আশ্রয়প্রার্থীদের অনির্দিষ্টকাল আটক রাখা যাবে না

আমেরিকায় আশ্রয়প্রার্থীদের শুনানি বা মুক্তির সাত দিনের মধ্যে অভিবাসন বিচারকের সামনে মুচলেকা শুনানিতে উপস্থিত হতে হবে। শুনানির জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য কোনো আশ্রয়প্রার্থীকে আটকে রাখা যাবে না। ওয়াশিংটনে এক ফেডারেল বিচারক গত ৫ মার্চ এক মামলায় এ নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা জজ মার্শা পিচম্যান আদেশে লিখেছেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয়প্রার্থীদের আটক রাখাটা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

বিচারক ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে (ডিএইচএস) আদেশ দিয়েছেন, কিছু নির্দিষ্ট আশ্রয়প্রার্থী সমাজের জন্য হুমকি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের মুক্তি নিরাপত্তা সংকট তৈরি করতে পারে। তবে কোন কোন আশ্রয়প্রার্থী সমাজের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে, তা প্রমাণের দায়িত্ব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির; আশ্রয়প্রার্থীদের নয়।

বিচারক মার্শা পিচম্যান এমন এক দিনে এই আদেশ দেন, যেদিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সীমানা প্রাচীর পরিদর্শনের জন্য দক্ষিণ সীমান্তে যান। পরিদর্শনের সময় আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য বিদ্যমান নীতিগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘অননুমোদিত অভিবাসীদের আশ্রয় দিয়ে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমার কথা হচ্ছে, “দুঃখিত, আমাদের জায়গা নাই।”’
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্সের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির অধীনে সীমান্তে অভিবাসী পরিবারগুলোর বিচ্ছেদকে চ্যালেঞ্জ করে করা একটি মামলার সূত্র ধরে পিচম্যানের আদেশটি এসেছে। ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, আশ্রয়প্রার্থীদের এক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের জন্য আটক করা হচ্ছে। ডিএইচএস আদালতে এই অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক তোলে। তাদের বক্তব্য, মামলা চলাকালে আশ্রয়প্রার্থীদের মেক্সিকোতে থাকতে হবে।
৫ মার্চ দেওয়া আদেশে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়ে নিয়োগ পাওয়া বিচারক পিচম্যান ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করে বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের অনিচ্ছাকৃতভাবে আটক করা হচ্ছে। পদ্ধতিগত ঘাটতির বিপরীতে গিয়ে তাদের সরকারের মুচলেকা শুনানির জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের নীতি তাদের আশ্রয় প্রার্থনার দাবি ছেড়ে দিতে বাধ্য করছে। আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করে আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ নিজ দেশে ভয় ও বিপদ রয়েছে বলেই তারা আমেরিকার আশ্রয় প্রার্থনা করছে।