ব্রঙ্কস ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন রানার্সআপ যুব সংঘ

স্বাধীনতা ফুটবল টুর্নামেন্টের একটি মুহূর্ত
স্বাধীনতা ফুটবল টুর্নামেন্টের একটি মুহূর্ত

বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকার উদ্যোগে প্রবাসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত স্বাধীনতা ফুটবল টুর্নামেন্টে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন আর যুব সংঘ (নেভী) রানার্সআপ হয়েছে।
২২ এপ্রিল ব্রুকলিনের ক্যাটন অ্যাভিনিউ পার্কে বৃষ্টির মধ্যেই দিনব্যাপী টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্টে নয়টি দল অংশ নেয়। দলগুলো হলো সোনার বাংলা (গ্রিন), সোনার বাংলা (রোড), যুব সংঘ (নেভি), যুব সংঘ (ব্লু), ব্রঙ্কস ইউনাইটেড, আইসাব, বিবিএ, সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব ও গোপালগঞ্জ ইউএসএ।
খেলা শেষে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। এ ছাড়া আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন রাজনীতিক সামসুদ্দীন আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল মওলা, স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন ইউএসএ-এর প্রেসিডেন্ট আবদুর রহীম বাদশা।
টুর্নামেন্টে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যথাক্রমে ডা. ফেরদৌস খন্দকার (চ্যাম্পিয়ন ট্রফি) ও রমেশ নাথ (রানার্সআপ ট্রফি), কাজী তোফায়েল ইসলাম (এমভিপি ফাইনাল ট্রফি), মফিজুল ইসলাম রুমী (রাইজিং স্টার ট্রফি) ও মোহাম্মদ নওশাদ হোসেন (রাইজিং স্টার ট্রফি), কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট এ কে এম রফিকুল ইসলাম ডালিম (এমভিপি টুর্নামেন্ট ট্রফি), আশ্রাফ আলী খান লিটন (হাই স্কোর ট্রফি), ইকতারুজ্জামান রতন (বেস্ট ডিফেন্ডার) এবং তানিসা ট্যাক্স অ্যান্ড নোটারি সার্ভিস (বেস্ট গোল কিপার ট্রফি) ভূমিকা রাখেন।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুই মাঠে টুর্নামেন্টের খেলা শুরু হয়ে বিকেল চারটার দিকে শেষ হয়। প্রতি দলে ৭ জন করে খেলোয়াড় অংশ নেন। উল্লেখিত দলগুলোর মধ্যে সোনার বাংলা (রেড) ছাড়া অন্য দলগুলো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। প্রথম খেলাগুলো ২০ মিনিট করে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালের খেলা হয় ২৪ মিনিটি। পরবর্তীতে দুটি সেমি ফাইনালের খেলা হয় ২৬ মিনিট করে আর ফাইনাল খেলা হয় ৩০ মিনিটে। সেমিফাইনালের খেলা দুটি গোল শূন্য ড্র হলে টাইব্রেকারে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড দল যুব সংঘকে (ব্লু) আর যুব সংঘ (নেভি) দল বিবিএকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।
ফাইনাল খেলায় ব্রঙ্কস ইউনাইটেড ২-০ গোলে যুব সংঘকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি ও বাংলাদেশের সাবেক জাতীয় অ্যাথলেট মহিউদ্দিন দেওয়ান। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন স্পোর্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল আহমদ। অনুষ্ঠানে অতিথি ও পৃষ্ঠপোষকেরা চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ ট্রফিসহ খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ট্রফি ও মেডেল তুলে দেন। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুজিবুল মওলা এবং টুর্নামেন্ট কভার করা একমাত্র সাংবাদিক হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমেদকে স্পোর্টস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে মেডেল উপহার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তাঁর বক্তব্যে প্রবাসে প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের সাধুবাদ জানান এবং এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে আগামী দিনে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত টেবিল টেনিসসহ অন্যান্য টুর্নামেন্ট আয়োজনে স্পোর্টস কাউন্সিলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এমন আয়োজন প্রবাসে বাংলাদেশি-আমেরিকান নতুন প্রজন্মদের বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করবে। সেই সঙ্গে দেশের সুনামও হবে। তিনিও কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণেই স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। চলতি বছর অনুষ্ঠিতব্য ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্ট-২০১৯ এ সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে চাঙা করতে এই টুর্নামেন্ট ভূমিকা রাখবে। এ জন্য তিনি বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটসহ কমিউনিটির পৃষ্ঠপোষকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকার উদ্যোগে জুন মাস থেকে নিউইয়র্কে চলতি বছরের ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।