণে জনমানবশূন্য দ্বীপে আটকে পড়া একটি পরিবারের উপাখ্যান। আমার বিশ্বাস, এই বইটিই ছিল দীর্ঘ সময়ের জন্য চেনা জগৎ থেকে সম্পূর্ণ অচেনা জগতে ঢুকে পড়ার আমার প্রথম অভিজ্ঞতা। নিজের জীবনে এই অদ্ভুত ও আশ্চর্য রূপান্তরটি আমি একটি বইয়ের মাধ্যমে পেলাম, সে অভিজ্ঞতার জন্য আমার দরকার ছিল প্রবল কল্পনাশক্তির। সম্পূর্ণ এক অজানা জগতের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছিলাম এই বইটি পড়ে।
নিউইয়র্ক টাইমস: আপনি বাড়িতে সাহিত্য আলোচনার জন্য নৈশভোজ পার্টি করছেন, সেখানে কোন মৃত বা জীবিত তিনজন লেখক আমন্ত্রিত হবেন?
বব উডওয়ার্ড: লিঙ্কন, ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট (এফডিআর) ও নিক্সন—এই তিনজন থাকবেন। মাল্টিপল রেকর্ডার চালু থাকবে, তাদের সব কথা রেকর্ড হবে, কথাগুলো হারিয়ে ফেলা যাবে না। যদিও নিক্সন আসতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে, তৃতীয় ব্যক্তি অবশ্যই আইজেনহাওয়ার।
নিউইয়র্ক টাইমস: আত্মজীবনী লেখার জন্য কাউকে বেছে নিতে হলে কাকে নেবেন?
বব উডওয়ার্ড: নিউইয়র্কার ও ওয়াশিংটন পোস্টের সাবেক প্রতিবেদক, ‘ডিভাইডেড লিভস’ বইয়ের লেখক, আমার ২৯ বছরের বিবাহিত জীবনের সঙ্গী এলসা ওয়ালশই সবচেয়ে উপযুক্ত। তিনি যেমন সব গোপন তথ্যগুলো জানেন, ঠিক তেমনি আমার ত্রুটিবিচ্যুতি, ব্যর্থতা, খুঁত, কলঙ্ক, দোষ ইত্যাদি প্রতিটি খুঁটিনাটি দিক সম্পর্কেও অবগত।
নিউইয়র্ক টাইমস: উপহার হিসাবে পাওয়া এ পর্যন্ত সেরা বই কোনটি?
বব উডওয়ার্ড: ক্যাথরিন গ্রাহামের ‘পার্সোনাল হিস্ট্রি’র একটি অনুলিপি, ক্যাথরিন গ্রাহামের কাছ থেকে উপহার পাওয়া।
নিউইয়র্ক টাইমস: একটি বই শেষ করার পর কোন বইটি পড়বেন, তা কীভাবে ঠিক করেন?
বব উডওয়ার্ড: আমি একদম শুরু থেকে থেকেই ধীর গতির পাঠক, আর বই হচ্ছে সময়ের প্রতি এক বড় প্রতিশ্রুতি। তাই সব সময়ই আমি এমন একটি বই বেছে নেব, যাতে এই মানবিক শিক্ষাটি থাকবে—কোনো কিছুকে নিরীক্ষণ করতে হলে গভীরে যেতে হবে, দ্রুত চোখ বুলিয়ে গেলে কিছুই দেখা যাবে না। আমার আশা, জেসন ম্যাথিউস ৩৩ বছর ধরে সিএইএর প্যারামিলিটারি ও সাইকোলজিক্যাল কাজকর্মের গোপন অপারেশন অফিসার, ‘রেড স্প্যারো’ সিরিজের স্পাই উপন্যাসগুলোকে মন দিয়ে পড়বেন।