একা থাকতে পছন্দ আমেরিকার অর্ধেক তরুণ-তরুণীর

আমেরিকার অর্ধেকেরও বেশি তরুণ একা থাকতেই পছন্দ করছে। ‘মিলিনিয়াল’ নামে পরিচিত প্রযুক্তিনির্ভর যুব সমাজ একা থাকাতেই বেশি আনন্দ পাচ্ছে বলে নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী আমেরিকানরা তাঁদের রোমান্টিক সঙ্গী খুঁজে পাচ্ছেন না।

সম্প্রতি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা একটি সমীক্ষা চালান। এতে দেখা যায়, সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘ডেটিং অ্যাপ’-এর সংখ্যা বেড়ে গেলেও তরুণদের একটি বড় অংশ একাই রয়ে যাচ্ছে।
১৯৮৬ সাল থেকে এ সমীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে। প্রতি বছর সামাজিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ২০১৮ সালে পরিচালিত এ সমীক্ষায় একাকী তরুণের সংখ্যা আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে বলে দেখা গেছে।
গবেষকদের মতে, ১৮ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে বয়সীদের ৫১ শতাংশেরই ২০১৮ সালে কোনো স্থায়ী সঙ্গী ছিল না। এর কারণ হিসেবে তরুণেরা বলছেন, স্থিতিশীল, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু পাওয়া যাচ্ছে না। যথাযথ সঙ্গী না পাওয়াতেই তাঁরা একা থাকতে পছন্দ করছেন।
স্মার্ট ডেটিং একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা বেলা গান্ধী বলেন, কয়েকটি বিশেষ কারণ এদের একা থাকার প্রবণতাকে প্রভাবিত করতে পারে। মিলিনিয়াল প্রজন্মের তরুণদের সামনে রয়েছে মা-বাবা বা পরিচিতজনদের অস্থিতিশীল সম্পর্কের উদাহরণ। এটি তাদের প্রভাবিত করছে সব থেকে বেশি। ফলে তারা বিয়ে করে আইনি সম্পর্ক স্থাপনের মতো দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে এড়িয়ে চলতে চাইছে। তারা পূর্ববর্তী প্রজন্মের বৈবাহিক বন্ধনের চেয়ে বর্তমান সময়ের সোলমেট ধারণায় বেশি বিশ্বাস করে। নতুন প্রজন্ম তাদের কর্মজীবনের ওপর বেশি মনোযোগ দিতে আগ্রহী। ফলে তারা নিজেদেরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। পরিবার তাদের কাছে অত গুরুত্বপূর্ণ নয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এই গবেষণায় এ বিষয়টিও উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী তরুণদের কিছু অংশ বিয়ে করলেও সন্তান নিতে আগ্রহী নয়। পরিবারের কোনো দায়িত্ব নিতে সাহস পাচ্ছে না তারা।
গবেষকদের মতে, প্রযুক্তি ব্যবহারের দিক থেকে মিলিনিয়াল প্রজন্মকে দু ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার, সেলফোন ও ভিডিও গেম প্রযুক্তি নিয়ে বেড়ে উঠেছে। অন্যটি ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ও নানা রকম অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে বেড়ে উঠেছে। এই দুটি প্রজন্মের মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকলেও একটি বিষয়ে তারা একই কাতারে। আর তা হলো, তারা মনে করে, ‘তারা নিজেরাই যথেষ্ট।’ এটি শুধু আমেরিকার তরুণ নয়, সারা বিশ্বের তরুণদের মধ্যেই এ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।