খাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপা দেওয়ার ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, যিনিই এই পরিকল্পনা করে থাকুন, তাঁকে ‘বড় ধরনের বিপদে’ পড়তে হবে।

আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, খাসোগি হত্যার ঘটনায় সৌদি আরবের পদক্ষেপকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘সবচেয়ে জঘন্যভাবে ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

এর পরই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ‘এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেবে’ যুক্তরাষ্ট্র। সন্দেহভাজন ২১ জনের ভিসা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করতে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

এর আগে খাসোগি ইস্যুতে সৌদি আরবের পক্ষে সুর নরম ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। এমনকি খাসোগি নিখোঁজ হওয়ার ১৭ দিন পর সৌদি আরব প্রথমবার খাসোগির মৃত্যুবিষয়ক তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বিবৃতি প্রকাশের পাশাপাশি সৌদি পদক্ষেপের প্রশংসা করেন ট্রাম্প। এ ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কিছু না–ও জানতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। অথচ অন্য দেশগুলো সৌদির বিবৃতির সত্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে।

মিত্র দেশগুলোর ক্রমাগত চাপের মুখে ট্রাম্প সুর পাল্টেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে তাঁদের প্রকৃত ধারণা বেশ বাজে ছিল। এটা যেনতেনভাবে তদন্ত করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডকে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে’। তিনি বলেন, ‘এই ভাবনাটি (হত্যার) যাঁর ছিল, আমি মনে করি তিনি বড় ধরনের সমস্যায় আছেন। তাঁকে বড় সমস্যায় পড়তে হবে।’

২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার জন্য প্রবেশ করেন খাসোগি এবং সেখান থেকে তিনি আর বেরিয়ে আসেননি।

শুরুতে সৌদি বিবৃতিতে বলা হয়, কনস্যুলেট ভবনে হাতাহাতির সময় খাসোগির মৃত্যু হয়। এর আগ পর্যন্ত খাসোগির বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানিয়েছিল সৌদি। খাসোগি কাজ শেষ করে কনস্যুলেট ভবন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি করে দেশটি। শুক্রবার বিবৃতিতে প্রথমবারের মতো খাসোগির মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে দেশটি জানায়, এ ঘটনায় ১৮ জন সৌদি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা উপপ্রধান ও যুবরাজ মোহাম্মদের একজন উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে।

খাসোগি নিখোঁজের ঘটনায় শুরুতেই তুরস্ক দাবি করেছিল, রিয়াদ থেকে ১৫ জন সৌদি চর ইস্তাম্বুলে এসে খাসোগিকে হত্যার পর কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়েছে। খাসোগি মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন। গত বছরের জুনে যুবরাজ মোহাম্মদ ক্ষমতা নেওয়ার পর তিনি দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান। তিনি সৌদি সরকারের কড়া সমালোচক ছিলেন।

ট্রাম্প সৌদি কর্মকর্তাদের তাঁর পক্ষে যতটুকু পারা যায়, কড়া সমালোচনা করেছেন।