৫০০ সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট প্রস্তুত করা হবে

সংবাদ সম্মেলনে নিজাম মাহমুদ (মাঝে), জিনিয়া রিনি ও সুব্রত বিশ্বাস
সংবাদ সম্মেলনে নিজাম মাহমুদ (মাঝে), জিনিয়া রিনি ও সুব্রত বিশ্বাস

সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ নিজাম মাহমুদ বলেছেন, প্রযুক্তি বিশ্বে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে। প্রযুক্তির সুবিধা নিতে নিতে দিন দিন বাড়ছে প্রযুক্তি নির্ভরতা। একই সঙ্গে বাড়ছে তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বা সাইবার ক্রাইম। সময়ের চাহিদাকে মোকাবিলা করার জন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল পয়েন্ট টেকনোলজি আগামী দুই বছরে ৫০০ দক্ষ ও অভিজ্ঞ সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট প্রস্তুতির উদ্যোগ নিয়েছে।
১৩ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিজিটাল পয়েন্ট টেকনোলজির অন্যতম কর্ণধার নিজাম মাহমুদ জিনিয়া রিনি, সুব্রত বিশ্বাসসহ বাংলা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নিজাম মাহমুদ বলেন, সাইবার ক্রাইম বর্তমানে একটি জটিল আন্তর্জাতিক সমস্যা। নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিনিয়ত সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছে সরকার, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ছোট বড় সব আর্থিক ও বাণিজ্যিক সংস্থাও। এ জন্য বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা। প্রযুক্তি যত দ্রুত এগোচ্ছে, সাইবার ক্রাইম অপরাধীরা তার চেয়ে বেশি দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে সাইবার ক্রাইমকেই তারা এক ধরনের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। আমাদের দুর্বল এবং অনিরাপদ সিস্টেমগুলি হ্যাক করে তারা ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয় তথ্য বা নথি চুরি করছে যা ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের জন্য হুমকি। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত বিচিত্র সব ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তথ্য নিরাপত্তা ও অ্যান্টিভাইরাস প্রস্তুতকারক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি ল্যাবের দেওয়া তথ্যানুসারে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে কোথাও না কোথাও সাইবার অ্যাটাক হচ্ছে। এখনই সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ না করতে পারলে পরবর্তীতে তা আরও কঠিন হয়ে পড়বে আমাদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা।
নিজাম মাহমুদ বলেন, তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়নে যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বা হচ্ছে তার তুলনায় সাইবার সিকিউরিটিতে তিন গুণ বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। একটি গবেষণা দেখা যায়, সাইবার সিকিউরিটিতে ২০২১ সালের মধ্যে ৩৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কিন্তু এই সেক্টরে ক্রমাগত যে হারে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে তার তুলনায় দক্ষ, অভিজ্ঞ ও পেশাদার লোকের সংখ্যা খুবই কম।
নিজাম মাহমুদ আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী সাইবার সিকিউরিটি জবের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য ডিজিটাল পয়েন্ট টেকনোলজি আগামী দুই বছরে ৫০০ দক্ষ ও অভিজ্ঞ সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট প্রস্তুতির উদ্যোগ নিয়েছে। যেহেতু সাইবার সিকিউরিটি পেশাদারদের প্রতিদিন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত ও দক্ষ হতে হয়, ডিজিটাল পয়েন্ট টেকনোলজি যে কোর্স ডিজাইন করেছে তার মূল উদ্দেশ্যই হলো একজন প্রশিক্ষণার্থীকে বাস্তবমুখী ও জব ওরিয়েন্টেড প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা। যেন তিনি দ্রুত যেকোনো কোম্পানিতে একজন সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট হিসেবে চাকরি পেতে পারেন। আমরা শুধু প্রশিক্ষণই দিই না, চাকরি পাওয়া থেকে শুরু করে চাকরি পরবর্তী যেকোনো ধরনের সমস্যা বা সংকটকে কাটানোর জন্য সব রকমের সহযোগিতা অব্যাহত রাখি।
নিজাম মাহমুদ জানান, সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্টের কোর্সের মেয়াদ তিন মাস। অনলাইনের মাধ্যমেই এই প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে। এটি একটি গ্লোবাল ক্লাসরুম। বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনের মাধ্যমে যে কেউ এখানে সরাসরি ক্লাস করতে পারবে।
বিস্তারিত জানার জন্য [email protected] এ যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস ফর সিটিজেন নামে একটি স্পেশাল প্রোগ্রামের আওতায় সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে অনলাইনের মাধ্যমে যে কেউ এই প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারে। আগ্রহীদের [email protected] ইমেইলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
ডিজিটাল পয়েন্ট টেকনোলজির অন্যতম এই কর্ণধার বলেন, আমরা ডিজিটাল পয়েন্ট টেকনোলজির মাধ্যমে যেকোনো কোম্পানির একজন সাইবার সিকিউরিটি রিলেটেড কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করে থাকি। প্রয়োজনে সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে ওই কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দিই। তিনি বলেন, বাংলাদেশেও আমরা নর্থ আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস দিতে সক্ষম। নর্থ আমেরিকার একটি ব্যাংকে যে সাইবার সিকিউরিটি পলিসি মেনটেইন করে বাংলাদেশেও কোনো ব্যাংকে ঠিক একই রকম সাইবার সিকিউরিটি পলিসি এবং স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইন করা সম্ভব।
বিস্তারিত জানার জন্য www.digitalpoint.tech অথবা [email protected] এ যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো।