গ্রিনকার্ড পেতে জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত আইনজীবী

ফিলাডেলফিয়ার এক আদালত জাল কাগজপত্র ও মিথ্যা গল্প সাজিয়ে গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদনে সাহায্য করার জন্য এক আইনজীবীকে অভিযুক্ত করেছে।
অভিবাসন সুবিধা নেওয়ার জন্য ভুয়া তথ্য দেওয়া এবং এতে সহযোগিতার জন্য জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে ফিলাডেলফিয়ার অভিবাসন আইনজীবী আন্দ্রেয়া ডব্লিউ ক্লার্ককে জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রিনকার্ড পেতে ক্লায়েন্টদের পক্ষে মিথ্যা কাগজপত্র তৈরি করে সহযোগিতা করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
আনীত অভিযোগ স্বীকার করেছেন ক্লার্ক। এই অভিযোগে ক্লার্কের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর জেল ও ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার জরিমানা করা হতে পারে। আন্দ্রেয়া ডব্লিউ ক্লার্ক ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন। ফিলাডেলফিয়া ও ব্রুকলিনে তাঁর দুটি অফিস রয়েছে।
ক্লার্কের বিরুদ্ধে গত মাসে আদালতে দাখিল করা অভিযোগ অনুসারে, ৫৭ বছর বয়সী আন্দ্রেয়া ডব্লিউ ক্লার্কের বিরুদ্ধে ছয়টি জালিয়াতি ও মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আমেরিকার পেনসিলভানিয়ার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি কার্যালয়ের সিনিয়র উপদেষ্টা ক্লেয়ার অটুনাম পোজস এ মামলা দায়ের করেন। পোজস বলেন, আইনজীবীরা আইনের শাসন বজায় রাখার জন শপথ গ্রহণ করেন, আইনকে কারও পছন্দমতো ব্যবহারের জন্য নয়। লাইসেন্স প্রাপ্ত আইনজীবী দ্বারা এমন অভিবাসন জালিয়াতির ঘটনা আইনি পেশায় বিরল।
অভিবাসন বিভাগ থেকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে কেউ জাল পাসপোর্টের সাহায্যে গোপনে আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে। প্রসিকিউটররা বলছেন, ক্লার্ক তিনজন ক্লায়েন্টকে মিথ্যা, সাজানো বা প্রতারণাপূর্ণ এবং জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে আমেরিকায় প্রবেশে সহায়তা করেছেন। এর মধ্যে দুজন আমেরিকায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে এবং তৃতীয়জন একটি ভিন্ন জাল পাসপোর্টের মাধ্যমে এ দেশে আসেন। পরে ক্লার্ক ওই তিনজনের হয়ে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য আদালতে আবেদন করেন। তিনি তাঁদেরকে আমেরিকায় থেকেই অভিবাসন আবেদনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ পুরো প্রক্রিয়ায় তিনি তাঁদের পূর্ণ সহায়তা দেন। এর মধ্যে একজন এরই মধ্যে গ্রিনকার্ড পেয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে আমেরিকান অভিবাসন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি উইলিয়াম স্টক বলেন, আমেরিকার অভিবাসন আইনে অবৈধ কাগজপত্র ও অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের জন্য কঠোর শাস্তি ও জরিমানার বিধান রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ সীমানা অতিক্রম করে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আমেরিকান কোনো নাগরিককে বিয়ে করে, তবে তিনি গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও একটি বিষয় ক্ষমার অযোগ্য। তা হলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আমেরিকায় অন্যায়ভাবে প্রবেশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই আগে আমেরিকা ছাড়তে হবে। এবং তারপর আবার বৈধভাবে আমেরিকায় আসতে হবে।
অভিবাসন জালিয়াতি একটি ফেডারেল অপরাধ। আইনি সহায়তার জন্য কোনো অভিবাসীর জমা দেওয়া নথির কোনো একটি জাল প্রমাণিত হলে তাকে দেওয়া সব আইনি সুবিধা বাতিল হতে পারে। এমনকি নাগরিকত্বও হারাতে হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন এ ক্ষেত্রে খুব কঠোর। এসব জালিয়াতি শনাক্তে রয়েছে বিশেষ তদন্ত দল। গত পাঁচ বছরে ১৬ জনকে পেনসিলভানিয়া আদালত ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। এর মধ্যে দুজন অভিবাসন আইনজীবী।