যৌন হেনস্তার অভিযোগের মুখে জো বাইডেন

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বেশির ভাগ জনমত জরিপে তিনি এখনো সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে তিনিই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী, এ কথাও সবাই মানেন। কিন্তু গত কয়েক দিন তাঁর বিরুদ্ধে নিজ দলের নারী সদস্যদের কাছ থেকে একের পর এক যৌন হেনস্তার অভিযোগ আসছে। এমন অবস্থায়, ‘#মি টু’ আন্দোলনের এই যুগে, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ জাগছে।

বাইডেন নারীদের সঙ্গে একটু অতিরিক্ত ঢলাঢলি করেন—এই অভিযোগ নতুন নয়। তবে এত দিন অভিযোগ শোনা গেছে মূলত রিপাবলিকান ও অতি দক্ষিণপন্থী রাজনীতিক-কর্মীদের কাছ থেকে। কিন্তু এখন ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেই অভিযোগ উঠেছে। আর তাতেই বাইডেনের ব্যাপারে সন্দেহ চাঙা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগ এসেছিল নেভাদার ডেমোক্রেটিক আইনসভা সদস্য লুসি ফ্লোরেসের কাছ থেকে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ২০১৪ সালে এক রাজনৈতিক সভায় বাইডেন দৃষ্টিকটুভাবে তাঁকে মাথার পেছনে চুম্বন করেন। জবাবে বাইডেন জানিয়েছিলেন, অসংগত কিছু করা তাঁর লক্ষ্য ছিল না। শুধু নিজের ‘স্নেহের প্রকাশ’ হিসেবেই সেই চুম্বন করেছিলেন তিনি। তবে তাঁর সম্পর্কে কেউ কোনো আপত্তি জানালে তাঁদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে তিনি প্রস্তুত।

গতকাল সোমবার জানা গেল আরেক অভিযোগ। এমি লাপোস নামের কানেকটিকাটের এক ডেমোক্রেটিক সমর্থক অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালে এক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বাইডেন তাঁকে অসংগতভাবে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

নতুন এই অভিযোগের বিষয়ে বাইডেন নিজে কিছু বলেননি। তবে তাঁর চিফ অব স্টাফ একে ‘ডাহা মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

গণমাধ্যমে বাইডেনের অসংগত আচরণের প্রমাণ হিসেবে কিছু ছবি ছাপা হয়েছে। তবে যাঁদের সঙ্গে বাইডেনের ছবি ছাপা হয়েছে, তাঁদের কেউ কেউ নিজেরাই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ব্যাপারটা মোটেই অসংগত কিছু ছিল না। অকারণে জল ঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির যেসব নারী সদস্য প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ বাইডেনের ব্যবহারের সমালোচনা করেছেন।

যেমন, সিনেটর ক্রিস্টিন জিলিব্রান্ড বলেছেন, কী হয়েছিল সে কথা বাইডেনকেই ব্যাখ্যা করে বলতে হবে। সিনেটর এমি ক্লোবাশর বলেছেন, যেসব নারী অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।

বাইডেনকে সমর্থন করেন—এমন লোকেরও অভাব নেই। তাঁদের ধারণা, চায়ের কাপের ঝড় তিনি শিগগিরই কাটিয়ে উঠবেন। সাবেক ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্যারল মোসলি ব্রাউন বলেছেন, নারীদের ব্যাপারে বাইডেন চিরকালই সম্মান প্রদর্শন করেছেন। বাইডেন ট্রাম্প নয়। নারীদের স্বার্থ রক্ষায় তাঁর রেকর্ড বিতর্কের ঊর্ধ্বে।