'মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১' বইয়ের প্রকাশনা উৎসব

লেখক ও সাংবাদিক শামীম আল আমিনের ‘মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে সাউথ এশিয়ান এন্টারটেইনমেন্ট।
২০১৮ সালের ১১ মে ফ্লোরিডার সময় অনুযায়ী বিকেল চারটা ১৪ মিনিটে মহাকাশে যায় ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১’। বাংলাদেশে তখন শুক্রবার শেষ হয়ে শনিবারে পড়েছে। ক্ষণ রাত দুইটা ১৪ মিনিট। ঐতিহাসিক সেই ঘটনার এক বছর পূর্তি হতে চলেছে। এ উপলক্ষেই নিউইয়র্কে এমন আয়োজন করা হয়।
চলতি বছর অমর একুশে বইমেলায় আদিত্য প্রকাশ থেকে বের হয়েছিল ‘মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১’। এবার নিউইয়র্কে হয়ে গেল প্রকাশনা অনুষ্ঠান। এতে অতিথি জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফ হোসেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ।
সহযোগিতা করেছেন পিপল এন টেকের প্রধান আবু হানিপ। ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শহীদ হাসান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম খান মিরাজ, সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, নিনি ওয়াহেদ, শহীদ পরিবারের সন্তান ফাহিম রেজা নূর, উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মালেক, কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ আলী বাবুল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুব্রত বিশ্বাস, জাতিসংঘ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. নূর এলাহি মিনা, সংগীত শিল্পী শাহ মাহবুব, কামরুজ্জামান বকুল, বাচিক শিল্পী গোপন সাহা, নজরুল কবির প্রমুখ।
নাইজেরিয়া থেকে লিখিত বার্তা পাঠিয়েছেন সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময় তিনি নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। লিখিত বাণীতে তিনি বলেন, ‘ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে নিজস্ব স্যাটেলাইট আছে এমন গর্বিত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ৫৭ নম্বরে নিজেদের নাম লেখায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই স্যাটেলাইট সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।’ এ নিয়ে বই লেখায় শামীম আল আমিনকে অভিনন্দন জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা বইটিকে একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে তুলে ধরে বলেন, ভবিষ্যতে ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় এই বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এতে বিশ্ববাসী বাংলাদেশের গৌরব সম্পর্কে জানতে পারবে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফ হোসেন বলেন, একজন সাংবাদিক হিসেবে শামীম আল আমিন একটি ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের সংবাদ সংগ্রহের কাজ করেই কেবল থেমে থাকেননি, তা নিয়ে বই লিখে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বইটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মত দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের সময়ও নানা অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু সফল উৎক্ষেপণের মাধ্যমে সবাই জবাব পেয়েছে। এখনো স্যাটেলাইটের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো কোনো মহল ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ এখন নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক। দেশে যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে, হয়তো একদিন বাংলাদেশ নিজেই এমন স্যাটেলাইট বানিয়ে মহাকাশে পাঠাতে পারবে।
সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘটনাকে বাংলাদেশের বড় একটি বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি লেখককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বইটি জুড়ে যে আনন্দ উদ্‌যাপন রয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
লেখক শামীম আল আমিন বলেন, ইতিহাস গড়া সেই দিনে কেনেডি স্পেস সেন্টারে উপস্থিত থাকতে পারাটা ছিল ভীষণ সৌভাগ্যের। আর সেই ঘটনাপ্রবাহ লিখে রাখা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে হওয়ায় বইটি লেখা। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এক ধরনের জাগরণ তৈরি করাই লেখার উদ্দেশ্য। যাতে নিজেদের গৌরব সম্পর্কে তরুণেরা জেনে নিজেরাও ভালো কাজে উদ্যোগী হয়।
সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে দুটি কবিতা আবৃত্তি করেন গোপন সাহা। শেষে শিল্পী শাহ মাহবুব সংগীত পরিবেশন করেন।