লড়াইয়ের একুশ দিন

কি ভীষণ অসহায়ত্ব নিয়ে লড়েছি একুশটা দিন

ধন্ধ, সংশয়, দম বন্ধ করা উদ্বিগ্নতা থেমে যাওয়ার
নীলিমাকে দেখিনি এক টানা পাঁচ শ চার ঘণ্টা
রাতের তাঁরা জ্বলেছিল কি আঁধার কোণে?
তাও জানি না
রাত দিন বোঝার সুযোগ ছিল না কোনো
শুধু রাত জাগা বাদুরের উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দে বুঝে নিতাম,
বাইরে এখন ঘুটঘুটে আঁধার।

একুশটা দিন নিশ্বাস চেপে ছিলাম সফেদ চাঁদরে
বিভ্রান্তি নিয়ে শুনেছি কানে কানে বাতাসের অভয় বাণী
অন্ধকারের গায়ে অসীম শূন্যতা ছুড়ে কেবল ভেবেছি,
ভুল ব্যাকরণে গুলিয়ে গেলে কাব্যিক দৃশ্যপট;
মাছের দরদামে জীবন খতিয়ে দেখা তখন অমূলক।
একুশটা দিন মুমূর্ষু কারাগারে
দেখিনি সোনা ঝরা রোদ, শঙ্খশুভ্র মেঘপুঞ্জ
কাঁক ডাকা ভোরে উষার আকাশ
শুক্লাকাশে ছিল না নক্ষত্রের রাত
হিজলের জানালায় সবুজ মরে পড়ে ছিল শীর্ণ হলুদের গায়ে 

তবু হাতের তালু ফেটে জিদ ঝরতে দেখেছি মধ্য নিশিতে
পচন ধরা হাড়ে দ্রোহ কিলবিল করে উঠেছে রোজ একটু একটু
জলের গভীরে তলিয়ে যেতে যেতে এক সময় মনে হলো-
হেরে যাওয়ার জন্য তো আসিনি!
একদিন,
নির্লজ্জতায় অভিমান ভেঙে হামাগুড়ি দিয়ে ঈশ্বরকে ডাকলাম
বললাম,
হে ঈশ্বর! আমায় ক্ষমা করুন
টিকে থাকার লড়াইয়ে আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম।