হোদা মুথানাকে ফেরাতে মামলার শুনানি

আমেরিকার আলাবামা থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে যোগ দেওয়া হোদা মুথানা আমেরিকায় ফিরে আসতে চাইলেও মার্কিন প্রশাসন তাঁকে গ্রহণে ইচ্ছুক নয়। এ অবস্থায় ১৮ মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে আমেরিকায় ফিরতে চেয়ে মামলা করেছেন তিনি। সম্প্রতি ফেডারেল আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।
হোদা মুথানার বাবা আহমেদ আলী মুথানা একজন মার্কিন নাগরিক। সাবেক এই ইয়েমেনি কূটনীতিক মেয়ের জন্য এই মাসের শুরুতে মামলাটি করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোদা মুথানা মার্কিন নাগরিক নয় উল্লেখ করে তাঁর আমেরিকায় প্রবেশের অধিকার অস্বীকার করার প্রেক্ষাপটে এ মামলা করা হয়।
টেক্সাসভিত্তিক একটি মুসলমান আইনজীবী গ্রুপ থেকে আহমেদ আলী মুথানাকে আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তারা বলছে, আহমেদ আলী মুথানা কূটনীতিক চাকরি ছাড়ার পর আমেরিকায় স্থায়ী হন। সে সময় নিউজার্সিতে জন্ম হয় হোদা মুথানার। এর প্রমাণ হিসেবে হোদা মুথানার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর জন্মসনদ ও নাগরিকত্বের সরকারি নথি আমেরিকায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁর আইনজীবীরা বলছেন, আমেরিকার অভিবাসন সংস্থা মুথানার এই দুটি নথির ওপর ভিত্তি করে তাঁকে মার্কিন পাসপোর্ট দিয়েছে।
এদিকে মার্কিন সরকার এখন বলছে, এই পাসপোর্ট ভুল করে দেওয়া হয়েছিল। আর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো সরাসরি বলেছেন, মুথানা আইএস যোদ্ধার স্ত্রী। তাঁকে আমেরিকায় আসতে দেওয়া হবে না।
ট্রাম্প প্রশাসন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মুথানা নিউজার্সিতে জন্মগ্রহণ করলেও মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেননি। কারণ তাঁর বাবা তাঁর জন্মের সময় কূটনীতিক ছিলেন।
হোদা মুথানাকে নিয়ে এ তোলপাড়ের শুরু কিছুদিন আগে। ২০১৪ সালে আলাবামা থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় আইএসের সঙ্গে যোগ দেওয়া হোদা মুথানা কিছুদিন আগে নিজ দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বর্তমানে ২৪ বছর বয়সী মুথানা সিরিয়াতে দুবার আইএস যোদ্ধাদের বিয়ে করেছিলেন। তাঁর দুই স্বামীই মারা যান যুদ্ধে। গত বছরের ডিসেম্বরে সিরিয়া ও ইরাক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে আইএস। এ অবস্থায় হোদা মুথানা একটি শরণার্থীশিবিরে পালিয়ে যান।
আমেরিকায় ফিরতে ইচ্ছুক হোদা মুথানা জানান, মা-বাবাকে আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর গবেষণার জন্য মাঠপর্যায়ের একটি কাজের জন্য আটলান্টা যাচ্ছেন বলে পালিয়েছিলেন তিনি। পরে টিউশনের খরচ দিয়ে তুরস্কে যাওয়ার বিমান টিকিট কেনেন এবং সেখান থেকে তিনি সিরিয়া যান। তাঁর ভাষ্য, তিনি অনুতপ্ত। কর্মের জন্য জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করছেন। তিনি দেশে ফিরতে চান। তাঁর আশা, আমেরিকা তাঁকে হুমকি মনে করবে না। তাঁকে গ্রহণ করা হবে। তিনি একজন সাধারণ মানুষ। তাঁকে ব্রেনওয়াশ করা হয়েছিল। ভবিষ্যতে এমনটা আর হবে না। তিনি তাঁর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং মার্কিন বিচার ব্যবস্থা সম্মুখীন হয়ে সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা মেনে এমনকি জেলে খাটতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।