মার্কিন রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স

বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান নেতৃত্বের বিরোধ ক্রমে মুখোমুখি সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে।

ডেমোক্র্যাটরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ট্রাম্পকে অভিশংসিত করার বদলে তাঁকে একের পর এক মামলা ও তদন্তে ব্যস্ত রাখবেন। এই সব তদন্ত ও মামলার মূল লক্ষ্য, ট্রাম্পের আয়করের হিসাব ও আর্থিক লেনদেনের ভেতরের খবর খুঁজে বের করা। তাঁদের বিশ্বাস, কেঁচো খুঁড়তে তাঁরা সাপ খুঁজে পাবেন।

ডেমোক্র্যাটদের এই লড়াইয়ে সবশেষ যুক্ত হয়েছেন হিলারি ক্লিনটন। বুধবার সন্ধ্যায় এমএসএনবিসির এক সান্ধ্য অনুষ্ঠানে তিনি ট্রাম্পের আয়কর খুঁজে বের করার জন্য চীনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, রাশিয়ার পর আমেরিকার প্রধান শত্রু হলো চীন। মার্কিন রাজনীতিতে শুধু একা রাশিয়া কেন নাক গলাবে, চীনও গলাতে পারে।

পরিহাসের সঙ্গে হিলারি বলেন, ‘চীন, তোমরা যদি আমার কথা শুনতে পাও তো বলছি, ট্রাম্পের আয়করের হিসাব খুঁজে বের করো।’

২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প রাশিয়ার উদ্দেশে একই ভাষায় হিলারির ৩০ হাজার হারানো ই-মেইল খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

একই সাক্ষাৎকারে হিলারি তাঁর দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল হওয়ার পরিবর্তে বার ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটরা যদি তাঁকে কংগ্রেস অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন, সেটি হবে সঠিক পদক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার বারের প্রতিনিধি পরিষদের বিচার বিভাগীয় কমিটির সামনে এক শুনানিতে অংশগ্রহণের কথা ছিল। ডেমোক্র্যাটরা দাবি করেছিলেন, এই শুনানিতে শুধু কংগ্রেস সদস্যরাই নন, তাঁদের আইনজীবী সহকারীরাও প্রশ্ন করতে পারেন।

সেই প্রস্তাবে সম্মত না হয়ে বার শুনানিতে আসা থেকেই বিরত থেকেছেন। বৃহস্পতিবার বিচার বিভাগীয় কমিটি একটি শূন্য চেয়ার রেখে বারকে ছাড়াই স্বল্পসময়ের জন্য শুনানির ব্যবস্থা করে।

ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, আগের দিন সিনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটির শুনানিতে একাধিক ডেমোক্রেটিক সিনেটর বারকে যেভাবে ছেঁকে ধরেছিলেন, তাতে বার নির্ঘাত ভয় পেয়েছেন।

বার কতটা ভীরু, সে কথা বোঝানোর জন্য ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যান স্টিভ কোহেন এ দিন এক বাক্স চিকেন ফ্রাই ও একটি প্লাস্টিকের মুরগি নিয়ে কমিটির কক্ষে নিজ আসন গ্রহণ করেন।

আগামী এক বা দুই দিনের মধ্যে যদি অ্যাটর্নি জেনারেল বার শুনানিতে আসতে সম্মতি প্রকাশ না করেন, তাহলে বিচার বিভাগীয় কমিটি তাঁকে কংগ্রেস অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করবে বলে কমিটির প্রধান জেরি ন্যাডলার জানিয়েছেন।

বার নিজ থেকে আসতে না চাইলে ডেমোক্র্যাটরা তাঁকে টেনে আনতে পারবেন না। কারণ, এই অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব বিচার বিভাগের।

অ্যাটর্নি জেনারেল যে নিজের বিরুদ্ধে নিজে কোনো ব্যবস্থা নেবেন না, তা বলাই বাহুল্য। ফলে বাধ্য হয়ে ডেমোক্র্যাটদের আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে। সেখানে দুই বছরের আগে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।