আলাবামায় বাহারি পিঠার উৎসব

আলাবামায় প্রবাসী বাঙালিরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে
আলাবামায় প্রবাসী বাঙালিরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে

হাজার বছর ধরে পিঠা-পুলি-পায়েসের সঙ্গে বাঙালি খাবার সংস্কৃতির নাম জড়িয়ে রয়েছে। এমন কোনো বাঙালি নেই যে উনুনের পাশে বসে মা-দাদির হাতের বানানো পিঠা খায়নি। কিন্তু, জন্মভূমি থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে থাকা বাংলাদেশি-আমেরিকান পরিবারগুলো ইচ্ছে করলেও তাদের সন্তানদের নানা পদের পিঠা-পুলি বানিয়ে খাওয়াতে পারেন না। ফলে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি-আমেরিকানদের কাছে বাংলাদেশের অনেক পিঠার নামই অপরিচিত। এই শূন্যতা দূর করে আমেরিকায় বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের বাঙালিদের বাংলাদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং বিদেশের মাটিতে বসে স্বদেশের পিঠার স্বাদ উপভোগের জন্য এবার আলাবামা এবং এর পার্শ্ববর্তী অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত বাঙালিরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় দ্বিতীয়বারের মতো পিঠা উৎসব উদ্‌যাপন করেছে।
এ পিঠা উৎসবে আলাবামা ছাড়াও আশপাশের ফ্লোরিডা ও মিসিসিপি অঙ্গরাজ্য থেকে শতাধিক বাঙালি পরিবার-পরিজন নিয়ে অংশ নেন। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের পাশাপাশি পশ্চিম বঙ্গের বাঙালিরাও ছিলেন।
বরাবরের মতোই নুরুন নাহার লিপি ও নাজমুল হক খোকনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। তাদের সঙ্গে সহযোগিতায় ছিলেন মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম লিটন, পান্না আখতার, তিমা সিদ্দিক, নেসমিনলিপিকা আরিফ, ইয়াসমিন আরাফাত পলি, কাজী রিনা ও জাহান তামান্না।
অনুষ্ঠানে নানা পদের পিঠা পরিবেশন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিতই পিঠা, পাপুর পিঠা, বিবি খানা পিঠা, মাছ পিঠা, ফুলঝুরি পিঠা, এলেবেলে গজা, ডিম পিঠা, মুড়ির মোয়া, মুগপাকন, পিঠা, ঝালপুলি পিঠা, রসের পিঠা, সাদা মেরা পিঠা, গুড়ের মেরা পিঠা, তিলের পিঠা, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, গোলাপ পিঠা, বিস্কুট পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, স্টার পিঠা, পাতা পিঠা, জিলাপি পিঠা, চরকা পিঠা, হাঁস পিঠা, শিমফুল পিঠা, পাটিসাপ্টা পিঠা, আনারস পিঠা, তেলের পিঠা, এবং হৃদয়হরণ পিঠা। অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আয়োজক নুরুন নাহার লিপি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের হাজার বছরের খাবারের ঐতিহ্যকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা।’
পিঠা পরিবেশনের পাশা-পাশি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক নানা খাবার পরিবেশন করা হয়। দুপুরের খাবারের জন্য পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন পদের ভর্তা-ভাজি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শুঁটকির ভর্তা, আলুর ভর্তা, শিম ভর্তা, কালী ঝিরা ভর্তা, লাউয়ের খোসার ভর্তা, মাছের ভর্তা ও কলার ভর্তা। দুপুরের খাবার পরে বিকেল বেলায় পরিবেশন করা হয় পিঠা। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি-মার্কিন ছেলে-মেয়েরা মজাদার সব পিঠার প্রশংসা করেন।