আফগান সরকার ছাড়া চুক্তিতে শান্তি আসবে না

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মহিব।
আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মহিব।

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মহিব মনে করেন, তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসন যে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তার ফলে যে সে দেশে শান্তি আসবে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।

গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের এশিয়া সোসাইটিতে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে হামদুল্লাহ মহিব এসব কথা বলেন।

হামদুল্লাহ মহিব বলেন, ‘শান্তি মানে কি শুধু যুদ্ধবিরতি? আমাদের শাসনতন্ত্র রক্ষার কী হবে? আমাদের প্রত্যকের, বিশেষ করে নারীদের মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা কে দেবে? এই চুক্তি বাস্তবায়নইবা কে করবে?’

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য আফগান জনগণের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর বর্তমান আফগান সরকার দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে। এই সরকারকে বাদ দিয়ে কোনো অর্থপূর্ণ শান্তিচুক্তি সম্ভব নয়।

সৌদি আরব ও একাধিক উপসাগরীয় দেশের সমর্থনে তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তিচুক্তির কাঠামো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

তালেবান জানিয়েছে, তারা আফগান সরকারের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় আগ্রহী নয়।

সম্প্রতি দোহায় যে বহুজাতিক শান্তি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে আফগান সরকারের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও আলোচনায় অংশ নিতে পারেননি।

আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের যে পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসন অনুসরণ করছে, তার অংশ হিসেবেই তালেবানদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।

হামদুল্লাহ মহিব বলেন, মার্কিন সৈন্য চলে গেলেও তাঁর দেশে যুদ্ধ শেষ হবে না। আফগান সৈন্যরাই এই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমাদের যুদ্ধ। আমেরিকা কেবল তাতে সহায়তা করছে।’

হামদুল্লাহ মহিব বলেন, আফগান জনগণ আশা করে, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তাদের অর্থনৈতিকভাবে সমর্থন জোগাবে। এই যুদ্ধে আফগান জনগণ পরাজিত হলে সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটবে, যার ফল সবাইকেই ভোগ করতে হবে।

পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে হামদুল্লাহ মহিব বলেন, প্রতিবেশী দেশটি এখনো তালেবানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তান দিয়ে আফগান পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হলে তা তাঁর দেশের জন্য লাভজনক হতো। কিন্তু পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে দুই দেশের মধ্যে রপ্তানি করিডর বন্ধ রাখছে। বাধ্য হয়েই আফগানিস্তানকে ইরান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমিনিস্তান হয়ে নতুন করিডর খুঁজতে হচ্ছে।

হামদুল্লাহ মহিব বলেন, ‘পাকিস্তান সব সময় আমাদের সঙ্গে সংহতির কথা বলে, সৌভ্রাতৃত্বের কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে তাদের কাছ থেকে আমরা কোনো সহযোগিতাই পাই না।’