বাংলা নববর্ষে উৎসবমুখর নিউইয়র্ক

পয়লা বৈশাখ আসার আগের দিন থেকেই নিউইয়র্কে নববর্ষের উৎসব শুরু হয়। গত শনিবার বাঙালি-অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় কয়েক শ বাঙালির জমায়েত, গান ও সেরা বাঙালি পোশাকের প্রতিযোগিতা দিয়ে শুরু হয়েছিল এই উৎসব। গতকাল রোববার সেই উৎসব পরিণত হয় এক মহামিলন মেলায়।

দূরদূরান্ত থেকে অভিবাসী বাঙালির অংশগ্রহণে এক দিনের জন্য হলেও নিউইয়র্কের অভিবাসীপ্রধান অঞ্চল কুইন্স হয়ে উঠেছিল এক খণ্ড বাংলাদেশ। প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি মোড়ে নতুন শাড়ি-পাঞ্জাবি পরা বাঙালি নারী-পুরুষের মুখ ছিল হাস্যোজ্জ্বল। মুখে লেখা ছিল স্বদেশের নাম।

গতকাল পয়লা বৈশাখের প্রথম অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দধ্বনির প্রভাতি বর্ষবরণ দিয়ে। একটি স্থানীয় স্কুলে ঠিক সকাল আটটায় গানে, কবিতায় ও আগত ব্যক্তিদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে হয় প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার জমজমাট অনুষ্ঠান।

মঞ্চজুড়ে আঁকা হয়েছিল রমনা উদ্যানের আদলে একটি বটমূল। তার সামনে শ খানেক শিল্পী। তাঁরা গেয়ে শোনান রবীন্দ্র, নজরুল, লালন ও দেশের গান।

আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ পাঠ করে শোনান সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা ‘আমার পরিচয়’। প্রবাসে বসে বাঙালি উচ্চারণ করে তাঁর জনকের নাম। প্রকাশ করে তাঁর জন্মের দাগচিহ্ন।

দুপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফরমিং আর্টসের (বিপা) আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র‍্যালি। প্রায় একই সময়ে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র উদীচী। প্রায় ৫০০ বাঙালি আহার সারেন ভাজি-ভর্তা ও ইলিশ দিয়ে।

সন্ধ্যায় একটি স্কুলে এনআরবি গ্লোবাল বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছিল। মেলায় গান ও কবিতা তো ছিলই, আরও ছিল দেশ থেকে আনা তৈজস ও বস্ত্রসামগ্রী। মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা। অনুষ্ঠানে জনসমাগম এত হয় যে দুর্ঘটনা এড়াতে একপর্যায়ে স্কুলঘরের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

একই দিন শহরের অন্যান্য স্থানেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাঙালিরা নববর্ষকে বরণ করে নেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ব্রঙ্কসে বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টসের বৈশাখী র‍্যালি ও বিচিত্রানুষ্ঠান।